টঙ্গীবাড়ীতে রাস্তা সংস্কারে ধীরগতির কারণে বাড়ছে জনদূর্ভোগ

0
249

দেলোয়ার হোসেন, গজারিয়া:
টঙ্গীবাড়ী উপজেলার যশলং ইউনিয়নের হাটখান হতে চাপ গ্রাম পর্যন্ত রাস্তাটিতে সংস্কার কাজে ধীরগতি কারনে প্রায় ৬ মাস ধরে যাতায়াতে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে হাজারো মানুষ। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তাটি প্রায় ৬ মাস আগে সংস্কার করার নামে খুঁড়িয়ে ফেলে রাখে একটি ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠাণ। রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের চিত্র ধরা পড়লে একটা সময়ে ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ রেখে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ সবুজ নামের এক ব্যক্তিকে রাস্তাটি সংস্কারের অনুমতি প্রদান করেন। বর্তমানে রাস্তাটিতে সংস্কার কাজ চলছে মন্থর গতিতে। রাস্তার মাঝখানে নিম্ন মানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আলদি দিঘিরপাড় মহা সড়কের পূর্ব হাটখাঁন থেকে একটি পিচ ঢালাই রাস্তা পশ্চিম দিকে চলে গেছে। রাস্তাটি ১ কিলোমিটারের পিচ ঢালাই রাস্তা পাড়ি দিলেই হাটখাঁন গ্রামের সামনে থাকা ব্রিজের পর থেকে প্রায় ১২ শ মিটার পর্যন্ত রাস্তাটিতে ইটের খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে চাপ গ্রাম পর্যন্ত রাস্তাটির বাকী অংশ মাটি কেটে খুঁড়িয়ে রেখেছে। দীর্ঘ প্রায় ৩ কিলোমিটারের সড়কটিকে দু”ভাগে টেন্ডার দেয়া হয়েছে। পূর্ব পাশের অংশে ডিলেডালাভাবে কাজ চললেও রাস্তাটির পশ্চিমাংশে বন্ধ রয়েছে সংস্কার কাজ। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে যান চলাচল বন্ধ থাকা সড়কটি দিয়ে এখনও কোন যান বাহন চলাচল করতে পারছেনা। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ পায়ে হেঁটেই হাটখাঁন হতে চাপগ্রাম এবং আনন্দবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে দেখা গেছে। স্থানীয় মুরুব্বি আমির শেখ বলেন, ৬ মাস আগে রাস্তাটিতে কাজ শুরু করা হইছে। শুরু থেকে খুঁড়িয়ে রাখার কারনে মানুষ হেঁটেই চলাচল করেছিলো। এখন রাস্তাটির বিভিন্ন্ স্থানে ইটের খোয়া ফেলে রাখছে। রাস্তার উপরে এবং রাস্তার সাইডে শুধু বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। কোন ধরনের গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হচ্ছেনা। বর্ষার সময়ে বৃষ্টি আসলে রাস্তাটি খালে ধসে পড়বে। তিনি আরো বলেন, রাস্তাটিতে নিম্ন মানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। পা দিয়ে পাড়া দিলেই গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে ইটের খোয়া। রাস্তাটি সংস্কারে যে ধরনের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে রাস্তাটি টেকশই হবেনা বলেও জানান তিনি। পথচারি রুবেল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারছেনা। জরুরি প্রয়োজনে প্রতিদিন এই রাস্তাটি দিয়ে পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অর্ধেক রাস্তায় খোয়া বিছানো আর অর্ধেক রাস্তা খুঁড়িয়ে রাখা হয়েছে। বর্ষার আগে রাস্তাটি সংস্কার করা না হলে জনদূর্ভোগ আরো তীব্র আকার ধারন করবে। তিনি আরো বলেন, কবে নাগাদ রাস্তাটির সংস্কার কাজ শেষ হবে । আবার কবে গাড়ীতে চলাচল করতে পারবো সেটার কোন নিশ্চিয়তা পাওয়া যাচ্ছেনা। রাস্তার একটি অংশে সংস্কার কাজে নিয়োজিত একাধিক শ্রমিক জানান, এই রাস্তায় বিছানো বেশিরভাগ নিম্ন মানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। ঠিকাদাররা আমাদের যেটা ব্যবহার করতে বলে আমরা সেটাই ব্যবহার করি। রাস্তায় কোন ধরনের ইট ব্যবহার করার কথা সেটাও কোন কাগজপত্র আমাদের কাছে নেই। আমরা লেবার শ্রমিক হিসেবে রাস্তাটিতে সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। তবে ঠিকাদাররা বলতে পারবে। আপনারা ঠিকাধারদের সাথে যোগাযোগ করেন। তাৎক্ষনিক মো. জিয়াউল হক টুকু নামের এক সাব ঠিকাদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তিনি রাস্তায় মূল ঠিকাদার থেকে কনট্রাকে কাজ নিয়ে কাজ করছেন। বিস্তারিত ঠিকাদার মো. সবুজ বলতে পারবে। রাস্তা সংস্কারে ধীরগতি, অনিয়মের বিষয়ে জানতে চেয়ে ঠিকাদার সবুজের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার ব্যবহৃত ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। এলজিইডির টঙ্গীবাড়ী উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহ মোয়াজ্জেম বলেন, রাস্তাটির পূর্ব অংশে সংস্কার কাজ চলমান আছে। বৃষ্টির কারনে রাস্তার দু”টি অংশে একযোগে কাজ করা সম্ভব হয়নি। এখন কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে রাস্তাটির সংস্কার কাজ শেষ হবে। তিনি আরো বলেন, নির্ধারিত সময়ে মধ্যে রাস্তাটির সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রাস্তা সংস্কারে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, রাস্তা সংস্কারে অনিয়মের কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে সরেজমিনে তদন্ত করে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২৮ জুন, ২০২১/দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here