করোনায় জুটমিল শ্রমিকদের দিন কাটছে না খেয়ে

0
368

প্রতিনিধি, খুলনা:

করোনার ২য় ধাপে চরম কষ্টে দিন কাটছে খুলনার একের পর এক বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি জুট মিল শ্রমিকদের। হাজার হাজার শ্রমিক-কর্মচারী পরিবারের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। মিলের শ্রমিক কলোনিতে চলছে বোবা কান্না। নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। ফরিদপুরের গোয়ালপাড়া গ্রাম থেকে ১৯৭৮ সালে এসে মিরেরডাঙ্গা শিল্পাঞ্চলের অ্যাজাক্স জুট মিল তাঁত বিভাগে চাকরি নেন মোমরেজ সর্দার। দীর্ঘদিন চাকরি করার পর অ্যাজাক্স জুট মিলটি ২০১৪ সালের ২২ মে বন্ধ হয়ে যায়। মিল বন্ধ হলেও অন্য শ্রমিকের মতো মিল মালিকের কাছে জুট মিল শ্রমিক মোমরেজ চূড়ান্ত পাওনা বুঝে পাননি ৭ বছরেরও অধিক সময়ে। শনিবার দুপুরে এ শ্রমিকের সাথে এ প্রতিবেদকের কথা বলার সময় কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, নিজের জীবন-যৌবন পার করলাম মিলে। কাজ করে শেষ বয়সে এসে কাজ করার ক্ষমতা নেই। মালিকের কাছে ৭ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। টাকাটা দিলে অন্য কিছু করে খেতে পারতাম। ৫ জনের সংসার। বড় ছেলে দিন মজুরির কাজ করে। ওর ওপর সংসার নির্ভর করে। করোনার কারণে বড় ছেলেটার কাজও বন্ধ। আজ ৩ দিন হয় বাড়িতে চুলা জ্বলে না। শিরোমনি শিল্পাঞ্চলের মহসেন জুট মিলটি দীর্ঘ ১৩ মাস লে-অফ থাকার পর ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই মিলটি বন্ধ ও মিলের ৬৬৭ জন শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাই করে মিল কর্তৃপক্ষ। শ্রমিক কর্মচারীদের প্রায় ১০ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। নানা অজুহাতে মিলের মালিক শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করছেন না।খুলনার মহসেন, সোনালি, অ্যাজাক্স , আফিল, জুট স্পিনার্সসহ ব্যক্তিমালিকানা জুট মিলের হাজার হাজার শ্রমিক বর্তমানে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আফিল মিলটি বন্ধ হয়। বর্তমানে শ্রমিকের মিল মালিকের কাছে প্রায় ৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। শিরোমনি বিসিক শিল্প এলাকার জুট স্পিনার্স মিলটি ২০১৬ সালে বন্ধ হয়। মিলটিতে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ১২০০ শ্রমিক কাজ করতেন। শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পওনা রয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা।

আলোকিত প্রতিদিন / ২৬ এপ্রিল, ২০২১ /

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here