ডিএইচএমএস ২০২১-২০২২ ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে হতাশ শিক্ষার্থীরা

0
3281

প্রতিনিধি, বরিশাল:
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত ২৪/০৬/২০১৯ তারিখ এর ভর্তি বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত ৬৩ টি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ এর ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ডিপ্লোমা ইন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন সার্জারি কোর্সে প্রথম বর্ষে ভর্তি চলছে। ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি সেটা খুবই ভালো জিনিস। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে বর্তমান বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের সকল শিক্ষাব্যবস্থা স্তম্বিত হলেও ন্যাশনাল ভার্সিটি ও বিভিন্ন কলেজে অনলাইনে এবং অফলাইনে পরীক্ষা কার্যক্রম চলছে। ২০১৯ সালের পরে থেকে বাংলাদেশের হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ গুলোতে কোন পরীক্ষা কার্যক্রম বা ক্লাস চলেনি। এর কারণে তাদের সেশনজট তৈরি হয়েছে। ফার্স্ট ইয়ারের একজন ছাত্র ২ বছর ঝুলে আছে। ২০২০ সেশনের কোন ক্লাস না হওয়া সত্ত্বেও এই মহামারীর ভিতরে মানুষের আর্থিক ও সামাজিক দুরবস্থার মধ্যেও কলেজ গুলো ক্লাস না করিয়ে তাদের মাসিক ফি পুরোটা নিয়ে নিছে, তাদেরকে ফর্ম ফিলআপ করানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। একজন ছাত্র প্রথম বর্ষেই দুই বছর ধরে পড়ে আছে। অধিকাংশ কলেজেই অনলাইনেও ক্লাস হচ্ছে না , কলেজ কর্তৃিক কোনো কার্যক্রম নেই।  ২০২০ সালে যারা ভর্তি হইছে তাদের কোনো সুরাহা হয় নি , তাহলে ২০২১ সেশনে আবারো কেন ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হল? হাজার হাজার ছাত্রদেরকে আটকে রেখে আবার নতুন করে কেন ছাত্রদের ভর্তি হতে বলা হলো?  এ বিষয়ে হোমিও প্যাথিক কলেজ অধ্যক্ষ মহোদয়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, আমাদের কাছে কিছুই নাই, বোর্ড যা সিদ্ধান্ত দিবে আমরা সেটাই করব। এছাড়া বাংলাদেশ হোমিও প্যাথিক ছাত্র অধিকার সংগঠনের আহবায়ক আরমান হোসাইন বলেন, গত বছর শিক্ষার্থীদের করোনা সংকটকালিন সময়ে ফরম ফিলাপ করিয়েছে তার কোনো সুরাহা না করে, কোনো পরীক্ষার ব্যবস্হা গ্রহন না করে নতুন করে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি সত্যিকারে বোর্ডের দায়িত্বশীল মনোভাব হয়নি। আপনারা প্রয়োজনে শর্ট সিলেবাস দিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষা নিয়ে যারা দুই বছর ধরে ঝুলে আছে তাদেরকে একটা ব্যবস্থা করুন। পূর্বের সমস্যার সমাধান না করে নতুন করে সমস্যা কেন সৃষ্টি করা হচ্ছে? এ নিয়ে আজ হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রীরা হতাশায় দিন কাটাচ্ছে কি হবে তাদের?

আশা রাখি হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের বিচক্ষণ নেতৃবৃন্দরা বিষয়গুলো বিবেচনা করবে এবং এই হাজার হাজার ছাত্র- ছাত্রীদের মুখে হাসি ফোটাবে।
আমরা দাবি জানাচ্ছি পূর্বের ছাত্রদের অনলাইনে এবং অফলাইনে শর্ট সিলেবাস করে পরীক্ষা নিয়ে নতুন ভর্তি চালু করুন।
কারণ করোনাভাইরাস একটা রোগ, এটা পৃথিবীতে আসছে, এটা থাকবে, এর সাথে প্রতিযোগিতা করে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। এর চিকিৎসা রয়েছে হোমিওপ্যাথিতে। করোনাভাইরাস এ কারণে আমাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দিব তা হতে পারে না, এভাবে আমাদের দেশ, দেশের সম্পদ, প্রত্যেকটা মানুষ ধ্বংস হচ্ছে। আমাদের সর্বোচ্চ সচেতন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া উচিত। হোমিওপ্যাথিতে ভালো চিকিৎসা আছে। আল্লাহর রহমতে হোমিওপ্যাথি নিয়ম অনুসারে ধাতুগত চিকিৎসা নিলে আশা করি আমরা নিজেদেরকে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে পারব। এই ভাইরাসের কারণে সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া এটা আমার কাছে কেমন যেন একটা নেগেটিভ চিন্তাভাবনা বলে মনে হয়। এই অবস্থা থেকে আমারা মুক্তি চাই। তাদের ইয়ার লস করে যে সমস্যা তৈরী হয়েছে এই সমস্যার সমাধান না করে নতুন সমস্যা তৈরি করা থেকে বিরত থাকুন। তাই নতুন ছাত্র ভর্তি হওয়ার আগে  ছাত্রদেরকে নিয়মিত লেখাপড়ার সুযোগ করে দেন। ছাত্রদের হতাশা ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিন। এখন যেভাবে চলছে এভাবে কোন চিকিৎসা ব্যবস্থার চলতে পারে না। আরো বলতে হয়, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন কর্তৃক প্রকাশিত করোনাভাইরাস এর চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে হোমিওপ্যাথির মূল থিম(লক্ষণ সাদৃশ্য চিকিৎসা) মিলে যাওয়া সত্ত্বেও আজও, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও ভালো মানের হসপিটাল না থাকার কারণে করোনাভাইরাস চিকিৎসা সুযোগ থেকে হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার দের কে বঞ্চিত করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার সরকারি সুযোগ সৃষ্টি করুন। ডি এইচ এম এস ডাক্তারদের মান নিশ্চিত করুন। হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার দের উচ্চ শিক্ষার পথ উন্মুক্ত করুন। সরকারিভাবে হোমিওপ্যাথিক ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করুন। হোমিওপ্যাথির গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করা এখন সময়ের দাবি। ডি এইচ এম এস ডাক্তারদের চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে, অন্যথায় এই অবহেলিত হোমিওপ্যাথির উন্নয়ন সম্ভব নয়।
উপরোল্লেখিত সুযোগগুলো সৃষ্টি হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে স্বপ্ন প্রত্যেক ঘরে ঘরে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া, সেটা সফল করা সম্ভব, চিকিৎসার নামে প্রচলিত প্রতারণা দূর করা সম্ভব, টেস্ট বাণিজ্য বন্ধ করা সম্ভব। তাই আপনাদের কাছে আকুল আবেদন হোমিওপ্যাথি ডাক্তার দের সুযোগ করে দিন তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করুন রাষ্ট্রীয় সকল সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করুন দেশ ও মানুষের কল্যাণ হবে। বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক বোর্ড ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আমাদের অভিভাবক। আমরা আপনাদের সন্তান, আপনাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। আপনাদের সুদৃষ্টি হাজার হাজার ডাক্তারদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে। লক্ষ লক্ষ যন্ত্রণাক্লিষ্ট মানুষকে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারে।

আলোকিত প্রতিদিন /৬ জুলাই ,২০২১ / দুখু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here