টেকনাফ প্রতিনিধি: টেকনাফে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শাহিনা আক্তার (২১) নামে একজন গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর থেকে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ বাড়ির সকলেই পলাতক রয়েছেন। নিহত গৃহবধূ টেকনাফ সদর ইউনিয়নের পশ্চিম ডেইলপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কাদেরের মেয়ে। সে এক বছর বয়সী এক শিশু কন্যার জননী ছিলেন। পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে মেয়েকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আত্মহত্যার নাটক সাজাতে ঘরের চালার খুঁটির সঙ্গে রশি বেঁধে গলায় ফাঁস লাগানো হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে টেকনাফ ইউনিয়নের দক্ষিণ লেঙ্গুরবিল গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ ছেলে সৈয়দ হোসেনের বসতঘরের শয়ন কক্ষ থেকে নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) হাফিজুর রহমান।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানায়, ৩ বছর আগে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ লেঙ্গুরবিল গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ উল্লাহ ছেলে সৈয়দ হোসেনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের পশ্চিম ডেইলপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কাদেরের মেয়ে শাহিনা আক্তারের বিয়ে হয়। এরমধ্যে তাদের সংসারে এক বছর বয়সি একটি শিশুকন্যাও রয়েছেন। বিয়ের পর থেকে তাদের(স্বামী-স্ত্রী ) মধ্যে কোনো ধরনের বাক-বিতণ্ডার বা ঝগড়া-বিবাদ হয়নি। শুক্রবার রাতে মা আনোয়ারা বেগম মেয়ে শাহিনাকে ফোন করলে মোবাইলটি বন্ধ পায়। এরপর শনিবার সকালের দিকে ফোন করলে আবারও মোবাইল ফোন বন্ধ পান। পরে দুপুরের দিকে ফোনের এক প্রান্তে থেকে মেয়ের শাশুড়ি গোলবাহার জানায় শাহিনা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে ছটফট করছে। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে ফোনটি কেটে দেন। এ খবরের পরে দুপুরের দিকে মা আনোয়ারা বেগম মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে এলে তখন ঘরে কাউকে পাওয়া যায়নি। নিজের শয়নকক্ষের গলায় রশি পেঁচিয়ে খাটের মধ্যে ঝুলিয়ে রাখা হয় শাহিনাকে। এরমধ্যে মায়ের আত্মচিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন জড়ো হলে মেয়ের গলার রশি কেটে উদ্ধার করা হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করেন। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য টেকনাফ থানায় নেওয়া হয়েছে। ওই সময় স্বামী সৈয়দ হোসেন, শশুর মোহাম্মদ উল্লাহ, শাশুড়ি গোলবাহারসহ পরিবারের সকলেই পলাতক থাকায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এমনকি নিহতের এক বছর বয়সি শিশুকন্যা নাদিয়া সুলতানা নেহাকে পাওয়া যায়নি। নিহতের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার মেয়ের হত্যাকারীদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আর, যাতে কোনো মায়ের বুক এভাবে খালি না হয় সেই রকম বিচারের দাবি জানাচ্ছি। অভিযুক্ত আসামি সৈয়দ হোসেন ও শশুর মোহাম্মদ উল্লাহ সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। অভিযুক্তদের আটক করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিহতের মা বাদী হয়ে মেয়ের স্বামীসহ পরিবারের সবাইকে আসামি করে হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
আলোকিত প্রতিদিন /৩রা জুলাই /২০২১ / এম এইচ সি