শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ শরীয়তপুরে ডামুড্যায় পারিবারিক কলহের জেরে আমেনা বেগম নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় স্বামী নজরুল ইসলাম মাদবরের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন নিহতের পরিবার এবং ইসলামপুর ইউনিয়নবাসী।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর উপজেলা বুড়ির হাট বাজার সংলগ্ন বুড়িরহাট ব্রিজের উপর ঘন্টাব্যাপি এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করা হয়।
এসময়, নিহত আমেনা বেগমের ছেলে নয়ন (১২) মাদবর, ভাই সুলতান মাদবর, আমিন মাদবর, ভাবি মনোয়ারা বেগম, ইসলামপুর ইউনিয়নের রিয়াদ মাদবর,মজিদ মাদবর, মেম্বার আলতাফ হোসেন
প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে আমেনার ভাই সুলতানা মাদবর বলেন, বোনকে বিয়ে দেয়ার পর টাকা খরচ করে (মালোশিয়া) বিদেশে পাঠাই খুনি নজরুলকে।
বিদেশ যাওয়ার ৭ বছর বোনকে কোনো খরচ পাঠায়নি খুনি নজরুল।
আমারা বোনকে খরচ দিতাম সে বিদেশে থেকে মুঠোফোন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো।
তাই খুনি নজরুল বিদেশে থেকে আশার আগে বোনকে আমাদের বাড়ীতে নিয়ে আসি।
মাদকাসক্ত নজরুল বিদেশ থেকে ফিরলে এলাকার মুরুব্বি ও তার পরিবার লোকজন আমাদের বাড়ীতে এসে আমেনা-কে নিয়ে যায়।
বাড়ীতে নিয়ে আমার আদরের বোন আমেনা-কে মানসিকভাবে টর্চার করতে থাকেন মাদকাসক্ত নজরুন। আমেনা-কে ঘরে তালাবন্দি করে রাখতেন।
মাদকাসক্ত নজরুল ঘরের দরজা বন্ধ করে দেশি অস্ত্র কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে আমার বোন আমেনা-কে।
আমার বোনের হত্যাকারি মাদকাসক্ত নজরুলের ফাঁসি চাই।
রিয়াদ মাদবর, মজিদ মাদবর, মেম্মার আলতাফ হোসেন সহ ইসলামপুর ইউনিয়নবাসি অনেকেই জানান, আমেনা খুব ভালো একজন নারী ছিলেন
নজরুল একজন মাদকাসক্ত।
আমেনা-কে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে নজরুল আমরা অপরাধী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ফাঁসির দাবি করছি।
উল্লেখ, শরীয়তপুর ডামুড্যায় পারিবারিক কলহের জেরে আমেনা বেগম (২৫) এক গৃহবধূকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন স্বামী নজরুল ইসলাম মাদবর।
১৫ বছর আগে ইসলামপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাড়া মৃত হোসেন মাদবরের ছেলে নজরুলের মাদবরের (৪২) সঙ্গে একেই ইউনিয়নের গঙ্গেসকাঠি মৃত আজিদ আলী মাদবরের মেয়ে আমেনার বিয়ে হয়। তাদের নয়ন মাদবর(১২) নামে একছেলে রেয়েছে।
গতকাল (১৬ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার সলাকে এই হত্যাকান্ডের সময়
নজরুল ইসলামের একতলা ভবনে কক্ষে তার স্ত্রী ছাড়া কেউ ছিলোনা। এ সুযোগ শরীরের বিভিন্ন যায়গায় কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে আমেনা-কে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মাদকাসক্ত নজরুল ফেজবুক লাইভে আসেন। লাইভে তার স্ত্রী আমেনা বেগমকে খাটের উপর তোশক দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় দেখান।
একপর্যায়ে তাকে গাইতে শোনা যায়, আমার খাঁইয়া, আমার পইরা ডুব দিছে অন্যজনরে।
ফেজবুক লাইভে দেখার পর জানাজানি হলে নজরুল ইসলামের মা আনার কলি (৮০) ভাগনি সোহাদি আক্তার (২৫) ছোট ভাইর স্ত্রী আছিয়া বেগম সহ(২৩)প্রতিবেশীরা দরজা পেটাতে থাকেন।
কিন্তুু নজরুল দরজা খোলেননি।
পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ এসে দরজা খুলে নজরুলকে গ্রেফতার করে এবং আমেনা বেগমকে উদ্ধার করেন।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম আশরাফুজ্জান জানন,হত্যাকারী নজরুল কে এক ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয়। স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যায় ব্যবহৃত ধাঁরালো কুড়াল উদ্ধার করা হয়।
নিহত আমেনার ভাই মোঃ সুলতান মাদবর বাদী ডামুড্যা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলা রুজুর ৬ ঘন্টার মধ্যে আদলতে ১৬৪ ধারায় আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
তাছাড়া ২৪ ঘন্টার মধ্যে ময়না তদন্তের রিপোর্ট প্রাপ্তি হয়।
আলোকিত প্রতিদিন/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ /এম.জে