সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর ভাঙ্গনে জনমনে আতঙ্ক

0
455

প্রতিনিধি, সারিয়াকান্দি, (বগুড়া):
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পুরো বর্ষা মৌসুম চললেও এখন পর্যন্ত কোন বন্যার সম্ভাবনা নেই। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে সে পানি কমতে শুরু করেছে। প্রতি বছর পানি কমার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করলেও এবার তেমনটি নেই। ভাঙ্গন কম থাকলেও যমুনা পাড়ের মানুষের মনে আতঙ্ক কমেনি। যমুনা নদী ভাঙ্গনের আতঙ্কে আজও অনেকেই নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীতে পানি অনেক কমে যাওয়ায় রোববার সকাল ৮ টায় পানির প্রবাহ ১৫.৯০ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে এখনো বিপদসীমার প্রায় ৩ ফুট নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি কমার সাথে সাথে যমুনা নদীর ডান তীরের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ সারিয়াকান্দি এলাকার কামালপুর ইউনিয়নের যমুনা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন গ্রামে ভাঙ্গনের খবর পাওয়া গেছে। ওইসব গ্রাম এলকার পুরাতন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ থেকে বসবাসরত ২৫টি পরিবার ঘর-দোর অন্যত্র সরে নিয়ে গেছেন। এসব পরিবার পার্শ্ববর্তী হাওয়াখালী গ্রামের নতুন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছেন।
এছাড়াও কামালপুর ইউনিয়নে টিটুর মোড় হতে কামালপুর ফকিরপাড়া, গোদাখালী, কামালপুর দক্ষিণপাড়া ও ইছামারা গ্রাম এলকায় যমুনার নদীর ভাঙ্গনে ইতিমধ্যেই পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক সিসি ব্লক দিয়ে নির্মিত পাড় ধ্বসে গেছে। এ ধ্বসের পরিমান প্রায় ৬শ মিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, ভাঙ্গন এখন কম থালেও সামনের দিনে যমুনা নদীর ডান তীরের ভাঙ্গন আরো বাড়তে পারে।
কামালপুর ফকিরপাড়ার গ্রামের মোসলেম উদ্দীন বলেন, ভাঙ্গন এখন কম, তবে রাতকরে এখন যমুনা নদী ভাংছে। কামালপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের শেফালী খাতুন বলেন, ভাঙ্গনের ভয়ে রাতে আমাদের ঘুম হয় না। ভাঙ্গনে ঘর-দোর নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আশংখ্যায় ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমরা রাত জেগে থাকি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বগুড়া অঞ্চলের সারিয়াকান্দি এলাকার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুর রহমান তাসকীয়া বলেন, যমুনা নদীর ডান তীর ভাঙ্গন রোধ করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। এছাড়াও স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধ করার জন্য প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন। তবে এখন আমরা জরুরী ভিত্তিতে বালি ভর্তি জিও বস্তা সম্ভাব্য ভাঙ্গন স্থানে ফেলে প্রতিরোধের চেষ্টা করছি। যাতে করে ভাঙ্গন না বাড়ে সে জন্য নদীর তীরবর্তী এলাকায় একটি পুকুর ভরাট সহ সম্ভাব্য সকল রকমের ব্যবস্থা অব্যাহত আছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রাসেল মিয়া বলেন, এ এলাকায় নদীর ভাঙ্গন প্রতিদিনের অন্যতম ঘটনা হলেও এখন আর সেটি নেই। তবে কামালপুর এলাকায় টুকটাক ভাঙ্গন থাকলেও আশাকরি প্রক্রিয়াধীন প্রকল্পটি বাস্থবায়নের কাজ শরু হলে নদী ভাঙ্গন একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়াও নদী ভাঙ্গনে কেউ গৃহহারা হয়ে পরলে তাদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সামগ্রী ও ঘরদোর মেরামতের জন্য নগদ অর্থ সাহায্য দেওয়া হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১৮ জুলাই,২০২১/ দ ম দ 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here