জলমহাল ও বিল শুকিয়ে মাছ ধরলে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে- তানভীর আহমেদ

0
736
বাংলাদেশের মিঠাপানির মাছের অন্যতম সুনামগঞ্জের হাওর এলাকা। এ জেলায় ছোট-বড় দুই শতাধিক হাওর রয়েছে, যা মিঠাপানির মাছ উৎপাদনের জন্য পরিচিত। এসব হাওরের মাছ গুলো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও একসময় দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হতো; রপ্তানি হতো বিদেশেও। কিন্তু এখন সেই সুদিন আর নেই। নেমে এসেছে যেন অন্ধকার । এখন স্থানীয় হাট-বাজারেই মাছের আকাল দেখা যায়। ইতিমধ্যে হাওরে অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ জন্য জলমহালের ইজারাদারেরা যে বহুলাংশে দায়ী, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। জলমহাল শুকানোর পেছনে হাত আছ স্থানীয় প্রভাবশালীদের। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জলমহাল (ছোট – বড় অসংখ্য বিল) শুকিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। অনেক সময় প্রশাসন দেখেও দেখে না। যার ফলে দিন দিন হাওর গুলো মাছ শূন্যতা দেখা দিচ্ছে।
হাওরের ইজারা প্রকৃত জেলেদের কাছে দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে দেখা গেছে প্রকৃত মৎস্যজীবী নয় বা অ-মৎস্যজীবীরাই ইজারা নিচ্ছেন বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের সমিতি ইজারা পেলেও তাদের নাম করে স্থানীয় প্রভাবশালীরাই ভোগ করছেন ওই সব হাওর। আবার কখনো মৎস্যজীবী সমিতি নামে যেসব সংগঠন দেখানো হচ্ছে, সেখানে আদৌ কোনো মৎস্যজীবী নেই। তারাই অর্থের লোভে হাওরের পানি শুকিয়ে মাছ ধরছেন। কেউ বাধা দিলে উল্টো মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করাটা এখন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
অথচ ইজারার নীতিমালায় জলমহালের পানি শুকিয়ে মাছ ধরার নিয়ম তো নেই-ই; বরং জলমহাল খনন এবং এর পাড়ে বৃক্ষরোপণ করার শর্ত আছে। এসব অনিয়মের ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন যে অনেকখানি উদাসীন, তা তো বোঝাই যাচ্ছে। এখন এসব ইজারাদারের বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে তৎপর হতে হবে। তাদের কড়া শাস্তি দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে হবে। জলমহাল ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রেও প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা তা পায়। তা না হলে এসব জলমহাল মাছশূন্য হতে আর বেশি সময় নেবে না। তাই আসুন সবাই হাতে হাত রেখে দুর্নীতির প্রতিবাদ করি। যেকেউ জলমহাল শুকিয়ে মাছ ধরলে প্রশাসনকে অবগত করি।
তানভীর আহমেদ,
তাহিরপুর, সুনামগঞ্জ। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here