আদালত ও থানার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চট্টগ্রামে মসজিদের নামে জমি দখলের চেষ্টা

0
539
চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
আমাদের দেশে সম্প্রতি বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে সরকার কঠোর  লকডাউন ঘোষণা করেন,আর এই সুযোগে একটি সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু মসজিদের নাম ব্যবহার করে বায়েজিদ থানাধীন ২নং জালালাবাদ ওয়ার্ড এর কুলগাঁওস্থ খন্দকিয়া এলাকার এক অসহায় একব্যক্তির বিএস ৩৪০৪ দাগের ৪৮৮নং খতিয়ান ভুক্ত জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।তারা রাতারাতি জমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণ করে জমি দখল করে নেওয়ার চিত্র সরজমিন অনুসন্ধানে পাওয়া যায়। এলাকায় একটি চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভুক্তভোগীকে নানাভাবে হয়রানির শিকার এবং হুমকি ধমকি দিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে সন্ত্রাসীদের সহায়তায় দেওয়াল তুলে ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছে এই ভুমিদস্যু চক্রের সন্ত্রাসীরা। এই বিষয়ে ভুক্তভোগী বিগত২৪-১১-২০২০ তারিখে বিবাদীগনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত,চট্টগ্রাম বরাবর একটা সাধারণ ডায়েরি নং-৩৬৪/২০ দায়ের করেন,অতঃপর  ১৩-০৩-২০২১ তারিখে নগরীর বায়েজিদ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেও নিস্তার না পেয়ে ২১-০৩-২০২১ তারিখে মহান্য আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৪৫ ধারায় মামলা নং-৪৭৫/২০২১ দায়ের করলে মহান্য আদালত নালিশী ভুমিতে একটি আদেশ জারি করে উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে বায়েজিদ থানার ইনচার্জ এবং তপশিলি জায়গার দখল ও মালিকানা সংক্রান্ত স্ক্রেসম্যাপসহ আদালতে পূর্ণ প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ জারি করেন।কিন্তু রহস্যজনকভাবে অদৃশ্য কারণে থানায় উভয় পক্ষের সালিসি বৈঠকের পরে ভুক্তভোগীকে নানান উপায়ে হুমকি ধমকি দিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে রাতারাতি জমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণ করে এবং এইবিষয়ে বার বার থানাকে জানানোর পরেও কোনপ্রকারেই কাজ বন্ধ রাখেনি ভুমিদস্যু চক্রের সন্ত্রাসীরা। এই বিষয় নিয়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেক সাহেব এর কাছে তপশিলি জায়গা সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তির পূর্বে আদালতের  আদেশের তোয়াক্কা না করে জমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার বিষয় জানতে চাইলে,তিনি বলেন মহল্লার সদ্দার এবং মুসল্লীদের মতামতের ভিত্তিতে মসজিদের সম্পত্তি উদ্ধার করে একটি পরিবারকে এক হাজার টাকায় ভাড়া দেওয়া হয় যা মসজিদের উন্নয়ন কার্যক্রমে ভূমিকা রাখবে। মামলা মোকদ্দমা চলমান তফসিল ভুক্ত জায়গা মসজিদের নামে কোন প্রকার দালিলিক প্রমাণ পত্র অর্থাৎ খতিয়ান, কাবলা বা দানপত্র  আছে কিনা জানতে চাইলে উনি সংশ্লিষ্ট জায়গার সাপেক্ষে কোনো কাগজ বা দালিলিক প্রমাণ নেই বলে জানান।