চন্দনাইশের হাশিমপুরে নলকূপের পাইপ দিয়ে বের হচ্ছে গ্যাস

0
361
প্রতিনিধি, চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম):
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ হাশিমপুর পালপাড়া এলাকায় নলকুপের পাইপ দিয়ে বের হচ্ছে গ্যাস।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দক্ষিণ হাশিমপুর পালপাড়ার মৃত রবীন্দ্র পালের ছেলে অমল পাল ওরফে নন্দ পাল তার ঘরের পাশে গত ২ মে ৭ হাজার টাকায় ১টি নলকুপ বসানোর কাজ শুরু করে। নলকুপের ৭০ ফুট পাইপ ভিতরে যাওয়ার পর গ্যাস পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ৯৫ ফুট অতিক্রম করার পর আরো বেশি করে গ্যাস আসতে থাকলে নলকুপ বসানোর কাজের লোকেরা শঙ্কিত হয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। ঐ দিন প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে তারা কাজ করে পানি তুলতে পারেনি। এখন প্রতিদিন নন্দপালের নলকূপের হাতলে চাপ দিলে গ্যাস বের হতে শুরু করে। নন্দপাল কেউ গেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে তাদেরকে দেখাচ্ছেন। গত ২১ দিন ধরে নন্দপালের নলকুপের পাইপ দিয়ে গ্যাস উঠলেও তিনি প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের কোন রকম অবহিত করেন নাই বলে জানান। তবে তার এ নলকুপ দিয়ে পানি তুলতে পারছেন না কোনভাবে। বিষয়টি নিয়ে উৎসুক জনতা প্রতিদিন নন্দপালের ঘরে ভিড় জমাচ্ছে। নন্দপাল পেশায় ভ্যানচালক,পাশাপাশি ক্ষেত খামার করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের এলাকায় একটি এনজিও’র পক্ষ থেকে কয়েকটি নলকুপ দিলে নন্দপাল ও একটি পায়। তার পার্শ্ববর্তী বিমল পাল ও সনজীব পালের নলকুপ ২টি গত ১৫ দিন আগে একই এলাকায় বসালেও তাদের কোন সমস্যা হয়নি। নন্দপাল দুর্ঘটনা এড়াতে কাজ কর্ম ছেড়ে দিয়ে নলকুপের পাশে অবস্থান নিতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নলকূপ বসানোর মিস্ত্রি আব্দুল আজিজ বলেন, আমরা ৬০ফুট গভীরে যাওয়ার পর গ্যাসের অস্তিত্ব পাই। পুরোপুরি নিশ্চিত হই ৯৫ ফুট গভীরে যাওয়ার পর। আমার দীর্ঘ ৪৫ বছরের কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি এখানে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যাবে। এ ব্যাপারে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ফরহাদ উদ্দীন বলেছেন, তিনি বিষয়টি অমল পালের ছেলে শিমুলের নিকট থেকে জেনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন। যেহেতু নলকুপটি বেসরকারীভাবে স্থাপন করা হচ্ছে। যেহেতু গ্যাস উঠছে সেহেতু এটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে চন্দনাইশ ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো.শাহ আলম খান বলেন, নলকূপ থেকে গ্যাস বের হওয়ার বিষয়টি আগে কেউ অবহিত করে নাই। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সংবাদ পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। হাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গ্যাস বের হওয়ার বিষয়টি মাননীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে অবহিত করেছি। ২৭ মে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় বিষয়টি উত্থাপন করে বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অনুরোধ করেছি।
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন রিসিভ না করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলামের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) লিঃ এর ভূতত্ত্ব বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হোসেন জানান, স্বল্প গভীরতায় নলকূপ দিয়ে বের হওয়া গ্যাস বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনের সুযোগ নেই। ওই উপজেলার প্রশাসন বাপেক্স মহাব্যবস্থাপক বরাবরে লিখিত আবেদন করলে একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্গত গ্যাসের নমুনা ও প্রেশার পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, “লিখিত আবেদন পেলে আমরা ঘটনাস্থলে আমাদের টিম পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমরা যে কূপগুলো থেকে বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস উত্তোলন করি তার গভীরতা প্রায় ১২ হাজার ফিট। চন্দনাইশে ৯৫ ফিট গভীরতার নলকূপ থেকে যে গ্যাস নির্গত হচ্ছে তা বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনের সুযোগ নেই।
আলোকিত প্রতিদিন/২৮ মে, ২০২১/ দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here