ড. ইউনূস ক্ষমা চাইলেন

0
470

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নিজ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আদালতের আদেশ পালন না করায় আদালত অবমাননার অভিযোগে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ দুইজন হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। এরপরে তাদেরকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

একই সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পুনর্নিয়োগের বিষয়ে জারি করা রুলটি শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পর ২২ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে আজ গ্রামীণ টেলিকম ও ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুকন উদ্দিন মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। কর্মচারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন আবেদনকারী আইনজীবী মো. উজ্জ্বল হোসেন।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি নিজ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমে কর্মী নিয়োগের বিষয়ে আদালতের আদেশ পালন না করায় আদালত অবমাননার অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ দুইজনকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।

অপরজন হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের এক পরিচালক। তলবের পরিপ্রেক্ষিতে আজ তাদের হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্ধারিত দিন ধার্য ছিল। এদিন তারা ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

প্রসঙ্গত, প্রতিষ্ঠানটির ৩৮ জন কর্মচারীকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ বাস্তবায়ন না করায় গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামানের করা আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারির আদেশে তাদেরকে হাইকোর্টে তলব করা হয়েছিল। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালতে ওই দিন শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন আবেদনকারী আইনজীবী মো. উজ্জ্বল হোসেন।

অন্যদিকে গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

আদেশে আজ (১৬ মার্চ) বেলা ১১টায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসানকে আদালতে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল।

আদেশে বলা হয়, গত ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট পিটিশনারদের চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হিসেবে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও মোহাম্মদ আশরাফুল হাসান সেই আদেশ অনুসরণ করেননি। তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রাথমিক সত্যতা পরিলক্ষিত হওয়ায় আদালত অবমাননার রুল জারি হয়েছে।

রুলে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে সেই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এ নিয়ে হাইকোর্টে ৩৮টি রিট আবেদন করা হয়। এসব রিট আবেদনে হাইকোর্ট গত বছরের ৬ ডিসেম্বর এক আদেশে তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তাদের চাকরি থেকে অপসারণের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। এই আদেশের পরও তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল না করায় হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন করেন মো. কামরুজ্জামান।

সেটির শুনানি নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসানকে তলব করা হয়। আজ তাদের ভার্চুয়ালি হাজির হয়ে চাকরিচ্যুত ৩৮ জনকে পুনর্বহাল না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার রুল জারি করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি হয়।

ওইদিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেছিলেন, সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট বেঞ্চ যেহেতু ভার্চুয়ালি চলছে তাই তাদেরকে ভার্চুয়ালি হাজির হতে হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১৬ মার্চ -২১ /এম.জে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here