ছাতক( সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজার উপজেলার মন্তাজ নগর গ্রামে থেকে গত বুধবার রাতে নৌ পুলিশের ওপর হামলা ও মোবাইল লুটপাটের ঘটনায় এজাহার ভুক্ত দু’জন আসামীকে সুনামগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওসি ইকবাল বাহারের নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সেকেন্ড অফিসার এসআই শামীম আকনজি সহ সঙ্গীয় ফোর্সের সহযোগিতায় গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছে। গত ৪ জুলাই ছাতকে চেলা নদীতে নৌ পুলিশের ওপর হামলা মারপিট মোবাইল লুটপাটের ঘটনায় আ`লীগ নেতা পৌর কাউন্সিলর তাপস চৌধুরীকে প্রধান আসামী করে সহ ২৬ জনের নাম উল্লেখ এজাহারভূক্ত করে ও ৪০-৫০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে ছাতক থানায় মামলা(নং ৩/২) দায়ের করেছেন নৌ পুলিশের এসআই হাবিবুর রহমান। এ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ জুলাই রাত সাড়ে ১১ টায় দোয়ারাবাজার উপজেলার মন্তাজ নগর গ্রামে অভিযান চালিয়ে এজাহার ভূক্ত ২২ নং আসামী আনসার আলী, ও ২৩ নং আসামী মনির মিয়াকে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে তাদেরকে ছাতক থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা-(ডিবি) পুলিশের এস আই শামিম আকনজি। এ মামলায় সিলেট সদর,কোম্পানীগঞ্জ,ছাতক দোয়ারাবাজার এলাকার নৌ পথে চিহিৃত চাদাবাজদের নাম রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন। ঘটনায় ডিবি পুলিশ,নৌ পুলিশ ও থানার পুলিশের ৩টি টিম মাঠে নেমেছে আসামীদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে ওসি শেখ নাজিম উদ্দিন নিশ্চিত করেন। এ মামলার খবর পেয়ে প্রধান অভিযুক্ত আ`লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর তাপস চৌধুরী এখন পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়- শিল্পনগরী ছাতকে নৈরাজ্যের ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে পৌর কাউন্সিলর তাপস চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি বাহিনী। তার ইশারায় দীর্ঘদিন ধরে ছাতকে নৌ পথে চাদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চলে আসছে।
গত ৪ জুলাই রাতে স্থানীয় চেলা নদীতে নৌ-পুলিশের ওপর পৌর কাউন্সিল তাপস চৌধুরীর নির্দেশে এ হামলার ঘটনা ও ঘটিয়েছে বলে নৌ পুলিশ অভিযোগ করেন। নৌ-পুলিশ সূত্রে জানা যায়- ফরেষ্ট বিভাগের সরকারী এলাকা থেকে নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতি রাতেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে স্থানীয় অসাধু মহল। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ৯টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে ৫-৬টি বাল্কহেড লোড করেছিল অর্ধশতাধিক শ্রমিক। এ খবর পেয়ে ৪ জুলাই সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে নৌ-পুলিশের একটি দল। বর্ষার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফরেষ্ট বিভাগের ভূমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া করেন নৌ-পুলিশের ওসি মনজুর আলম। একটি সিজার লিষ্ট তৈরী করে ফেরার পথে চেলা নদীতে ৪টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে প্রায় ৫০-৬০জন সন্ত্রাসী লাঠি-সোটা নিয়ে নৌ-পুলিশের নৌকায় অতকিত হামলা করে। এক পর্যায়ে নৌকায় থাকা নৌ-পুলিশের ওপর তারা চালায় বর্বরোচিত হামলা করেছে। প্রানের ভয়ে পানিতে ঝাঁপ দিয়েও রক্ষা পাননি নৌ-পুলিশের সদস্যরা। তাদেরকে মেরে নদীতে ফেলে দেয় ৫০-৬০জনের এই সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। প্রাণ রক্ষার্থে পুলিশ সদস্যরা নদীতে সাঁতার কেটে নিয়ামতপুর গ্রামের এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা নৌ-পুলিশের নৌকা ভেঙে নদীতে ভাসিয়ে দেয়। নৌ-পুলিশের ওসি মনজুর আলম জানান- পৌর কাউন্সিল তাপস চৌধুরীর নিদেশেই আমাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে হত্যার চেষ্টা করেছে। হামলার এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশের ১১টি মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ’সহ মালামাল লুট করে নেয়। এদিকে, হামলায় গুরুতর আহত নৌ-পুলিশের ইনচার্জ মঞ্জুর আলমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ছাতক হাসপাতাল থেকে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
আলোকিত প্রতিদিন / ৮ জুলাই /২০২১ / এম এইচ সি