খুলনা প্রতিনিধি : দেশের করোনা মহামারি সংকটের বিরূপ প্রভাব পড়েছে খেটে খাওয়া এই মানুষ গুলির উপরেও। চলমান করোনা সংক্রামনের উর্ধগতি ও লকডাউনের কারণে কাজের সংকট দেখা দেওয়ায় নানা দুশ্চিন্তায় ভুগছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
কাক ডাকা ভোরের শহুরে পরিবেশ, সাথে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া। আর এই সাত সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা বয়সী নারী, পুরুষ আসছেন নগরীর সাত রাস্তার মোড়ে। কারো হাতে কোঁদাল, কারো হাতে রং করার বালতি, কারো হাতে রাজমিস্ত্রীর যন্ত্রপাতি, আবার কেউ আসছেন খালি হাতেই। সকলেই এই মোড়ে ভিড় করছেন কাজের আশায়। প্রতিদিন সকালে এই মোড়ে জড়ো হয় প্রায় এক দেড় শো নারী-পুরুষ শ্রমিক। যারা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার বিনিময়ে সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শ্রম বিক্রি করেন। রং মিস্ত্রী, মাটি কাটার কাজ, রাজমিস্ত্রী, টাইলস মিস্ত্রীসহ বিভিন্ন পেশার শ্রমিকদের অলিখিত বাজার যেন এই সাত রাস্তার মোড়।
শ্রমিকরা বলছেন, লকডাউনে কাজ কম থাকায় এবং শ্রমিক বেশি থাকায় কাজের রেট অনেক কমে গেছে। যারা একসময় ৬০০ টাকা হাজিরায় কাজ করতো তারা এখন লকডাউনে কাজ না থাকায় ৪০০ টাকায়ও কাজ করছেন। এই লকডাউনে কোনো রকমে দু একদিন কাজ পেলেও সামনের ১৪ তারিখ থেকে কঠোর লকডাউনে কিভাবে চলবে সংসার সে চিন্তায় কোনো কূলকিনারা পাচ্ছেন না অনেকেই।
তবে চলমান করোনা সংকট ও লকডাউনের কারণে চিন্তিত তারা। সামনে কঠোর লকডাউন দিলে কিভাবে কাটবে জীবন? এটাই যেন এখন তাদের ভাবনার একমাত্র বিষয়। করোনার সংকটের চেয়ে লকডাউনের মাঝে বেঁচে থাকাটাই যেনো তাদের মূল সংকট। তাদের ভাষ্য এমন, যেনো করোনাকে তারা ভয় পায়না, ভয় পায় লকডাউনকে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাচ্ছেন। আবার যারা শহরে থেকে যাচ্ছেন তারাও অনিশ্চয়তায় প্রহর কাটাচ্ছেন। এদিকে খুলনায় স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন।
আলোকিত প্রতিদিন / ১২ এপ্রিল ২০২১ / সা হা