প্রতিনিধি,ত্রিশাল(ময়মনসিংহ):
ময়মনসিংহের ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কের বেহালদশা, চলাচলকারীদের দুর্ভোগ যেন চরমে। একের পর এক খানাখন্দে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরেছে এ সড়ক। একস্থানের খানাখন্দ মেরামতে চলাচলের উপযোগী করতে না করতেই আরেক স্থানে সৃষ্টি হচ্ছে খানাখন্দ। জানা যায়, উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ত এই সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের চলাচল।এটি পাশের উপজেলা ফুলবাড়ীয়ার সংযোগ সড়ক। রাস্তার এই অবস্থায় দুই উপজেলার মানুষের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই সড়কেই চলাচল করে শতশত ভারী যানবাহন। সারা বাংলাদেশে মাছ চাষে বিখ্যাত এই উপজেলা। এই উপজেলায় উৎপাদিত মাছ প্রতিদিন চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। মাছের খাদ্য পরিবহন থেকে শুরু করে মাছ বাজারজাত করণে এই এলাকার হাজার হাজার মৎস চাষীদের একমাত্র নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা হলো এই সড়কটি। এই সড়কের এমন বেহাল দশায় বিপাকে পড়েছে মৎসচাষী সহ এলাকার হাজার হাজার পথচারী। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী ৭ কিলোমিটার রাস্তার মাঝে ছোট বড় অসংখ্য খানাখন্দ রয়েছে। এর আগেও কয়েকটি খানাখন্দ মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করা হয়েছিল। এখন ভেঙ্গে এগুলা আরো বেশি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থানে ট্রাক,কোম্পানির বাস, লড়ি, সিএনজি ও অন্যান্য যানবাহন দূর্ঘটনার কবলে পড়ছে ও বিকল হচ্ছে। চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পরেছে রাস্তাটি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহীন হোসাইন সাজ্জাদ বলেন, ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়ক উপজেলার ব্যস্ত তম সড়ক, এটি দুই উপজেলার সংযোগ সড়ক। উপজেলার ইউএনও মহোদয় উনার দায়িত্বের প্রতি অতি আন্তরিক হওয়ার জন্য ইতিপূর্বে এই রাস্তাটির বেশ কয়েকটা খানাখন্দ মেরামত করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ঈদুল আযহা সামনে রেখে যদি এই রাস্তাটি পূর্বের ন্যায় আবারো নতুন করে সৃষ্টি হওয়া খানাখন্দ গুলো মেরামতের ব্যবস্থা করা হয় খুব উপকার হবে এই দুই উপজেলার এলাকার মানুষের জন্য। স্থানীয়রা জানায়, প্রায় এক দশক দূর্ভোগ পোহানোর পর দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কের সাড়ে ছয় কিলোমিটার মেরামত কাজের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিএম এন্টারপ্রাইজকে। সড়কটির কাজ শেষ হওয়ার বছর না ঘুরতেই সড়কে তৈরি হয়েছিল অসংখ্য গর্ত। সড়কে চলাচলকারী মালবাহী যানবাহন নিয়মিতই আটকে যাচ্ছিল এসব খানা-খন্দে। ঘটছে দুর্ঘটনা, হতাহত হচ্ছে সড়কে চলাচলকারী মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় মালবাহী যানবাহন এবং পথচারীকে।অভিযোগ রয়েছে, গত বছর এমন বেহাল দশায় উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান খানাখন্দ সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বিএম এন্টারপ্রাইজকে চিঠি পাঠালে এসব খানাখন্দে ইট, বালু ফেলে কোনো রকম চলাচলের উপযোগী করা হয়েছিল। এভাবে গত বর্ষা
মৌসুম পেরুলেও এবার বর্ষা মৌসুম শুরুতে আবারও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি। মঠবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল কদ্দুস মন্ডল জানান, ত্রিশাল-পোড়াবাড়ী সড়কটি ত্রিশাল,ফুলবাড়ীয়া, ভালুকা সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। এ সড়ক দিয়ে তিন উপজেলার মানুষের যাতায়াত। নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যেই সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে এই সড়কটি গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। মাসখানেক আগে খানাখন্দে চলাচল বন্ধ হলে প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান সড়কটি আবারও মেরামতের আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছিলেন, সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ অংশ পরিদর্শন করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব তা মেরামতের মাধ্যমে আপাতত যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা হবে। পরে সড়কটির স্থায়ী সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান আবার সৃষ্টি হওয়া খানাখন্দের বিষয়ে বলেন, ত্রিশাল পোড়াবাড়ী এ সড়কের ভাঙা অংশ পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, সড়কের ভাঙা অংশ চলাচলের উপযোগী করার জন্য মেরামতের কাজ শুরু করা হয়েছে। যে যে অংশ একেবারে চলাচলের অনুপযোগী তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৫ জুলাই ২০২১/ আর এম