টয়লেট নির্মাণকে কেন্দ্র করে একজন নিরীহ ব্যক্তিকে পেটালেন মামুন গ্রুপ

0
439
ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুর জেলাশহরের শিবরামপুর হাইওয়ে রাস্তার পাশে মামুন গ্রুপের প্রতিষ্ঠানে ধরে নিয়ে হাত পা বেধে মধ্যযুগীয় কায়দায় একজন নিরীহ ব্যক্তিকে নির্যাতন করার ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে সাংবাদিকরা  ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। দেখা যায় মোঃ আইয়ুব আলী (৫৪) নামে একজনকে দড়ি দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছে। তিনি সাংবাদিকদের দেখে বাঁচাও ওরা আমাকে ধরে এনে নির্যাতন করছে। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে বলে আহাজারি করছিলো। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। গায়ের জামাও ছিঁড়ে গেছে। এ ঘটনার বিষয়ে কোতয়ালী থানার এস আই (নিঃ) কৃষনো বিশ্বাস ঘটনাস্থলে গিয়ে দড়ি বাঁধা ও আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা অনেকেই ঘটনার বিবরণে জানায়, মামুন গ্রুপের ভিতরে একটি টয়লেট নির্মাণ করছিলো যেটা দেয়ালের সাথে রয়েছে রান ইন্ডাষ্ট্রিজের  খাবার ঘর। এ বিষয়ে রান ইন্ডাষ্ট্রিজের কর্মচারীরা  কাজ করতে নিষেধ করে।  মামুন গ্রুপের কর্মচারীরা সেখানে গিয়ে রান ইন্ডাষ্ট্রিজের জি এম আইয়ুবকে তাদের প্রতিষ্ঠানে ডেকে নেয় এবং তাকে ভেতরে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মারধর করা শুরু করে । এ সময় পাশাপাশি দুইটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে যায়।
নির্যাতনের স্বীকার মোঃ আইয়ুব আলী সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের রান ইন্ডাষ্ট্রিজের খাবার ঘর সোজা মামুন গ্রুপের একটি টয়লেট নির্মাণ করছিলো। আমাদের সমস্যা হবে বলে আপত্তি জানাই। তারা আমাকে তাদের টয়লেট নির্মাণের জায়গাটি দেখতে তাদের প্রতিষ্ঠানে ডাকে। আমি সেখানে গেলে আমাকে জাপটে ধরে গাছের সাথে বাঁধে এবং উপর্যুপরি মারধর করতে থাকে। আমাকে ৪ ঘন্টা গাছের সাথে বেঁধে রাখে। পরবর্তীতে সাংবাদিকরা গেলে এবং কোতয়ালী থানাপুলিশ গিয়ে আমাকে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পায়। আমি তখন আহত। পুলিশ সেখান থেকে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ ন্যক্কারজনক ঘটনার বিষয়ে রান ইন্ডাষ্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, একটি টয়লেট নির্মাণের বিষয়ে প্রতিবেশীর আপত্তি থাকতেই পারে, সেটা আলোচনা করে সমাধান করা যেতে পারতো। কিন্তু এভাবে ডেকে নিয়ে গাছের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন কি কোনো সঠিক সমাধান। এটা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। আইনের আওতায় এ ঘটনার বিচার হওয়া উচিৎ।এখানেই থেমে ছিলেন না তারা গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের ছবি তুলে সেটা ফেসবুকে ছেড়ে দিয়ে প্রচারও করেছে।
এ ঘটনার বিষয়ে মামুন গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন মাহিন মামুন সাংবাদিকদের জানান, আমার জায়গায় আমি টয়লেট নির্মাণ করছি এটা নিয়ে কেন আপত্তি করবে। জিম এম ৪/৫ জন লোক নিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানে আসলে এ রকম ঘটনা ঘটে। উত্তেজিত শ্রমিকরা তাকে মারলে আমি কি করতে পারি। যদিও আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম কিন্তু আমার কিছু করার ছিলো না।
এ ঘটনার বিষয়ে গত ৫ মার্চ ২০২১ ইং তারিখে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় রান ইন্ডাষ্ট্রিজ এর চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম  মামুন গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন মাহিন মামুনসহ ২০ /২৫ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আলোকিত প্রতিদিন / ৫ মার্চ/ ২০২১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here