‘সংসদ সদস্য’ লেখা মেটাল ডিস্ক ব্যবহার করায় পৌর মেয়র পুত্রের জরিমানা

0
349

প্রতিনিধি, মাদারীপুর :

মাদারীপুরে আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন নোয়াখালীর বসুরহাট পৌর মেয়র কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা। প্রাইভেট কারে ‘সংসদ সদস্য’ লেখা মেটাল ডিস্ক লাগিয়ে মাদারীপুরের একটি ইউপি নির্বাচনে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালীর বসুরহাটের পৌর মেয়র কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার নিখলী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ওয়াসিম মাদবরের পক্ষে প্রাইভেট কার নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। বিষয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের নজরে এলে শনিবার রাতে ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান। স্থানীয় ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, শনিবার বিকেলে কিছু বহিরাগত লোক সংসদ সদস্য লেখা মেটাল ডিস্ক লাগানো একটি প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো-খ ১৩-১৭৫৬) নিয়ে নিলখী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াসিম মাদবরের বাড়িতে এসে অবস্থান করেন। বহিরাগতরা নিলখী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ওয়াসিম মাদবরের পক্ষে সংসদ সদস্য লেখা প্রাইভেটকারটি নিয়ে ঘুরে কলাতলা, নিলখীবন্দর, বাগমারাসহ নির্বাচনী এলাকা ভোটারদের কাছে ওয়াসিম মাদবরের পক্ষে ভোট চান। প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা সংসদ সদস্যের স্টিকার দেখে প্রশাসনের কাছে জানান। নির্বাচন চলাকালীন বিষয়টি আচরণ বিধি লঙ্ঘন হওয়ায় শিবচর থানা পুলিশ ওই প্রাইভেট কারসহ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বহিরাগতদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিয়ে আসেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অপরাধে নিলখী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ওয়াসিম মাদবরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। শিবচর থানার উপ-পরিদর্শক বরুণ হিরা জানান, ‘দুটি প্রাইভেট কার ছিল। একটিতে সংসদ সদস্য লেখা মেটাল ডিস্ক লাগানো কার। সেই কারে থাকা তাশিক মির্জা নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার ছেলে বলে নিজেকে পরিচয় দেন। জরিমানা দেওয়ার পরে ওই প্রাইভেট কার দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়। জানতে চাইলে ওই চেয়ারম্যান প্রর্থী ওয়াসিম মাদবর বলেন, সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো গাড়িতে বসুরহাটের পৌর মেয়র কাদের মির্জার ছেলে তাশিক মির্জা ছিলেন। তিনি আমার ভাগ্নে রাইসুল ইসলাম অনিকের বন্ধু। তাশিক মির্জা আমার নির্বাচনে কোন প্রচারণা চালাননি বলে দাবি করেন তিনি।

জরিমানার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, জরিমানার ১০ হাজার টাকা আমি প্রদান করিনি। ওই টাকা ভ্রাম্যমাণ আদালতকে কে পরিশোধ করেছে সেটা আমি জানি না। ওই ইউনিয়নে আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুণ-অর রশীদ বলেন, ওয়াসিম মাদবর বর্তমান নিখলী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান। তাই তার দাপট বেশি। নির্বাচনী আচারণ বিধি তিনি কিছুই মানেন না। প্রার্থী ওয়াসিমের ভাগ্নে রাইসুল ইসলাম এলাকায় প্রভাব খাটাতে সংসদ সদস্যের ব্যবহৃত গাড়িতে তাশিক মির্জাকে নিয়ে আসেন। এ ব্যাপারে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মিরাজ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ দুটি প্রাইভেট কার শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে নিয়ে আসে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার যাচাই-বাছাই করে ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অর্থদন্ড করেন। আটককৃত প্রাইভেট কারে কারা ছিল এ বিষয় আমরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। জানতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। প্রাইভেট কার নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করলে আচারণ বিধি লঙ্ঘন হবে। কিন্তু এক চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ম না মেনে দুটি প্রাইভেট কার নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করছিলেন। আচরণ বিধি লঙ্ঘন করায় ওই প্রার্থী ওয়াসিম মাদবরকে ১০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করে সর্তক করা হয়েছে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৩০ মার্চ-২১/ দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here