টাঙ্গাইলে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল

0
375

সবুজ সরকার, টাঙ্গাইল : মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল। গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল, ফুটছে ফুল আর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। সেই ঘ্রাণ বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। এ যেন আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত টাঙ্গাইল।

জাতীয় সঙ্গীতে- ‘ওমা ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে, মরি হায়, হায় রে, ও মা অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে কী দেখেছি মধুর হাসি’।

পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পঙক্তিতে – ‘আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা / ফুল তুলিতে যাই, ফুলের মালা গলায় দিয়ে / মামার বাড়ে যাই। ঝড়ের দিনে মামার দেশে / আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে / রঙিন করি মুখ।’

কথাগুলো বাস্তব রূপ পেতে বাকি রয়েছে আর মাত্র কয়েক মাস। তবে ইতোমধ্যেই সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে।

টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় রয়েছে প্রচুর আম বাগান। এছাড়াও ইদানিং ছাদ বাগানে সৌখিন চাষীরা বিভিন্ন প্রজাতির উচ্চফলনশীল আমের চাষ করে থাকেন।

ছাদ বাগানের মালিক সদর উপজেলার করটিয়ার রাসেল আনছারী জানান, তাদের ছাদ বাগানে লাগানো আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। মুকুল আসার আগে থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছি। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করার কথা বলেন তারা।

শহরের বৈল্ল্যা এলাকার আলী হোসেন নামের এক বাগান মালিক আরও জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা।

ছাদে বাগান করে আম চাষ করা ও তার ভবিষ্যত নিয়ে বাংলাদেশ প্ল্যান্ট নার্সারিম্যান সোসাইটির টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রবিন বলেন, কৃষিতে ছাদ বাগান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে ছাদে আম চাষ করা গেলে পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, গাছে গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। এছাড়া আম গাছ সবসময় “অলটারনেট বিয়ারিং হেবিট” বা “এ বছর ফলন বেশি হলে পরের বছর ফলন কম হবে” পদ্ধতিতে ফল দেয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছি।

তিনি বলেন, টাঙ্গাইলে এ বছর ৫ হাজার ৭২৯ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এ বছর ৬৫ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা করছি। পাশাপাশি ছাদ বাগান তো রয়েছেই। টাঙ্গাইলের সখিপুর, মির্জাপুর, মধুপুর, সদর ও ভূঞাপুরে সবচেয়ে বেশি আমের চাষ হয়। আর এসব জায়গায় আম্রপালী জাতের আমের চাষই সবচেয়ে বেশি হয়। এছাড়া বারি-৪, ল্যাংড়া জাতের আমের চাষও হয় টাঙ্গাইলে।

তিনি আরও বলেন, এ সময় বাগানে বসবাস করা হপার বা ফুদকী পোকা মুকুলের ক্ষতি করে। এ পোকা দমনে বালইনাশক স্প্রে করতে হবে। সেই সঙ্গে নিয়ে সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।

আলোকিত প্রতিদিন/১৮ জানুয়ারি-২০২১/জেডএন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here