প্রতিনিধি, সারিয়াকান্দি (বগুড়া):
যমুনা নদীর বাম তীর সংরক্ষণ করা হচ্ছে কন্সট্রাকশন কাজ দ্বারা। কাজটি শেষ করা হলে যমুনা নদীর বাম তীরে থাকবেনা কোন নদী ভাঙ্গন। ৫’শ ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। যমুনা নদীর পূর্বপাড়ে প্রকল্পটির কর্মকান্ড দৃশ্যমান হওয়ায় এলাকার মানুষের মনে আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে বর্ষা শুরু হতেই প্রতি বছর দেখ দেয় ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন। এই নদী ভাঙ্গনে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ী, কাজলা, কর্ণিবাড়ী ও বোহাইল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হবার ঘটনা প্রতি বছরের। এছাড়াও বিভিন্ন ফসলাদী সহ হাজার হাজার হেক্টর জমিজমা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে থাকে এই নদী ভাঙ্গনে। জমিজমা ও ঘরদোর হারিয়ে বাস্তহারা লোকজনের বুকফাটা আর্তনাদ প্রতি বছরের ঘটনা হওয়ায় তা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরই মধ্যে যমুনা নদীর বাম তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ডিসেম্বর মাস থেকে প্রকল্পটির কাজ শুরু করেছে। এ কাজ চলবে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। ১৩টি গ্রুপে বিভক্ত করে প্রকল্পটির কাজ শুরু করে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের জামথল নৌ-ঘাট থেকে কাজটি শুরু করা হয়েছে এবং তা কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের চর শোঁনপচা গ্রাম পর্যন্ত কন্সট্রাকশন কাজ দ্বারা সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই কাজলা ও কর্ণিবাড়ী চর এলাকার ৬.৫০ কিলোমিটার যমুন নদীর তীর সংরক্ষণ করার জন্য ব্যয় হবে ৫’শ ৮৪ কোটি টাকা। এই পরিমাণ টাকা দিয়ে যমুনা নদীর বাম তীরে সিসি ব্লক নিক্ষেপ, তীরের মাটিতে জিওটেক্স বিছিয়ে তার উপর সিসি ব্লক দ্বারা স্তরে স্তরে সাজানো হবে। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। গতকাল প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায় যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণের জন্য শ’ শ’ শ্রমিক বিভিন্ন রকমের কাজে যুক্ত হয়েছেন। কাজলা ইউনিয়নের জামথল চরের জাকির হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, শুনেছিলাম যমুনা নদীর পূর্বপাড় (বাম তীর) কন্সট্রাকশন কাজ দ্বারা সংরক্ষণ করা হবে। রাক্ষুসী যমুনা নদী আর কখনো ভাংবেনা। প্রকল্পটির কাজ বর্তমানে চলমান দেখে আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। কাজের ধরন দেখে চরাঞ্চলের লোকজনদের মধ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) মো: দীন ইসলাম বলেন, প্রকল্পের ভাটির দিকে যমুনা নদীর বাম তীর সংরক্ষণের জন্য প্রকল্পের পরিধী আরো বাড়ানো দরকার। তাহলে সারিয়াকান্দি উপজেলা এলকায় যমুনা নদীর বাম তীরের ভাঙ্গন জিরো টলারেন্সে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছি। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আবু সাঈদ মোবাইল ফোনে বলেন, করোনা ভাইরাসজনিত কারনে আমাদের প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব না হলে সময় বৃদ্ধির জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষর কাছে আবেদন করা হতে পারে। কাজেই আমরা স্থানীয়দের সহযোগীতা পাচ্ছি।
আলোকিত প্রতিদিন/ ২১ জুন, ২০২১/দ ম দ