উপহারের ঘরে ফাটল: দুটি বরাদ্দ নিয়ে একটি দ্বিতল ঘর নির্মাণের অভিযোগ

0
358

প্রতিনিধি, গলাচিপা (পটুয়াখালী):
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় মুুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করার অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণের বছর না পেরোতেই কোথাও ধসে পড়ছে আবার কোথাও ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া ঘরের দেওয়া নকশা পবির্তন করা এবং নীতিমালা বহির্ভূতভাবে একই সাথে দুটি নাম ব্যবহার করে একই ব্যক্তি দুটি ঘর বরাদ্দ নিয়ে একটি দ্বিতল ঘর নির্মাণ করারও অভিযোগ রয়েছে। ফলে সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাধার সম্মুখীন হচ্ছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
রাঙ্গাবালীর বিভিন্ন এলাকায় ঘর পাওয়া সুবিধাভোগী ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এসব বিষয়ে অনিয়ম হলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান। রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে মোট ১ হাজার ২৬৭টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব ঘর উপজেলা প্রশাসন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন। রাঙ্গাবালীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে যে, রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের চরকানকুনি গ্রামের মানিক হাওলাদারের ছেলে খলিল হাওলাদার একটি ঘর বরাদ্দ পান। ঘরটি নির্মাণ কাজ শেষ হয় গত দুই মাস আগে। কিন্তু ঘর নির্মাণের এক মাস পরেই ঘরের ভিতরের দেওয়াল দুই-তিন ইঞ্চি ফাটল ধরে। এ বিষয়ে খলিল হাওলাদার বলেন, ‘দেওয়ালের ফাটল প্রতিদিনই বড় অইতেছে। যে কোন সময় দেওয়ালটি ভাইঙ্গা পড়তে পারে। আমরা এহন ডরে (ভয়ে) আছি।’ এদিকে ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করে একই ব্যক্তি দুটি ঘর বরাদ্দ নিয়ে একটি দ্বিতল দ্বিতল ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়নের গল্ডাদুলা গ্রামের জসিম আকনের ছেলে সাহেদ আকনের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে সাহেদের কাছে জানার জন্য মোবাইল ফোনে কল করলে সংবাদকর্মী পরিচয় পাওয়ার পরই মোবাইলের কল বিচ্ছিন্ন করে বন্ধ করে রাখে (মোবাইল নং ০১৭১০০১৫৪২৬)। এদিকে রাঙ্গাবালীর আমলিবাড়িয়া গ্রামের মৃত আনোয়ার মাস্টারের ছেলে ইমতিয়াজ ঘর বরাদ্দ পেয়ে নকশা পরিবর্তন করে নীতিমালা বর্হিভূতভাবে ঘর নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ওই উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাঝনেতা গ্রামের লতিফ প্যাদার ছেলে ইদ্রিস প্যাদার ঘরটি নির্মাণের পর দেওয়াল ভেঙ্গে যাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।  রাঙ্গাবালী উপজেলা সদর ইউনিয়নের মাদারবুনিয়া গ্রামের মতিন ভূইয়ার মেয়ে সুখী বেগম একটি ঘর বরাদ্দ পান। গত দুই মাস আগে তার ঘর নির্মাণ করা হয়। এর মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই ঘরটির দেওয়ালের ইট সম্পূর্ণ ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে যায়। এ বিষয়ে সুখী বেগম বলেন, ‘ঘর বানানোর ১৫-১৬ দিনের মধ্যেই ইটগুলা খুইল্লা মাটিতে পইড়া যায়। অফিস দিয়া লোক আইয়া এহন নতুন কইররা ঘর বানাইয়া দিতে আছে। আগে ঘর আনতে ২০ হাজার টাহা আমার ভাই নিয়া এক দালালেরে দিছে। এহন নতুন করে ঘর উডাইতে আর টাহা চায় নাই।’
এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘নকশা পরিবর্তন করে দ্বিতল ঘর নির্মাণ করা ও ঘর ভেঙ্গে যাওয়ার কোন তথ্য আমাদের জানা নাই। এমন কিছু পাওয়া গেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাশফাকুর রহমানের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আলোকিত প্রতিদিন /১২ জুলাই,২০২১ / দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here