প্রশাসনকে ভুল তথ্য দিয়ে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা, জোড় পূর্বক বাড়ি দখল ও মিথ্যে মামলায় একটি অসহায় পরিবারকে হয়রানী।
ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ বিচার পেতে এখন অসহায় একটি পরিবারের শেষ আশ্রয় আদালত। বাড়ি জোড় করে দখল করতে মিথ্যা চাদাবাজি মামলায় নিরীহ পরিবারকে হয়রানী, মুচলেকায় সমঝোতা হলেও জমি দখল নিতে বাড়ি ভাংচুর , প্রাননাশের হুমকী।
একটি কু চক্রীমহল সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষকে ভুলতথ্য দিয়ে এবং সেই সাথে প্রশাসনকেও ভুল তথ্য দিয়ে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা, জোড় পূর্বক বাড়ি দখল ও মিথ্যে মামলায় একটি অসহায় পরিবারকে হয়রানী। এ বিষয়ে অসহায় পরিবার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ জানুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে ফরিদপুর ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারা জারির মামলা দ্বায়ের করেছিলো । এই মামলায় বাদী জমির মালিক মোছাম্মৎ খোজেদা বেগমের পক্ষে তাহার ছোট ছেলে মোঃ খালেদ।
সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানাযায়, ফরিদপুর জেলা শহরের পশ্চিমখাবাসপুর এলাকার পুরোনো বাসিন্দা মোছাম্মৎ খোদেজা বেগম। যাহা ফরিদপুর পৌরসভার হোল্ডিং নং ৩/৭,বাড়ি নং ৩১৩, মাও ঃ মোবারক আলী মহল,মওলানা আব্দুল আলী সড়ক, ফরিদপুর। একটি পারিবারিক লেনদেনের অজুহাতে বাড়ির মালিকানা দাবী করে ফরিদপুর পৌরসভা থেকে একই বাড়িতে আরেকটি হোল্ডিং নাম্বার দিয়েছে যাহাতে উল্ল্যেখ রয়েছে আলহাজ্ব মঞ্জিল, মোঃ নুরুল ইসলাম,হোল্ডিং নং ৩/৭, ওয়ার্ড নং ১৩, মাওঃ আব্দুল আলী সড়ক,পশ্চিম খাবাসপুর ,ফরিদপুর।এরই ধারাবাহিকতায় কিছু কথিত সন্ত্রাসী দিয়ে জোড় পূর্বক বাড়ি দখল নিতে বাড়ির গেট ও মুল দড়জার তালা ভেঙ্গে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাংচুর , দামী জিনিসপত্র লুটসহ বাড়িতে থাকা মেয়ে ছেলে এবং শিশুদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
সরেজমিনে সাংবাদিকরা ঘটনা স্থলে গেলে বিষয়টির সত্যতা মেলে।
বাড়ির প্রধান কর্তা মোছাম্মৎ খোদেজা বেগম (৬৫) সাংবাদিকদের জানান, বেশ কয়েকবার এই বাড়ির দখল নিতে চেষ্টা করেছে। বাড়ির গেইট ভাংগার জন্য অনেক যুবক বাড়িতে হামলা করেছে ফলে এ বিষয়ে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের সাথে দেখা করে বাড়ি জবর দখল এবং ভাংচুরের ভিডিও সহ মৌখিক অভিযোগ দেয়া হয়েছে পরিবারের পক্ষে। সে মোতাবেক পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলেন। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে কোতয়ালী থানা পুলিশ দখলকৃত বাড়ির তালা ভেঙ্গে প্রকৃত মালিককে ঘড় বুঝিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত , ফরিদপুর একটি ১০৭/ ১১৭ (সি)ধারার মামলার অভিযোগ দেয়া হয়েছে এবং বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ১ নং আমলী আদালত , ফরিদপুর এ মোকাদ্দমা ঃ দঃ বিঃ ১৪৩/ ৪৪৮/৪২৭/ ৩২৩/ ৩৮৫/৩৮৭/৫০৬ (বি)/৩৪ ধারায় মামলার অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ৩/৭, বাড়ি নং ৩১৩, মাও ঃ মোবারক আলী মহল এর মায়ের সূত্রে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি পরিবারের ছোট ছেলে খন্দকার মোঃ খালেদ সাংবাদিকদের জানান, ভুমি জবর দখলের প্রতিকার পেতে ১৪৪ ধারা মামলা করেছিলাম আর সেই মামলার সুত্র ধরেই ভুমিদখলকারীরা আমাদের নানান ভাবে হয়রানী করছে। বিচার পেতে আমাদের পরিবারের শেষ আশ্রয় আদালত। আদালতের সিদ্ধান্তই আমাদের কাছে এখন দখলবাজদের হাত থেকে পরিত্রান পাওয়ার একমাত্র পথ। তাহার সাথে কথা বললে তিনি জানালেন, ২০০৫ সালে আমাদের বাড়ির পূর্ব পাশে ৩ শতাংশ জমি মোঃ আব্দুল হান্নানের নামে দান পত্র দলিল রেজিষ্ট্রি করে নেয়। এরপর ২০০৮ সালে সেই জমি সে ফেরৎ দিবে মর্মে লিখিত শালিসনামায় ও চিরকুটে ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা তাহার বড় দুলাভাই মাওলানা মোবারক আলীর কাছ থেকে বুঝিয়া নেয়। পরবর্তীতে সেই জমি সে রেজিষ্ট্রি করিয়া দেয় না এবং টাকা আত্মসাৎ করে। এ বিষয়ে পারিবারিকভাবে শালিস হয়েছে যাহা থানা পর্যন্ত গড়িয়ে কোর্টে মামলায় চলমান রহিয়াছে। ২০১২ সালে ঐ জমির টাকা আত্মসাতের প্রতারনা মামলার আসামী মোঃ আব্দুল হান্নান অন্য ব্যাক্তির কাছে গোপনে ২০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে তাকে দখল বুঝিয়া দেয়। তিনি সেই জমিতে ক্রয়কৃত সম্পত্তির বলে জমিতে রয়েছে। যাহার হোল্ডিং নং ৩/৭/এ, দলিল কৃত মালিক মোছাম্মৎ হোসনে আরা বেগম। প্রতারক হান্নান এখানেই ক্ষান্ত হননি। তিনি ২০২০ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর মোঃ নুরুল ইসলামকে হেবাবিল এওয়াজ দলিল করে দেন । অথচ দলিল গ্রহীতা নূরুল ইসলাম দলিল দাতা হান্নানের কোন নিকট আত্মীয় হয় না। সে ক্ষেত্রে কিভাবে হেবাবিল এওয়াজ দলিল করতে পারেন। এখানেও তথ্য গোপন করে দলিলটি করা হয়।
গত ২৭/১২/২০২০ইং তারিখে বিকাল ৪টার দিকে হান্নান এবং নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে কিছু লোক বাড়ি দখলের জন্য গেট , দড়জা ভাংচুর করে এবং নতুন একটি হোল্ডিং নাম্বার বাড়ির দেওয়ালে টানিয়ে দেয়।
আলোকিত প্রতিদিন/১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ /এম.জে