মানিকগঞ্জে চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু

0
1491
প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ:
জেলার প্রাইভেট এ্যাপোলো হাসপাতালে অপারেশনের এক ঘন্টা পর রোগীর মৃত্যু ঘটে। তার কিডনিতে পাথর অপারেশন করা হয়। জানা গেছে, গতকাল রবিবার সাটুরিয়া উপজেলার জান্না গ্রামের আব্দুল করিমের স্ত্রী রাফেজা বেগম(৪২) কিডনিতে পাথর অপারেশন করার জন্য মানিকগঞ্জ এ্যাপোল হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে ডা: আশরাফুল কবীর ও ডা: নাসিম অপারেশনের জন্য বিকেল ৪.৩০মিনিটে অপারেশন থিয়েটারে নেয়। হাসপাতালে ডিউটিরত চিকিৎসক না থাকায়, অনকলের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট আশরাফুল কবীরকে নিয়ে এসে রাফেজা বেগমের কিডনির পাথর অপারেশন করে। প্রায় ২ ঘন্টা অস্ত্রোপাচারের পর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে অপারেশন শেষে করে রোগীকে বেডে পাঠানো হয়। বেডে যাওয়ার এক ঘন্টা পর রোগীর মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের আজাহারীর সৃষ্টি হয়। পরে রাতেই হাসপাতালে পুলিশ গিয়ে রোগীর স্বজনদের সান্তনা দেন। এসময় রাত ১০.৩০ মিনিটে মৃত রাফেজার ভাই শোকে অজ্ঞান হয়ে পরলে সে সময়ও এই হাসপাতালে কোন কর্তব্যরত চিকিৎসক না থাকায় মাথায় পানি ঢেওে তাকে সুস্থ্য করা হয়।  দীর্ঘদিন যাবত এই প্রাইভেট হাসপাতালটি সরকারী বিধি-নিষেধ অমান্য করে অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছে। আরও জানা যায়, হাসপাতালটিতে ডিউটি অফিসার, ডিপ্লোমাধারী নার্স ও হাসপাতালের ছাড়পত্র নবায়ন ছাড়াই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
মৃত রোগীর স্বামী আব্দুল করিম জানান, তার স্ত্রী দীর্ঘদিন যাবত কিডনিতে পাথর জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। কিডনির পাথর অপারেশনের জন্য এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করলে বিকেলে অপারেশন করেন ডা: আশরাফুল কবীর। অপারেশন শেষে বেডে নেয়ার সময় আমার স্ত্রী হাত-পা আছড়াতে থাকে। পরে নার্স ২টা ইনজেকশন দিয়ে বলে আপনার স্ত্রী এখন ঘুমাচ্ছে, কথা বলা যাবে না। তিনি আরও জানান, অপারেশনের পর পরই ডা: আশরাফুল কবীর হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায়। এর পর আমার স্ত্রী রাত সাড়ে আটটার দিকে মারা যায়। আমার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর লোক মারফত জানতে পারি আগেও এই হাসপাতালে অবহেলায় ও অপচিকিৎসায় রোগী মারা গেলে টাকা পয়সা দিয়ে ধামাচাপা দেওয়া হয়।
মানিকগঞ্জ এ্যাপোলো হাসপাতালের মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: তারিক উল হাসান সাংবাদিকদের জানান, অপারেশনের সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম না,আমি জানতাম এ অপারেশন হবে। পরে খবর পেয়ে এসে দেখি রোগী মারা গেছে। হাসপাতালের অব্যাবস্থাপনার কথা বললে তিনি আরো জানান রোজার মাস এ কারনে ষ্টাফরা ইফতারের আগে সবাই বাসায় গিয়ে ছিল। এ ব্যাপারে ডা: আশরাফুল করীর বলেন, আমার দায়িত্ব অপারেশন শেষ করে বেডে পৌছে দেয়া। আমিতো ওই হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক নই। আমি চলে আসার পর রোগীর মৃত্যূ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা: আনোয়ারুল আমীন আখন্দ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আলোকিত প্রতিদিন / ২৬ এপ্রিল, ২০২১ /

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here