কাদের মির্জার বক্তব‌্যে সমালোচনার ঝড়

0
294

নিজস্ব প্রতিবেদক: আবদুল কাদের মির্জা নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের থেকে মেয়র প্রার্থী।  এবার নিয়ে কাদের মির্জা টানা ৩ বার মেয়র পদে মনোনয়ন পেয়েছেন।  আগামী ১৬ জানুয়ারি পৌরনির্বাচনের ভোটগ্রহণ।  সম্প্রতি তার দেওয়া কয়েকটি বক্তব্য ভাইরাল হয়। এসব বক্তব‌্য নিয়ে দেশজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।এদিকে, আবদুল কাদের মির্জার যেসব বক্তব্য সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, তা ‘বিকৃত প্রচার’ বলে দাবি করেছেন তিনি।  মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, তার কথা নিয়ে একটি ‘কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে’।প্রসঙ্গত, কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের নোয়াখালী জেলা কমিটির সহ-সভাপতিও।  দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।

যেসব বক্তব‌্যে সমালোচনার ঝড়: আসন্ন পৌর নির্বাচনেও মেয়র প্রার্থী কাদের মির্জার কয়েকটি বক্তব্য সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় আলোচিত হয়। এর একটিতে তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে তিন-চার আসন ছাড়া বাকি আসনে আমাদের এমপিরা দরজা টোয়াই পাইতো ন (খুঁজে পাবে না)।  এটাই হলো সত্য কথা।’আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি সাহস করে সত্য কথা বলছি।  নোয়াখালীর মানুষজন বলে, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়েছে, এটা সত্য।  কিন্তু আপনাদের (দলীয় কিছু নেতার প্রতি ইঙ্গিত করে)  জনপ্রিয়তা বাড়েনি।  আপনারা প্রতিদিন ভোট কমান। টাকা দিয়ে জেলা শহর মাইজদীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় জনসভা করা, কোনো ব্যাপার নয়।  টাকা দিলে, গাড়ি দিলে আমিও অনেক লোক জড়ো করতে পারবো, বিশাল সমাবেশ করতে পারবো।  না হয় রাজনীতি থেকে বিদায় নেবো।’সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বক্তব্যে তিনি তার পাশ্ববর্তী জেলা ফেনী ও নোয়াখালী জেলার দলীয় কয়েকজন এমপিকে ইঙ্গিত করে আরও বলেন, ‘প্রকাশ্যে দিবালোকে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেন, তারা হচ্ছেন নেতা। টেন্ডারবাজি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট যারা করেন, তারা হচ্ছেন নেতা।  পুলিশের, প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি দিয়ে যারা পাঁচ লাখ টাকা নেন, তারা হচ্ছেন নেতা।  গরিব পিয়নের চাকরি দিয়ে তিন লাখ টাকা যারা নেন, তারা হচ্ছেন নেতা।’উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় কাদের মির্জা তার ভাবি (ওবায়দুল কাদেরের সহধর্মিনি) সম্পর্কে মন্তব্য করেন।  ভাইরাল হওয়া সে বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, গত উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সহধর্মিণীর (ইশরাতুন্নেসা কাদের) সঙ্গে চরম দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে।  কয়েকজন নেতা ষড়যন্ত্র করে আমার এখানে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য অস্ত্র পাঠিয়েছেন।’  বক্তব্যের এই পর্যায়ে নোয়াখালীল জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আর কিছু বলবেন কি না?’ এ সময় ডিসি বক্তব্যে বাধা দিয়েছেন, অভিযোগ তুলে সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান কাদের মির্জা। ভাইরাল হওয়া আরেকটি ভিডিওতে তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জ থেকে উত্তোলন করা যে গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যায়, তা আগে আমাদের দিতে হবে। এটি জাতীয় নির্বাচনের সময় নেতার (ওবায়দুল কাদের) ওয়াদা ছিল। আমরা এখনো গ্যাস পাওয়ার কোনো আলামত দেখছি না।  আমি আপনাদের বলছি, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা কে জানেন? তওফিক এলাহী।  তিনি কে জানেন? মওদুদ আহমদের ভাইয়রা ভাই। তাহলে বোঝেন আমরা গ্যাস পাবো কি না? আগে আমাদের দিতে হবে, তারপর জাতীয় গ্রিডে যাবে।’বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) বসুরহাট পৌরসভায় এক পথসভায় আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘ষড়যন্ত্র চলছে বসুরহাট পৌরসভার ভোট নিয়ে।  আমি আবারও বলছি বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছেন, মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য।  শেখ হাসিনা ভাতের অধিকার প্রতিষ্টা করেছেন। এখন ভাতের অভাব নাই। কিন্তু ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয় নাই।  আমি বলেছি ভোটের অধিকার পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয় নাই।  আমি বলিনি শেখ হাসিনা ভোটের হরণ করেছেন।  ২০০৮ সালের  নির্বাচনে সারা দেশে আওয়ামী লীগের জোয়ার উঠেছিল।  কিন্তু বৃহত্তর নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগ ৩ আসন পেয়েছিল। এখন যদি আমরা নেত্রীকে এখন থেকে না বলি তাহলে কে বলবে।  তাই আমি সাহস করে বলছি।  কিন্তু দু-একজন সাংবাদিক লিখেছেন আমি নাকি বলছি শেখ হাসিনা ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে নাই।  তারা টাউট, চামচা।’নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করার পর থেকে বিভিন্ন পথসভায় প্রতিদিনই বক্তব্য দিযে যাচ্ছেন কাদের মির্জা। যা প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে।

আলোকিত প্রতিদিন/৭ জানুয়ারি’২১/এমজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here