সংবাদদাতা, ফুলবাড়ী(কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গত কয়দিনের টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ফের দেখা দিয়েছে বন্যা। বন্যায় সীমাহীন দুর্দশার মধ্যেই দিন যাপন করছেন উপজেলার ৫ ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। বন্যার সবশেষ পরিস্থিতি জানতে কথা হয় বন্যাকবলিত এলাকার ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে। ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ হারুন জানান – আমার ইউনিয়নের দুই ওয়াডের ৪০০ পরিবারের প্রায় ১ হাজারেরও মানুষ পানিবন্দী। ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাবু বলেন, ভাঙ্গামোড়ের রাঙামাটি ও খোঁচাবাড়ি মৌজার ৪০০ পরিবারের দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ বন্যায় মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বড়ভিটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খয়বর আলী মিয়া জানান, বড়ভিটায় ৭ টি ওয়াডের ৫ হাজার পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত। প্রায় একই অবস্থা উপজেলার বাকি ইউনিয়ন গুলোরও। বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ বসতবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র, উঁচু রাস্তায়, বাঁধে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছেন। তলিয়ে গেছে আমন ক্ষেতসহ বিভিন্ন সজবি ক্ষেত। রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে গেছে বহু অঞ্চল। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে অধিকাংশ পুকুর, জলাশয় ও ঘেরের মাছ। দেখা দিয়েছে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও পশুখাদ্যের সংকট। সব মিলিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন ফুলবাড়ী উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকার বানভাসী মানুষেরা। এমন পরিস্থিতিতেও তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোন ত্রাণ সহায়তা। বন্যাকবলিতদের ত্রাণ সহায়তার বিষয়ে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ জানান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অগ্রাধিকার তালিকা প্রস্তুত করে জমা দিতে বলেছেন। বরাদ্দ পেলে বন্যাকবলিতদের মাঝে তা দ্রুত বিতরণ করা হবে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত জানিয়েছেন, উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায় বানভাসীদের সহায়তার জন্য ৬ মেট্টিকটন চাল ও ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তা বিতরণ করা হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/২৮ সেপ্টেম্বর’২০/এসএএইচ