বরগুনায় মাছ ধরার জাল বিক্রির জমজমাট হাট

0
323
প্রতিনিধি, বরগুনা:
বরগুনাতে জমে উঠেছে জালের মেলা। বর্ষার আগে জোয়ারের পানিতে ভেসে আসে প্রচুর মাছ। আর এই মাছ ধরার প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে জাল। বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার জন্য জালের চাহিদা বেড়ে যায়। জালের মধ্যে রয়েছে বড় জাল, ধর্মজাল, খড়া, ঢেলাজাল ও ঝাঁকিজালসহ আরো কত কী। খাল-নদীতে ঘেরা উপকূলীয় বরগুনা জেলার বিভিন্ন উপজেলার  বাসিন্দারা সারা বছর নদী-নালা-ডোবা-পুকুর থেকে মাছ শিকার করেন। তবে বর্ষা মৌসুমে মাছ শিকারের চাহিদা বেড়ে যায়। গ্রামীণ জীবনে মাছ ধরতে ঝাকি, চাক ও কোনা জালের ব্যবহার মিশে আছে সেই দূর অতীত থেকে। আগে প্রায় বাড়িতেই মাছ ধরার জাল বোনা হতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে সময় ব্যয় করে এখন আর তেমন জাল বোনা হয় না। অধিকাংশ মানুষ তাই বাজার থেকে জাল কিনে থাকেন। বর্ষা এলে জাল বিক্রির এমনই পসরা বসে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। আর এ সব ছোটখাট দোকানকে কেন্দ্র করে গ্রামের সাধারণ মানুষদের উপস্থিতি থাকে বেশ চোখে পড়ার মতো। সরেজমিনে বরগুনা পৌরশহরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছ ধরার নানা সাইজের ঝাকি, কোনা এবং চাক জালের পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের সঙ্গে দাম হাকিয়ে বিক্রি করছে ধুমছে। সাইজ অনুযায়ী জালের বিক্রয়মূল্য একেক রকমের। বড় আকারের ঝাকি জাল সর্বনিম্ন ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এছাড়াও মাঝাড়ি আকারের ঝাকি জাল ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। চাকজাল সর্বনিম্ন ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। কোনা জাল ৬৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়াও খুচন জাল ৫০ থেকে ১০০ টাকা দামে বিক্রয় করা হয়। উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের ফুলতলা গ্রামের মিরাজ হোসেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে ধান খেতে ও ছোট নালায় প্রচুর চিংড়ি মাছ পাওয়া যায়। চিংড়ি মাছ ধরার জন্য চাক জালের প্রচুর চাহিদা। তিনি বাড়ির পাশে নালায় চাক জাল দিয়ে চিংড়ি মাছ ধরার জন্য জাল কিনেছেন। একই গ্রামের মালেক  খান বলেন, এক সময়ে বাঁশের তৈরি চাঁইয়ের চাহিদা ছিল। বর্তমানে বাঁশের তৈরি চাঁইয়ের দাম বেশি হওয়ায় চাক জাল মানুষ বেশি কিনছে। জাল ব্যবসায়ী জানান, বর্ষার সারা মাস বিভিন্ন হাট বাজারে ঝাকি, চাক ও কোনা জাল বিক্রয় করি। তবে বর্তমানে কারেন্ট জালের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে এই জালের চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। কিন্তু পূর্বপুরুষের পেশা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য এখনো এই জাল বিক্রয় করে যাচ্ছি। আরেক জাল ব্যবসায়ী জোসেফ বলেন, ‘বর্ষার সময়ে চাহিদা বেশি থাকায় আমাদের বেচাবিক্রি ভালো হয়ে থাকে। প্রতিদিন গড়ে ৫-৬টা এবং তার বেশিও ছোট বড় ঝাকি জাল বিক্রি হয়। কিন্তু এই মৌসুম শেষ হলে অলস হয়ে পড়ে থাকতে হয়। তখন প্রতিদিন ২টা, সর্বোচ্চ হলে ৩টা বিক্রি হয়। তাও আবার সীমিত লাভে। এমনও সময় গেছে সপ্তাহে ১টাও বিক্রি করতে পারি নাই।’
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৬ জুন, ২০২১/দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here