প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা:
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় দুই শিশু সন্তানসহ মায়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ ও মেঝেতে পড়ে থাকা অবস্থায় দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে।
দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করে তাদের মা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনো সুস্পষ্টভাবে জানা যায়নি। নিহতরা হলেন, উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া গ্রামের শিমুল হোসেনের স্ত্রী মাহফুজা (২৮), ছেলে মাহফুজ (৯) ও সাড়ে চার বছরের কন্যা মোহনা। লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএ কালাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তিনি এক ইউপি সদস্যের কাছ থেকে খবর পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেন। শিমুল বাড়িতে ছিলেন না, কর্মসূত্রে তিনি ছিলেন বাগেরহাট।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর খায়রুল কবীর জানান, ‘নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টি নিয়ে অধিকতর তদন্ত করা হবে।’ খবর পেয়ে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শামসুল আলম শামসসহ উর্দ্ধতন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ‘সকালে দীর্ঘক্ষন ঘুম থেকে না উঠায় প্রতিবেশিরা তাদের থাকতে গিয়ে জানালা দিয়ে ঘরের মধ্যে আড়ায় মৃতদেহ ঝুলে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। আত্মহত্যা নাকি হত্যা সেটা বিশ্লেষণের চেষ্টা চলছে।’ঘটনাস্থলে উপস্থিত মৃত মাহফুজার বড় ভাই বসন্তপুর গ্রামের মশিয়ার বলেন, ‘শবে বরাতের দিন তার ভাগ্নে মোহনাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে পার্শ্ববর্তী এক ছেলে। বিষয়টি মেম্বর-চেয়ারম্যানকে জানালে তারা কোন সুরহা না করে বলেন যে সামনে ভোট, ভোটের পর দেখবো। সম্ভবত মানসম্মান আর অন্যের কটুক্তি সহ্য করতে না পেরে ছেলে মেয়ে কে ঝুঁলিয়ে দিয়ে মা আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ এদিকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, শিশু কন্যাকে যৌন নির্যাতনের বিচার না পেয়ে দুই ছেলে-মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন মা মাহফুজা খাতুন (৩২)। শিমুল হোসেনের পিতা আব্দার আলী জানান, তিন দিন আগে খেলা করার সময় স্থানীয় লাল্টুর ছেলে হৃদয় (১৪) শিশু মোহনাকে যৌন নির্যাতন করে। মোহনা বিষয়টি বাড়ি এসে মা’কে জানালে মাহফুজা স্থানীয় ইউপি সদস্য সাফিজুলের কাছে বিচার চান। তখন সাফিজুুল সামনে নির্বাচন উল্লেখ করে কয়েকদিন পরে বিচারের আশ্বাস দেন। বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানালে তিনিও মামলা ও একই পরামর্শ দেন। পরে মাহফুজা তার কাছে (আব্দার আলী) মামলা করার কথা বললে তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ, মামলার খরচ চালাবো কিভাবে। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি (আব্দার আলী) কাজে গেলে মাহফুজা দুই সন্তানকে মেরে নিজেও আত্মহত্যা করেছেন।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১ এপ্রিল, ২১/ দ ম দ