সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্হ‍্য কমপ্লেক্সে তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় ৭ সদস‍্যের তদন্ত কমিটি গঠন

0
553

প্রতিনিধি, সাটুরিয়া : মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা জনৈক তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর ৭ সদস‍্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। একাধিক সূত্রে জানা গেছে যে, গত ১১ সেপ্টেম্বর শক্রবার রাত সাড়ে এগারোটার পরে সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩ তালার মহিলা ওয়ার্ডের ভিতরে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে জ্বর ও ব‍্যাথা নিয়ে হতদরিদ্র পরিবারের উঠতি বয়সের ১৩/১৪ বয়সের জনৈক তরুণী চিকিৎসা নিতে এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়। চিকিৎসার উন্নতি হলে গত ১২ সেপ্টেম্বর ওই তরুণীকে ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ছিল। কিন্ত তার আগের রাতেই হাসপাতালের ভিতরে এ ঘটনা গঠল। বিষয়টি সারা এলাকায় নানা কাঁনাঘোষাসহ গুঞ্জন ছড়ালেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো নজরে আনেনি। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ৮ দিন ধরে গোপনে একটি মহল বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়া জন‍্য জোড় পায়তাড়া করে আসছিল বলে একটি সূত্র জানায়। কিন্ত অবশেষে শেষ রক্ষা হলো না। সুতরাং এ ঘটনায় ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনার রাতে ওই হাসপাতালে যারা ডিউটি করেছেন তারা হলেন, ডাঃ স্বপন কুমার সুর, নার্স দুলালী, নার্স সুমি আক্তার ও ওয়ার্ড বয় আঃ মাজেদ আলী। সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর জনৈক তরুণী মেয়েকে জ্বর ও শরীর ব্যাথা নিয়ে সাটুরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসায় তার শরীরের উন্নতি হলে তাকে গত ১২ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র (ছুটি) দিবে বলে এগার সেপ্টেম্বর রাতে নার্সেরা জানিয়ে ছিল। কিন্ত তার আগেই গত ১১সেপ্টেম্বর রাত আনমানিক সাড়ে এগার টার দিকে হাসপাতালের কর্মচারী জনৈক যুবক বেড থেকে তাকে ধরে নিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। মেয়েটি এক পর্যায়ে সংঘাহীন হয়ে পরলে তাকে হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে ধর্ষক পলিয়ে যেতে সক্ষম হয়। অপর দিকে ধর্ষিতার মা মেয়েকে বেডে না পেয়ে সামনে গিয়ে দেখেন বারান্দায় অচৈতন্ন অবস্হায় মেয়ে পরে আছে। তখন তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে দেখে ধর্ষিতার মা ডাক্তার ও নার্সকে ঢাকলে তারা তার শরীরের অবনতি দেখে চিকিৎসক ধর্ষিতাকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এখন জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, ওই সময়ে ডিউটিরত ডাক্তার এবং নার্সদের উপস্হিতে ও মহিলা ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা থাকা সত্তেও কীভাবে এ ঘটনা গঠেছে, জনগণ তা জানতে চায় ? রোগীদের জান-মাল ও নিরাপদের দায়-দায়িত্ব কার ? ঘটনার পরপরই দ্রুত সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলে হয়তো বা তাৎক্ষণিক ধর্ষককে সনাক্ত করা যেতো, তবে তা দেখতে কেন এত বিলম্ব করা হলো ? এর রহস‍‍্য কী ? হাসপাতালের ভিতরে ধর্ষণের ঘটনা গঠেছে অথচ এখনো হাসপাতালের কেউ মুখ খুলছে না কেন এবং কার স্বার্থে ? তাই এ বিষয় নিয়ে এলাকাবাসী এর তীব্র প্রতিবাদসহ জোড় নিন্দা জানিয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ এর দায় হাসপাতাল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দসহ কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না ? এ ব‍্যাপারে সিনিয়র এ প্রতিবেদক মোঃ ইউনুছ আলী গত ১৮ ও ১৯ সেপ্টেম্বর সাটুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মামুনুর রশীদ এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন যে, এ ঘটনা আমি শুনেছি তবে কেউ এ পর্যন্ত কোন অভিযোগ করে নি। তারপরও আমি নিজের থেকেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব। এরিই ধারা বাহিকতায় গত ২০ সেপ্টেম্বর তিনি জানান যে, এ ঘটনায় শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মোঃ সাদিককে প্রধান করে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে ২ কর্মদিবসের মধ‍্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন যে, সঠিক তদন্তে দোষী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব‍্যবস্হা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

 

আলোকিত প্রতিদিন/২১ সেপ্টেম্বর ‘২০/এসএএইচ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here