প্রতিনিধি, বগুড়া:
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও নতুন করে দেখা দিয়েছে নদীর তীর ভাঙ্গণ। এমন সংবাদ পেয়ে আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় উপজেলার কুতুবপুর, চন্দনবাইশা, কামালপুর, রৌহাদহ ও ফকিরপাড়ায় যমুনা নদী ভাঙ্গণ কবলিত এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করেছেন বগুড়া -১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান। পরিদর্শন কালে তিনি বলেন, প্রয়াত সাংসদ আব্দুল মান্নান সাহেব যমুনা নদী ভাঙ্গণ বন্ধ করতে ৩’শ ১৬কোটি টাকা বরাদ্দ এনে দিয়ে ছিলেন। যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ করার জন্য। কাজ করা হয়েছে দির্ঘদিন পর আবারও ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গণ কবলিত এলাকায় স্থায়ীভাবে কাজ করে এই এলাকার মানুষের জানমাল রক্ষা করা হবে। পরিদর্শন কালে উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাংসদ পুত্র শিক্ষাবিদ সাখাওয়াত হোসেন সজল, এসডিই আব্দুর রহমান তাসকিয়া। উল্লেখ্য; ২০১৪ সালের বন্যা আর নদী ভাঙ্গণে নিঃশেষ হতে বসেছিল। বার বার ছোট খাটো ব্যাবস্থা গ্রহণ করে কিছুতেই থামানো যাচ্ছিল না যমুনার নদী ভাঙ্গণ। বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রয়াত আব্দুল মান্নান এর একান্ত প্রচেষ্টায় পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙ্গণ কবলিত এলাকা রক্ষা করতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। বগুড়া জেলার কর্নিবাড়ী হতে কামালপুর পর্যন্ত যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ সহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ শিরষক প্রকল্পটি ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারীতে অনুমোদিত হয়। যতো গুলো উদ্দেশ্য কে সামনে রেখে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্পটি গ্রহণ করে সে গুলো হলো প্রকল্পের অধীনে যমুনা নদীর ডান তীরে ঝুঁকিপূর্ণ ৫.৯ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন করে নদী ভাঙ্গণ রোধ করা। যমুনা নদীর ডান তীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষা করা। নদী ভাঙ্গণ প্রতিরোধের মাধ্যমে সারিয়াকান্দি উপজেলার কর্নিবাড়ী, কুতুবপুর, চন্দন বাইশা ও কামালপুরের অনুমানিক ১২শ ৩১ কোটি টাকার সরকারী ও বেসরকারী সম্পদ রক্ষা করা। এবং বগুড়া জেলার পুর্ব অংশকে বন্যা মুক্ত করা। প্রকল্পটির অধীনে ৮ কিলোমিটার বিকল্প বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে সাড়ে ৮ হাজার হেক্টোর কৃষি জমি বন্যা থেকে রক্ষা করা। পরবর্তীতে ডিপিএম পদ্ধতিতে কাজটি বাস্তবায়নের দায়ীত্ব পায় নৌবাহিনী পরিচালিত ডকইয়ার্ড ইন্জিনিয়ার লিমিটেড নারায়ণগন্জ। পরে তারা আরেকটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে ২০১৬ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু করলে ২০১৮ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয় এবং নদী ভাঙ্গণ থেমে যায়। ভাঙ্গা কপাল জোড়া লাগে এই এলাকার হাজারো মানুষ আবারো নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। সাম্প্রতিক যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবারও নতুন করে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গণ। কামালপুর ইছামারা ফকিরপাড়া রৌহাদহ এলাকায় নদীর ডান তীর সংরক্ষণ কাজের পিচিং দেবে গিয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গণ। আতংকে পরেছেন হাজারো মানুষ। পরিদর্শন কালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, ভাঙ্গণ কবলিত এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। প্রকল্প পাস হলে আগামী বছর স্থায়ীভাবে কাজ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছাদত হোসেন, মমতাজুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম, কামালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম আপেল, সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান হেলাল, চন্দনবাইশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদুন নবী হিরো, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মিলন, কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান মিঠু, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ।
আলোকিত প্রতিদিন/২৮ মে, ২০২১/ দ ম দ