গজারিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ

0
404

দেলোয়ার হোসেন, গজারিয়া:
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঘর পেয়েছেন সচ্ছল , অন্য জেলার বাসিন্দা, এমনকি অবিবাহিত নারীও। গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা গেছে, উপজেলায় দুই ধাপে ১৭০ পরিবারের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে। তার মধ্যে প্রথম ধাপে ঘর পাচ্ছে ১৫০টি পরিবার। বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, উপহারের ঘর বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। ঘর বরাদ্দ দিতে বাণিজ্য করা হয়েছে লাখ লাখ টাকা। তালিকা ধরে দেখা যায়, ১৫০ জনের তালিকায় ১১৩ নম্বরে রয়েছে সাজেদা আক্তার নামে এক নারীর নাম। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায়। স্বামী সহ স্থানীয় একটি শিল্প কারখানায় কাজ করেন তিনি। স্থানীয় এক ভূমি অফিসের কর্মকর্তার বাড়িতে ভাড়া থাকেন। টাকার বিনিময় তিনি বরাদ্দ নিয়েছেন সরকারি ঘর। তালিকায় ১২১ নম্বরে রয়েছে সোনিয়া আক্তারের নাম। তিনি ভবেরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য। খোঁজ নিয়ে জানা যায় , সোনিয়া আক্তার সচ্ছল। তার নিজের এবং স্বামীর বাড়িতে সম্পত্তি এবং ঘরবাড়ি রয়েছে। তালিকায় ১২৩ নম্বরে নাম রয়েছে লিটন মিয়ার। তার পরিবারের একাধিক সদস্য ইতিপূর্বে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন। তালিকায় ১০২ নম্বরে নাম রয়েছে নিপা দাসের। নিপা এখনও অবিবাহিত এবং তার পরিবারের অবস্থা সচ্ছল। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয় ভবেরচর ইউপির চেয়ারম্যান সাহিদ মোঃ লিটনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঘর বরাদ্দ দেওয়ার সময় তাদের মতামত নেয়া হয়নি। তালিকায় তার ইউনিয়নে এমন কয়েকজন রয়েছেন, যাদের তিনি নিজেও চেনেন না এবং যারা ঘর পাওয়ার যোগ্য নন। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হোসেন্দী ইউপির চেয়ারম্যান মনিরুল হক মিঠুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। ১৫০ জনের তালিকা ধরে অনুসন্ধান করে এ রকম বেশ কিছু অনিয়মের চিত্র উঠে এসেছে। প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে ঘর বরাদ্দে অনিয়ম হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হয় গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, তালিকায় কিছু অনিয়ম হয়েছে। তার চোখেও পড়েছে বিষয়গুলো। তবে সেগুলো সংশোধনের চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, ঘর বরাদ্দ দেয়ার ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা যুক্ত ছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তিনি বলেন, আমার দায়িত্ব শুধু ঘর বানিয়ে দেওয়া, ঘর বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে কিছু বলার এখতিয়ার আর আমার নেই। এ ব্যাপারে জানতে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কয়েকটি অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। সেগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/৩১ মে, ২০২১/ দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here