প্রতিনিধি, পঞ্চগড়:
ভালো দাম পেয়ে লাভবান হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে মসলা জাতীয় ফসল মরিচের চাষ করে আসছেন পঞ্চগড়ের কৃষকেরা। এ বছরও ১০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে এ জেলায়। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে এবছর আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। তারা বলছেন, গত বছর যেই শুকনো মরিচ ছয় হাজার টাকা মণ বিক্রি হয়েছে সেই মরিচ এবার চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা মণ বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া জমি থেকে মরিচের উত্তোলন খরচও বেশি।কথা হয় পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের শালুকপাড়া এলাকার কৃষক আনছারুল হকের সঙ্গে। এবছর এক একর জমিতে মরিচের আবাদ করেছেন তিনি।তিনি বলেন, ফলন ভালো হয়েছে। তবে দামে কম আর উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছি। একই কথা বলেন, কামারপাড়া এলাকার কৃষক মজিবর রহমান। তিনি বলেন, প্রতি কেজি গাছপাকা মরিচ তুলতে ১০ টাকা দিতে হয় শ্রমিককে। এমন চার কেজি গাছপাকা মরিচ থেকে এক কেজি শুকনো মরিচ হয়। অর্থ্যাৎ, উৎপাদন খরচের বাইরেও প্রতি কেজি শুকনো মরিচে ৪০ টাকা গুণতে হয়। যদি দাম ভালো হতো তাহলে হয়তো লাভের মুখ দেখতে পেতাম।কথা হয় সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার কৃষক বশিরুল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, রোগ জীবানু তেমন না ধরলেও ঝড়ের কারনে মরিচ গাছে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে দাম ভালো পেলে লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবো। একই কথা জানান, তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি এলাকার কৃষক হবিবর রহমান। তিনি বলেন, মরিচের দাম গত বছরের চেয়ে অনেক কম। এ দামে মরিচ বিক্রি করলে লাভের মুখ দেখা যাবেনা। জানা গেছে, পঞ্চগড়ে উৎপাদিত মরিচ আকার, বর্ণ ও স্বাদের কারনে বেশ সুনাম রয়েছে। স্থানীয় বাজারসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এখানকার মরিচের ব্যাপক চাহিদা। মৌসুম এলে ব্যবসায়ীরাও ভিড় করে এখানে। তবে করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন কারণে এবছর ব্যবসায়ীদের সমাগম কম। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর পঞ্চগড়ে ১০ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছিলো। যা থেকে শুকনো মরিচ উৎপাদন হয়েছিলো ৩২ হাজার ৮৩৮ মেট্রিক টন। এ বছর চাষ হয়েছে ১০ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ হাজার মেট্রিক টন। পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মিজানুর রহমান বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর মরিচে তেমন রোগ-বালাই না হওয়ায় কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছে। কৃষকরা যেন ভালো দাম পায় এবং বাইরে থেকে যেন ব্যবসায়ী আসতে পারেন সে দিকে আমাদের নজর থাকবে।
আলোকিত প্রতিদিন / ২৩ মে, ২০২১/ দ ম দ