এলাকার সাধারণ লোকজনের কথায় মসজিদের নামে আরএস ২৪৫৭ এবং ২৪৫৮দাগ ভুক্ত,বিএস-৪৮২ নং খতিয়ানের ৩৬৮৫/৩৬৮৭/৩৬৮৮দাগের জায়গায় কতিপয় ব্যক্তির পারিবারিক কবরস্থান নাম দিয়ে সাইনবোর্ড দিলেও কোনপ্রকার বাধা দিতে ব্যার্থ হয়েছে অথচ অসহায় একটি ব্যক্তির পৈত্রিক সূত্রে বিএস খতিয়ান ভুক্ত জায়গা জমি মসজিদের নিজস্ব সম্পত্তি বলে জবরদখল করে অবকাঠামো নির্মাণ করে চলছে উল্লেখিত ভুমিদস্যু চক্রের সন্ত্রাসীরা। জোরপূর্বক জবরদখল করে অবকাঠামো নির্মাণ কাজ চালিয়ে থেমে থাকেনি বরং বিগত ২৯-০৪-২০২১ তারিখে একটা পরিবার মালপত্র নিয়ে দখলকৃত জমিতে নির্মানাধীন ঘরে ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠতে গেলে ভুক্তভোগী থানার সহযোগিতা চেয়ে  বায়েজিদ থানায় কল দিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত  পুলিশ অফিসার ওই ভাড়াটিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চলমান মামলা মোকদ্দমার বিষয় জানিয়ে তাকে অন্যত্র বাসা নিয়ে চলে যেতে বলেন।এই বিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি এবং মহল্লার সদ্দার আজিজুল হকও দ্বিমত পোষণ করে বলেন এই জমি  দীর্ঘদিন পর্যন্ত মসজিদের সম্পত্তি বলেই জেনেছি এবং নিজ পরিবারও খাজনা মূলে চাষাবাদ করে মসজিদকে খাজনা পরিশোধ করে আসছি। উল্লেখ্য বিষয় হলো আদালতে মামলা দায়েরকারী বিবাদী নূরুল আলম এবং মসজিদ কমিটির সভাপতি আজিজুল হক পরস্পরের সম্পর্কে আপন ভাই হওয়া স্বত্তেও কোনপ্রকার দালিলিক প্রমাণ পত্র অর্থাৎ খতিয়ান,কাবলা বা দানপত্র ছাড়াই মসজিদের নিজস্ব সম্পত্তি বলে জবরদখল করে অবকাঠামো নির্মাণ করে ভাড়াটিয়া তুলে দখলে নিয়েছে এই ভুমিদস্যু চক্র। ভুক্তভোগী নুরুল আলম বলেন আমি রাষ্ট্রের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে বিএস খতিয়ান মূলে মালিকানা দাবি করে থানায় অভিযোগ করেছি অতঃপর মহামান্য আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছি, আদালতের রায়ের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে আদালতে সিদ্ধান্ত যা হবে ইনশাআল্লাহ তা-ই মেনে নিতে বাধ্য। এই বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে মসজিদ কমিটির নানান রকম অনিয়মের অভিযোগ তার মধ্যে মসজিদের নিজস্ব বিদ্যুৎ লাইন অর্থাৎ মিটার না থাকা সত্বেও বিদ্যুৎ ব্যবহার,চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কতৃক পরিচালিত মক্তব বন্ধ থাকা সত্বেও মক্তবের হুজুরের নামে বেতন উত্তোলন করা, মসজিদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থাকা সত্বেও কতিপয় ব্যক্তির একক সিদ্ধান্তে অর্থ ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করা,এমনকি এলাকার রাস্তায় বিদ্যুৎ লাইন(সড়ক বাতি)সুইজ ব্যক্তির বাড়িতে রেখে মোয়াজ্জেম এর নামে লাইট অপারেশন ভাতা উত্তোলন করা(রাস্তার লাইটের সুইস সচরাচর মসজিদে থাকে এবং তার জন্য মোয়াজ্জেমকে কিছু ভাতা দেয়া হয়) সহ যাবতীয় বিষয় যা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সুষ্ঠু সমাধানে এগিয়ে আসবে বলে সাধারণ মানুষ আশাবাদী।
আলোকিত প্রতিদিন / ০৪ মে, ২০২১ / ত ষ র

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here