রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় মেডিকেল কর্মচারীদের বরাদ্দ লুটপাট : ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা

0
418
শেখ দিদারুল ইসলাম,চট্টগ্রাম :
বাংলাদেশ রেলওয়ে (পূর্বাঞ্চল) চট্টগ্রামে অবস্থিত সিআরবি রেলওয়ে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত পোশাক না দিয়ে, বরাদ্দের টাকা নিয়ে হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে বেশকিছু দিন যাবৎ ধরেই অস্থির পরিবেশ বিরাজ করছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের স্বাস্থ সেবা বিভাগের কর্মচারীদের মাঝে।সরেজমিনে জানতে পারা যায়, , পূর্বাঞ্চলের সিএমও দপ্তরে কর্মরত স্টেনো টাইপিস্ট সোহেল কর্তৃক সিআরবি রেলওয়ে হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পোশাকের বরাদ্দকৃত অর্থ হতে জনপ্রতি ৩৫০০ টাকা করে বন্টন শুরু করা হয়। অনুসন্ধানে আরো জানতে পারা যায়, টাকা বন্টনের হাসপাতালের ইনডোর কর্মরত তপন বিশ্বাসের মাধ্যমে জুনিয়র নার্সকে ৫৫ জনের টাকা দেওয়া হয়, আউটডোর কর্মচারীদের জন্য মোঃ নাসির উদ্দীন ফার্মাসিস্টের মাধ্যমে ১০ জনের টাকা দেওয়া হয়, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর দিলীপ কুমার দাসের মাধ্যমে কঞ্জারভেন্সী কর্মচারীদের জন্য ৯৫ জনের টাকা ও সিজিডি রেলওয়ে হাসপাতালের জুনিয়র নার্স মোঃ আবু জাফর মাধ্যমে ২৭ জনের টাকা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর দিলীপ কুমার দাসের কাছ থেকে জানতে পারা যায়, তিনি ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার চিন্ময় বিশ্বাসের নির্দেশে স্টেনো টাইপিস্ট সোহেলের কাছ থেকে কর্মচারীদের বন্টন করার উদ্দেশ্যে ৯৫ জনের টাকা বুঝে নেন। তবে কর্মচারীদের পোশাক বরাদ্দ হলে তার স্থলে পোশাক না দিয়ে টাকা দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই বলেও স্বীকার করেন দিলীপ কুমার। জুনিয়র নার্স আবু জাফরের সাথে এই বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যাইনি। কর্মচারী-শ্রমিক প্রতিনিধিসহ অনেকেরই প্রশ্ন, সরকারি বিধিবিধান অনুযায়ী কর্মচারীরা বরাদ্দকৃত পোষাক বুঝিয়ে দেওয়ার পর পাওনা বিল বুঝে নেওয়ার কথা থাকলেও পোষাক বুঝিয়ে না দিয়ে কিভাবে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টাকা তুলে নেয় ? অনুসন্ধানে গেলে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হিসাব কর্মকর্তা জানান ডিএমও,চট্টগ্রাম ও স্টেনো সোহেলের সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোর্শেদ ফ্যাশনের মালিক শুভ্রত চক্রবর্তী কর্মচারীদের পোষাক ভাতা গত জুন মাসেই তুলে নেয়৷ কর্মচারীরা বিষয়টি জানতে পারলে স্টেনো সোহেল কর্মচারীদের পোশাক বাবদ টাকা প্রদান করে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে যে সকল কর্মচারীদের মাঝে টাকা প্রদান করা হয় তাদের কাছ থেকে টাকা ফেরত চান বন্টনকারীরা। এবিষয়ে জানার জন্য দিনের বেলা স্টেনো সোহেল ও ডিএমও চিন্ময় বিশ্বাসকে তাদের নিয়মিত দপ্তরে খুজে পাওয়া যায় নি, বিশ্বময় বিষয় এই করোনা কালীন সময়ে তালা ঝুলে থাকতে দেখা যায় জনশূন্য পাহাড়তলী রেলওয়ে হাসপাতালের গেইটে।
রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে গোপন সুত্রে জানতে পারা যায়, সিআরবি হাসপাতাল দপ্তরের সেই কর্মচারীদের বরাদ্দকৃত পোশাকের বদলে টাকা বণ্টনকারী স্টেনো মোঃ সোহেল, জুনিয়র নার্স মোঃ আবু জাফর ও হাসপাতালের জমাদার তপন পাহাড়তলি রেলওয়ে হাসপাতাল হতে গোপনে এ বিষয় সংশ্লিষ্ট কাগজ পত্র সরিয়ে নেয়ার চেস্টা করছে। সূত্র ধরে বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীকে হাসপাতাল আঙ্গিনায় উপস্থিত দেখার সাথে সাথেই দুই টেবিল ভর্তি কাগজ পত্র নিয়ে অনেকটাই চমকে উঠেন তারা। আহত ও লুঙ্গী পড়া অবস্থায় দেখা মিলে স্টেনো সোহেলের সাথে, সারাদিন হাসাপাতাল বন্ধ রেখে লকডাউনের এত রাতে নিজ কর্মস্থলে না গিয়ে এই অবস্থায় পাহাড়তলী হাসপাতালের অফিসে কি করছেন জানতে চাইলে গনমাধ্যম কর্মিদের উপর চড়াও হয়ে উঠেন এবং বাকি দুই জনকে নিয়ে কৌশলে স্থান ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। এবিষয়ে ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার ডাক্তার চিন্ময় বিশাস কে ফোন করে, দিনে বন্ধ থাকা এই হাসপাতালটিতে এতো রাতে স্টেনো সোহেলের কোন কাজের ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এরিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেন। অতীতেও চিন্ময় বিশাস ও সোহেল এর বিরুদ্ধে একাধিক বার বিভিন্ন গনমাধ্যম তাদের দুর্নীতির সংবাদ প্রচার হলে কোন এক অজানা ক্ষমতা বলে তারা বরাবরি রয়ে যায় ধরাছোয়ার বাইরে।
আলোকিত প্রতিদিন /৬ জুলাই /২০২১ / টিএম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here