মান্নার মৃত্যু নিয়ে যে তথ্য দিলেন স্ত্রী

0
512

২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান চিত্রনায়ক মান্না। মান্নার মৃত্যুর ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না তার ভক্তরা।

শুধু ভক্তরাই কেন, প্রয়াত এ নায়কের মৃত্যু কোনোভাবেই স্বাভাবিক মানতে রাজি নন মান্নার স্ত্রী শেলী।

গত ১৩ বছর ধরেই শেলী মান্না দাবি করে আসছেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না দেওয়ায় মারা গেছেন মান্না। কোনো প্রস্তুতি না রেখেই মান্নাকে হার্টের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে, যেটা উন্নত বিশ্বের চিকিৎসায় দেখা যায় না।

আগামীকাল বুধবার চিত্রনায়ক মান্নার মৃত্যুর ১৩ বছর পূর্ণ হবে। স্বামীর মৃত্যুদিবসের একদিন আগে সেই দাবি আবারও তুলেন শেলী।

মান্নার মৃত্যু কিভাবে হয়েছে সে বিষয়ে বেশ কিছু বক্তব্য দিলেন তিনি।

শেলী মান্না বলেন, আমি একজন চিকিৎসকের মেয়ে। বাংলাদেশে যখন এমবিবিএস চালু হয়নি। সে সময় আমার বাবা কলকাতা থেকে ডাক্তারি পাশ করেন। আমি চিকিৎসকের মেয়ে বলে এ পেশার মানুষদের খাটো করে কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবু না বলে উপায় নেই।

তিনি বলেন, আমার বাবা যেহেতু ডাক্তার ছিলেন, সেহেতু আমিও এ বিষয়ে কিছুটা জানি। তাছাড়া আমি যেখানে চাকরি করি, সেখানে সব ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিতে হয় আমাদের।

সে সব অভিজ্ঞতার আলোকে শেলীর দাবি, ভুল চিকিৎসা এবং দেরিতে চিকিৎসায় মান্নার মৃত্যু ঘটেছে।

মান্নার মৃত্যুর পূর্বের সময়টা নিয়ে বিশদ বর্ণনা দেন শেলী:

তিনি বলেন, শরীরের বিষয়ে মান্না সব সময় সতর্ক ছিল। অ্যালার্জি হলেও ডাক্তারের কাছে যেত। ওর বড় ধরনের অসুখ বলতে কিছু ছিল না, শুধু গ্যাসট্রিক ছাড়া। সেদিন মাঝরাতে মান্না যখন বাসায় ফিরল তার বুকে একটু ব্যাথা করছিল। রাতে খাওয়া দাওয়া করল। কিন্তু ব্যাথা না কমায় নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে হাসপাতালে গেল। হাসপাতালের ফুটেজ বলছে, মান্না হেঁটে গিয়েছে হাসপাতালের ভেতরে। অর্থাৎ মান্নার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়নি। কারণ যদি কারো কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় সে কোনোভাবেই গাড়ি চালিয়ে যেতে পারবে না। হাঁটতে পারবে না। হাসপাতাল তার বিভিন্ন টেস্ট করাল। তারপর ভর্তি করাল। এসব প্রক্রিয়ায় কেউ তাকে ধরেও নেয়নি। একজন স্বাভাবিক মানুষের মতো সে একাই সব করেছে। আর সেই লোকটাই হুট করে মারা গেল!

শেলী বলেন, মান্না যখন হাসপাতালে ভর্তি হলো তখন ভোর পৌনে পাঁচটা। মান্নার চিকিৎসা কিন্তু সাধারণ ডাক্তাররা করেছে। ট্রিটমেন্ট করে যখন কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেছে। ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে তারা হার্টের একটা ইনজেকশন দেয়। ইনজেকশনের নাম এসকে। উন্নত দেশে অপারেশন থিয়েটার প্রস্তুত রেখে, কার্ডিওলজিস্টের সঙ্গে রেখে তারপর ওই এসকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়।মান্নার বেলায় এসব করা হয়নি। ওই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর মান্না গোঙ্গানি দিয়ে বমি করে। অথচ এসবের সময় হাসপাতালের স্পেশালিস্ট ডাক্তার ছিলেন না। রুটিন অনুযায়ী তিনি আসেন সকাল ৯টায়। অভিজ্ঞ ডাক্তার ছাড়াই এসব করা হয়েছে।

এমন সব বক্তব্য দিয়ে প্রয়াত মান্নার স্ত্রী বললেন, হ্যা, আমরা কেস করেছি। সেখানে এসব পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হবে।

শেলী বলেন, মান্নার মতো একজন মানুষের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে একজন সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে? এই বছরই একটা শুনানি হবে। এই শুনানি হলে হয়তো আমরা একযুগ পরে হলেও ন্যায়বিচার পাব। মানুষ জানবে যে মান্না কিভাবে মারা গেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here