গাইবান্ধা প্রতিনিধি: করোনার থাবা চাকরি কেড়ে নিলেও হতাশ হননি তিন বন্ধু। শুধুমাত্র মাটির উপর ভর করে অভিশপ্ত অণুজীবকে আশীর্বাদে পরিণত করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তারা। গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে আমের মুকুলের জন্য ফালগুনের অপেক্ষা নয়, গুটির জন্য চৈত্র আর জ্যৈষ্ঠে মিলবে আমের স্বাদ। বারোমাসই রসালো এই ফলের স্বাদ পাওয়া যায় তা ভোক্তাদের অনেকেরই অজানা। গাইবান্ধার নিভৃত পল্লীর তিন বন্ধু রুবেল মন্ডল, মাসুদ রানা ও জাহিদ হাসান জয়ের কঠোর পরিশ্রমে এ সাফল্য। জাহিদ হাসান জয় বলৈন, ঢাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন তারা। করোনার হানায় চাকরি হারাবার পর অনেকের মতো তারা তিন বন্ধুও হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। চিন্তা এসে ভর করে মাথার ওপর। কি করবেন, জীবনই বা চলবে কিভাবে। ইউটিউবে নজরে আসে আমের বাগান। কাটিমন জাতের আম। সারা বছর আম পাওয়া যায়। তিনবন্ধু সিদ্ধান্ত নেয় কাটিমনের বাগান গড়ে তুলবেন তারা। ৬০ হাজার টাকায় ১৫ বছরের জন্য ৪ বিঘার একটি জমি লিজ করেন তারা। এরপর কুষ্টিয়ার চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে ১ লক্ষ টাকায় ৫শত আমের চারা সংগ্রহ করেন। গাছের চারা লাগানোর মাত্র ২ মাসের মাথায় আমের মুকুল আসে। মুকুল থেকে গুটি তারপর আম। প্রথমবার আম বিক্রি করে হাতে আসে ৯০ হাজার টাকা। এরপর শুধু আমের ভরসায় না থেকে শুরু হয় চারা উৎপাদন। আম ছাড়াও বিক্রি হতে থাকে লক্ষ লক্ষ টাকার চারা। এখন পর্যন্ত বাগান থেকে বিক্রি হয়েছে তিন লক্ষ টাকার আম। লক্ষাধিক টাকার গাছের চারা বিক্রির পরও তাদের হাতে পঁচিশ হাজার বিক্রি উপযোগী আমের চারা আছে। যার বাজার মূল্য অন্তত পঁচিশ লক্ষ টাকা। কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহায়তা দিচ্ছে। গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, করোনায় বিপদাপন্ন মানুষের কাছ থেকে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও দেশের মাটি যে কাউকে ফিরিয়ে দেয় না। কৃষি বিভাগ থেকে তাদের দেয়া হচ্ছে।
আলোকিত প্রতিদিন/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ /এম.জে