প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা:
একে একে তিনটি কন্যা সন্তান জন্মের পর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে নানা কথা শুনতে শুনতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন শ্যামলী ঘোষ (৩৫)। এরপর চতুর্থ সন্তান হিসেবে আবারও কন্যান সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। এবার রক্ষা করে কে? অপয়া-অলক্ষ্মীর অপবাদে জর্জরিত করে তোলা হয় শ্যামলীকে। তাই অপবাদ সইতে না পেরে আটদিন বয়সী কন্যা শিশুকে গলা টিপে হত্যার পানিতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে মা শ্যামলী ঘোষ। বুধবার (০২ জুন) ভোরে আটদিন বয়সী ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মাকে আটক করলেও বাবা পলাতক রয়েছেন। আটক শ্যামলী ঘোষ (৩৫) খলিলনগর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের মানিক ঘোষের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানান, ২৫ মে রাতে মানিক ঘোষ ও শ্যামলী দম্পত্তির আটদিন আগে চতুর্থ সন্তান হিসেবে একটি কন্যা সন্তান জন্ম হয়। তাদের আগের তিনটি সন্তানও কন্যা। জন্মের পর থেকে স্বামী বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। মঙ্গলবার (০১ জুন) সকাল থেকে নবজাতকটি নিখোঁজ ছিল। পরে গ্রামবাসীসহ পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাতে বাড়ির পাশে পুকুরে নবজাতকটির মরদেহ ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খলিলনগর ইউনিয়নের রায়পুর এলাকার জনৈক আজমির হোসেন জানান, ছেলে সন্তানের আশায় সন্তান নিয়ে চারবারই কন্যা হয়েছে। এতে করে শ্যামলী ঘোষকে শুনতে হয়েছে নানা কথা। সে কারণে রাগ করে নবজাতক কন্যাকে মেরে ফেলেছে। খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান লিটু জানান, ঘটনাস্থলে গ্রাম পুলিশকে পাঠানো হয়েছিল। চৌকিদার ফিরে আসা গ্রামপুলিশের বরাত দিয়ে চেয়ারম্যান জানান, শ্যামলী ঘোষের স্বামী মানিক ঘোষ বলেছেন, তিন মেয়ের পর আবার মেয়ে হয়েছে। এ মেয়েকে মেরে না ফেললে তোকে আমি বাড়িতে রাখব না। সে স্বামীর কথামতো নবজাতকটিকে মেরে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। পরে রাতে পুলিশ নবজাতকটির মরদেহ উদ্ধার করে। এবিষয়ে জানতে তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর মা শ্যামলী ঘোষকে থানায় নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে এখন কিছু বলা যাবেনা।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২ জুন, ২০২১/ দ ম দ