এ বছর সর্বনিম্ন ফিতরা ৭০ টাকা

0
369

ডেস্ক প্রতিদিন : রমজানে এ বছরও বাংলাদেশে ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বনিম্ন ৭০ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরও সর্বনিম্ন ৭০ টাকাই ছিল তবে সর্বোচ্চ ছিল ২ হাজার ২০০ টাকা।

আজ বুধবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় এই হার নির্ধারণ করা হয়।

সভায় সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ইসলামি শরিয়াহ মতে গম, আটা, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর যে কোনো একটি দিয়ে ফিতরা আদায় করা যায়। উন্নতমানের গম বা আটা দিয়ে ফিতরা আদায় করলে অর্ধ ‘সা’ বা ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৭০ (সত্তর) টাকা দিতে হবে।

যব দিয়ে আদায় করলে এক ‘সা’ বা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২৮০ টাকা, কিসমিস দিয়ে এক ‘সা’ বা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য এক হাজার ৩২০ টাকা, খেজুর দিয়ে এক ‘সা’ বা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য এক হাজার ৬৫০ টাকা, পনির দিয়ে এক ‘সা’ বা ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য দুই হাজার ৩১০ টাকা ফিতরা দিতে হবে।

দেশের সব বিভাগ থেকে সংগৃহীত গম, আটা, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনিরের বাজার মূল্যের ভিত্তিতে এই ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে। মুসলমানরা নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী এসব পণ্যের যেকোনো একটি পণ্য বা এর বাজার মূল্য দিয়ে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করতে পারবেন।

ফিতরা সংক্রান্ত হাদিস :

হাসান বসরি (র.) থেকে বর্ণিত, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বসরাতে ভাষণ দিলেন এবং বললেন, তোমরা তোমাদের সদকাতুল ফিতর আদায় করো। তখন লোকজন একে অন্যের প্রতি দৃষ্টিপাত করতে লাগল। তিনি বললেন, কারা আছ এখানে মদিনাবাসী?
আসো তোমাদের ভাইদের বুঝিয়ে দাও, তারা জানে না যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্ধারণ করেছেন ছোট-বড়, মুক্ত দাস, পুরুষ-নারী (সকলের প্রতি) সদকাতুল ফিতর। হাসান বসরি (র.) বলেন, তারপর আলী (রা.) বললেন, আল্লাহ যখন তোমাদের প্রাচুর্য দিয়েছেন তোমরাও উদার হও, গমও এক সা দাও। (নাসায়ি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২৬৮-২৭০)।

আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.)–এর জমানায় আমরা সদকাতুল ফিতর দিতাম এক সা (সাড়ে তিন কেজি প্রায়) খাদ্যবস্তু, তিনি বলেন, তখন আমাদের খাদ্য ছিল: যব বা বার্লি, কিশমিশ বা মোনাক্কা, পনির ও খেজুর। (বুখারি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২০৪)। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম এক সা খাদ্যবস্তু বা (১) এক সা যব (বার্লি) বা (২) এক সা খেজুর বা (৩) এক সা পনির অথবা (৪) এক সা কিশমিশ।’ (বুখারি, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২০৫)।

সাহাবায়ে কিরাম (রা.) অধিকাংশই খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করতেন। ইবনে কুদামা (র.) আবু মিজলাযের বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন, তিনি আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)-কে বললেন, ‘আল্লাহ তাআলা যখন প্রাচুর্য দিয়েছেন আর গম যেহেতু খেজুর অপেক্ষা উত্তম, তবু আপনি খেজুর দ্বারা ফিতরা আদায় করছেন কেন?’ এর উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘সাহাবিরা যে পথে চলেছেন, আমিও সে পথে চলা পছন্দ করি।’ হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.)-ও এ পক্ষে মত দিয়েছেন। তখন খেজুর অপেক্ষা গম ও আটার দাম বেশি হওয়া সত্ত্বেও সাহাবিরা খেজুর দ্বারা আদায় করা পছন্দ করতেন। (আল ইসতিযকার, খণ্ড: ৯, পৃষ্ঠা: ৩৫৪)। বর্তমানে খেজুর অপেক্ষা গমের দাম কম এবং গম আমাদের বাংলাদেশের জাতীয় খাবারও নয়; তাই বিষয়টি গভীর অনুধাবনযোগ্য।

আলোকিত প্রতিদিন / সা হা

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here