জমে উঠেছে কালকিনি পৌর নির্বাচন

0
369

মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ জমে উঠেছে মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভা নির্বাচন। এ পৌরসভায় মেয়র পদে এবার পাচ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা পৌরসভার উন্নয়ন, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত এবং পৌরবাসীর দুঃখ-দুর্দশায় পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচারণা চালিয়ে জাচ্ছেন। ১৪ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে কালকিনি পৌরসভার ভোটগ্রহণ। কালকিনি পৌর এলাকার ভোটাররা প্রথমবারের মতো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার স্বাদ গ্রহণ করবেন। ভোট নিয়ে সব বয়সের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ দেখা গেছে। তবে, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেওয়া নিয়েও শঙ্কা রয়েছে তাদের মধ্যে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে জমে উঠেছে নির্বাচনি মাঠ। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র,সংরক্ষিত মহিলা ও কাউন্সিলর প্রার্থী তাদের সমর্থকেরা। সব মিলিয়ে সরগরম কালকিনি তৃণমূলের রাজনীতি।
কালকিনি পৌরসভা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শেখ বদররুদ্দিন জানান, পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে পাচ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩০ জন ১ জন মহিলা সহ এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার সংখ্যা ৩৩ হাজার ৪শ’জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৩শ’জন এবং মহিলা ভোটার১৬ হাজার ৭শ’জন। সরেজমিনে কালকিনি পৌর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পৌর এলাকায় এখন নির্বাচনি হওয়া বাইছে। প্রার্থীরা লিফলেট বিতরণ, পোস্টার টাঙ্গিয়ে ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে নির্বাচনি মাঠে নিজেদের ভোট চাচ্ছেন। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও চলাচ্ছেন জোর প্রচার-প্রচারণা। পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানও জমে উঠেছে নির্বাচনি আলোচনায়। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী পাচ জন হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও উপজেলা আ’লীগ নেতা এস এম হানিফ ( নৌকা), বিএনপি মনোনীত কালকিনি পৌর বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক কামাল হোসেন বেপারী (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের পৌর সভাপতি লুৎফার রহমান ( হাত পাখা) স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ ( নারিকেল গাছ) এবং আ’লীগ বিদ্রহী সোহেল রানা মিঠু (চামচ) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। কালকিনিতে স্থানীয় আ’লীগ রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকলেও পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের সেই মতবিরোধ এখন আর তেমন চোখে পড়ছে না। দলের হাই কমান্ড এবং কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করার জন্য সবাই একসঙ্গে কাজ করছেন বলে দাবি নেতাকর্মীদের যারা দূড়ে আছেন তারাও এসে দলের জন্য কাজ করবেন। ফলে অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন নৌকা মার্কার প্রার্থী এস এম হানিফ ও তার সমর্থকেরা। করছেন সভা সমাবেশ, দিচ্ছেন আধুনিক পৌরসভা গড়ার প্রতিশ্রুতি। দিন রাত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন নিজে ও সমর্থকরা। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এস এম হানিফ বলেন,কেন্দ্রিয় আ’লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও মাদারীপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য ড.আবদুস সোবহান গোলাপ ভাইয়ের দোয়া,ভালোবাসা ও উপজেলা আ’লীগের সকল নেতা কর্মি ও জন গনদেরকে নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গ্রামে গ্রামে পাড়ায় মহল্লায় ভোট প্রাথর্না করে বেড়াচ্ছি এবং ভোটারা আগামি ১৪তারিখ সারাদিন নৌকা প্রতিকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন। এস এম হানিফ আরো বলেন, আমি সাধারণ মানুষের আশার প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। গরীব এবং মেহনতি মানুষের পাশে সবসময় থাকার চেষ্টা করেছি। তাই এখানকার ভোটাররা নৌকা প্রতীকে ও আমাকে ভোট দিবেন বলে আমি মনে করি। এস এম হানিফ আরো বলেন, নৌকার জনপ্রিয়তা দেখে বিভিন্ন স্থানে আমার নেতা কর্মিদের উপর হামলা করা হচ্ছে, নৌকার প্রতিক ও পোষ্টা ছিড়ে ও আগুন দিয়ে পোড়ানোর মত ঘটনাও ঘটিয়েছেন আমার প্রতিদ্বন্দ্বিরা যা নেক্কার জনক। তাদের সুস্থ ও শান্তি পূর্ণ পরিবেন বজায় রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। এদিকে, বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকায় অনেকটাই ছন্যছাড়া ছন্যছাড়া ভাবে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে দারিয়ে আছেন বিএনপির কামাল হোসেন। মাঠে তেমন কোন প্রচার প্রচারন নেই বল্লেই চলে। কেন্দ্রিয় বিএনপি সহ গণশিক্ষা সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন এলাকায় আসলে নেতা কর্মিদের নিয়ে ভোট চাচ্ছেন। প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে দলীয় প্রতীক ধানের শীষের সালাম পৌঁছে দিচ্ছেন। তারা দেশে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন। নারকেল গাচ প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ বলেন, নির্বাচনি পরিবেশ এখনও ভালো আছে মাঝে মাঝে ভোট চাউতে গিয়ে বাধার সম্মুখিন হচ্ছি। তবে, কালকিনিতে আমার কর্মী-সমর্থকেরা পোস্টার লাগিয়ে আসলে পরদিন সকালে আর দেখা যায় না। কে বা কারা রাতের কোনও এক সময় আমার ‘নারিকেল গাছ’ মার্কার পোস্টার ছিড়ে ফেলছে। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করছি। যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয় তবে বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শেখ বদররুদ্দিন জানান,নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু এবং প্রভাবমুক্ত করার জন্য সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এরই মধ্যে ইভিএম-এ যেন সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেন সেই লক্ষ্যে এলাকায় লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। এবং আগামি ১২,১৩ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার ও শনিবার পৌর এলাকার গুরুত্ব পূর্ণ স্থানে ও উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ওয়ার্ডে ডামি ভোটিংয়ের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। মাইকিং করে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। কালকিনি নির্বাচন অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, কালকিনি পৌরসভার নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোট কেন্দ্র ১৮টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোট কেন্দ্র ৯টি, মহিলা ভোট কেন্দ্র ৯টি। ভোট কক্ষ ১০০টি এবং প্রতেকটি ভোট কক্ষের জন্য ১টি করে অতিরিক্ত ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে। কালকিনি থানা অফিসার (ওসি) নাছির উদ্দিন জানান, কালকিনি পৌরসভার নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডে মোট ভোট কেন্দ্র ১৮টি কেন্দ্রকেই ঝুকি পূর্ণ হিসেবে গ্রহন করা হয়েছে। এবং নির্বাচনি আচোরণ মেনে চলার জন্য আমরা মাঠে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্চি ও মাঠে আমরা আছি।

আলোকিত প্রতিদিন/০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ /এম.জে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here