শরীয়তপুরে হত্যা মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি

0
329

সাইফুল ইসলাম শরীয়তপুরঃ শরীয়তপুর সদরে একটি অজ্ঞাতনামা হত্যা মামলার জের ধরে মামলার বাদীকে মোবাইল ফোনে মামলা তুলে নিতে হুমকি, সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মারধর এবং পরে বাদীর বিরুদ্ধে সাজানো ইভটিজিং মামলা করার অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ ইভটিজিং মামলায় প্রাথমিকভাবে দুইজনকে গ্রেফতার করলেও তদন্তে ইভটিজিং মামলাটি সাজানো ও বানোয়াট হওয়ার প্রমাণ পায়। ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর শরীয়তপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের উত্তর পালং এর বাসিন্দা জালাল আহম্মেদ এর ছোট ছেলে আওলাদ হোসেন চৌকিদার (২২) নিখোঁজ হয়। ২৮ অক্টোবর শরীয়তপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি ঝোপের মাঝ থেকে আওলাদ হোসেনের লাশ উদ্ধার করে পালং থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মোক্তার হোসেন (৪০) বাদী হয়ে পালং থানায় ২৯ অক্টোবর, ২০১৯ সালে অজ্ঞতনামা খুনিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজহারে নিহত আওলাদ হোসেনের সাথে প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম তালুকদার এর মেয়ে তানজিলা আক্তারের প্রেমঘটিত মনোমালিন্যের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। ফলে এ মামলায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও নজরদারীতে রাখে। পরে বাদী পক্ষ ২০ জানুয়ারি, ২০২০ সালে মামলাটিকে আবেদন করে পিবিআইতে হস্তান্তর করে। তারপর থেকে এখন মামলাটি পিবিআইতে তদন্তনাধীন।কিন্তু এ মামলা তুলে নিতে নুরুল ইসলাম তালুকদার গং প্রায় সময় বিভিন্ন হুমকি ও ভয় ভীতি দেখিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ করেন নিহতের ভাই আবুল হোসেন চৌকিদার। তিনি বলেন, ’গত ১৩ ফেব্রুয়ারি, রাত আনুমানিক ১০টা ৩০মিনিটের সময় একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে কল করে মামলাটি উঠিয়ে নিতে বলে। সে বলে- যদি উঠিয়ে না নেই তবে তোমার সমস্যা হবে এবং রাস্তা-ঘাট যেখানেই যাবে সেখানেই সমস্যা হবে। তাই আমার বড় ভাইয়ের পরামর্শে ঐ রাতেই পালং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। এর কারণে পরদিন ১৪ ফেব্রুয়ারি আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটের সময় উত্তর পালং শাবনুর মার্কেটের রাজিব খানের চায়ের দোকানে বসা থাকা অবস্থায় নুর ইসলাম তালুকদার (৪০), শহিদুল তালুকদার (৩৬), লিয়াকত সরদার (৩২), সেলিম মাদবর (২৮), শাজাহান মাদবর সহ ৫/৭ জন আমার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।’ এ ঘটনায় আহত আবুল হোসেন চৌকিদারের ভাই মোঃ মোক্তার হোসেন আসামীদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা করেন। অন্যদিকে, আওলাদ হত্যা মামলা সহ আবুল হোসেন চৌকিদার এর উপর হামলা মামলা তুলে নিতে আবুল হোসেন চৌকিদার সহ হামলা মামলার সাক্ষীদের বিরুদ্ধে ইভটিজিং মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আবুল হোসেন চৌকিদার। হামলা মামলার আসামী অভিযুক্ত নুর ইসলাম তালুকদারের মেয়ে তানজিলা আক্তার বাদী হয়ে পালং থানায় ইভটিজিংয়ের অভিযোগ দায়ের করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করে। যারা আবুল হোসেন চৌকিদার এর উপর হামলা মামলার প্রধান সাক্ষী। আবুল হোসেন চৌকিদার বলেন, ‘তারা একটি সাজানো ইভটিজিং মামলা করেছে। এখন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে চাপ আসছে এই বলে যে, আমরা মামলা তুলে নিলে তারাও মামলা তুলে নিবে। কিন্তু আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’
এদিকে, ইভটিজিংয়ের অভিযোগের বিষয় কথা বলতে গেলে অভিযোগকারী তানজিলা আক্তারকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি এবং তানজিলা আক্তারের মাকে পালং মডেল থানার সামনে পেলেও তিনি সংবাদকর্মীদের এড়িয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসলাম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে ইভটিজিংয়ের অভিযোগের সত্যতা পাইনি। ইভটিজিং এর অভিযোগ কেন করা হলো সে বিষয় ক্ষতিয়ে দেখা হবে। আটককৃতদের ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

আলোকিত প্রতিদিন/১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ /এম.জে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here