মানিকগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, জনদূর্ভোগ চরমে

0
595

প্রতিনিধ, মানিকগঞ্জঃ উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েকদিন ধরে অব্যাহত প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে মানিকগঞ্জে যমুনা ও পদ্মা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। ফলে জেলার সদর উপজেলাসহ দৌলতপুর, ঘিওর, শিবালয়, হরিরামপুর উপজেলার নদীর তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। ৫টি উপজেলার প্রায় সকল গ্রাম ইতিমধ্যে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।  মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনা তীরবর্তি অঞ্চলের অভ্যন্তরে হু হু করে পানি প্রবেশ করায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে। বন্যার পানিতে কাঁচা-পাকা রাস্তা, বাড়ী-ঘর তলিয়ে গেছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার লোকজন। যমুনার শাখা নদী ধলেশ্বরী, পুরাতন ধলেশ্বরী, কান্তাবতী ও ইছামতি নদী হয়ে জেলার অভ্যন্তরে বানের পানি প্রবেশ করে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত করছে। বিশেষ করে এ জেলার অর্ন্তগত পদ্মা-যমুনার চরাঞ্চলগুলো পুরোপুরি বন্যা প্লাবিত হয়েছে। আরিচা গবাদি পশুর হাটসহ অনেক হাট বাজারে পানি উঠায় স্বাভাবিক হাট-বাজার ব্যাহত হচ্ছে। আরিচা লঞ্চ ঘাট রোড, আরিচা পুরাতন ফেরি টার্মিনালে পানি উঠেছে। কয়েকশ’ আবাদি পুকুর বানের পানিতে ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস চাষীরা। এদিকে, প্রায় প্রতিটি বাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গৃহস্থরা। অনেকেই উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। অনেক স্কুলের অভ্যন্তরেও বানের পানি প্রবেশ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) ফারুক আহমেদ জানান, উজান থেকে ঢল ও প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে মানিকগঞ্জে যমুনা ও পদ্মা নদীর পানি বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার (২১ জুলাই) সকাল নয়টায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিএম রুহুল আমিন রিমন বলেন, উপজেলার শিবালয়, তেওতা ও আরুয়া তিনটি ইউনিয়নের নদী তীরবর্তি এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এ তিনটি ইউনিয়নের তিনটি স্কুলে আশ্রয়ন কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যাকবলিত লোকজনের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এদিকে ধলেশ্বরী নদীতেও অস্বাভাবিক পানি বাড়ায় ঘিওর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পানি বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কয়েক শ বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আইরিন আক্তার বলেন, বন্যার পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে বন্যাদুর্গত ১ হাজার ৩০ জন মানুষের মধ্যে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বন্যাকবলিত উপজেলার ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক দিনে উজানে যমুনার পানি অস্বাভাবিক বেড়েছে এবং অতি বৃষ্টিপাতের কারণে কালীগঙ্গা নদীর পানিও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এতে জেলা সদরের দীঘি, নবগ্রাম, জাগীর, পুটাইল ও ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশত গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রবল বৃষ্টিপাত ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বাড়ায় ঘিওরের নালী, পয়লা, বড়টিয়া, বানিয়াজুরী ও ঘিওর সদর ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। এসব ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কয়েক শ নিচু বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস জানিয়েছেন, সরকারিভাবে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষদের মাঝে এ পর্যন্ত ১৩০ মেট্রিকটন চাল ও ১৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ত্রান হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে ।

 

আলোকিত প্রতিদিন/২১ জুলাই’২০/এসএএইচ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here