দুই সাংবাদিককে কিশোর গ্যাংয়ের হত্যার হুমকি, নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে তাদের পরিবার

0
470
 
প্রতিনিধি, চরফ্যাশন :
চরফ্যাশন উপজেলার দুই সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়েছে দুলার হাট থানার অন্তর্ভূক্ত আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফরিদাবাদ গ্রামের সন্ত্রাসী ও কিশোর গ্যাং বাহিনী। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে সাংবাদিক পরিবার। বাসা থেকে বের হতে পারছে না দুই সাংবাদিকসহ তাদের পরিবার। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে তারা। শনিবার সন্ধ্যায় দুলার হাট থানার সাংবাদিক নোমান চৌধুরী বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয় ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দৈনিক আমার সংবাদ চরফ্যাশন উপজেলা প্রতিনিধি এম, নোমান চৌধুরী ও দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন চরফ্যাশন উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ সিরাজুল ইসলাম দীর্ঘদিন গণমাধ্যমে কাজ করে আসছে। তাদের বাবার বাগানের জমির অংশটুকু দীর্ঘ ৬০ বছর পর্যন্ত ভোগ করে আসছে। গত ২০ শে জুলাই স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপের মতিন মাঝি, হানিফের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং বাহিনী পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাদের বাবার বাগানের দুটি অংশ দখল করার উদ্দেশ্য জালের বেড়া দেয়। ওই সময় সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম বাধা দিলে অভিযুক্ত হান্নান অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে হান্নান তাকে খুন করার উদ্দেশ্য শাবল নিয়ে তেড়ে আসে। তার জীবন বাঁচানোর জন্য অন্য জায়গায় আশ্রয় নেয়। তাদের বাগানের অংশের নারিকেল গাছ থেকে নারিকেল পারার সময় সাংবাদিক নোমান চৌধুরী বাধা একটি ছবি তুলতে গেলে তাকে অকথ্য ভাষায় গাল-মন্দ করতে থাকে। সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম তার ভাইকে গালমন্দ করার কারণ জিজ্ঞেস করলে ওৎপেতে থাকা কিশোর গ্যাং বাহিনী দা-ছেনি, শাবল নিয়ে দুই সাংবাদিকসহ তাদের পরিবারকে খুন করার উদ্দেশ্য তেড়ে আসে। দুই সাংবাদিক ও তাদের পরিবার প্রাণের ভয়ে বাসায় আশ্রয় নেয়। ওই সময় তারা নাম ধরে দুই সাংবাদিককে বাহিরে বের হতে বলে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। তাদের পরিবারকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তাদের বাবা-মাও অশ্লীল ভাষার গালিগালাজ থেকে রেহাই পায়নি। রাত ৮টার সময় সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম, তার ভাই ও বাবা মসজিদে নামাজ পড়াকালীন সময় তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে। মসজিদ থেকে বের হলে খুন করার হুমকি দেয়। তাদের ভাতিজা সিয়াম দাদা বাড়ি থেকে তার বাড়িতে যাওয়ার সময় মসজিদ সংলগ্ন স্থানে পৌঁছলে তার স্মার্ট ফোনসহ ৭২০ টাকা চোরা ফারুক কেড়ে নেয়। এ সময় মসজিদের মুসল্লীদের সহায়তায় তারা অন্য বাড়িতে আশ্রয় নেয়। স্থানীয় মুসুল্লী ও বর্তমান ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম, প্রাক্তন ইউপি সদস্য রুহুল আমীন রনির হস্তক্ষেপে মোবাইল ফোনটি ফেরত পেলেও ৭২০ টাকা ফেরত দেয়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন, মতিন মাঝি (৫০), মোঃ হানিফ (৪৫), মোঃ এমরান (২২), মোঃ ফারুক (৪৫), মোঃ হিরন (২৫), মোঃ হান্নান (২৩), মোঃ শরীফ (২০), মোঃ মিছির (৪০), মোঃ শামিম (১৯), মোঃ ফরহাদ (২০) ও আল আমিন (২১)। দুলার হাট থানায় ২৪ জুলাই ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সাংবাদিক এম. নোমান চৌধুরী বাদী হয়ে অভিযোগ আকারে ওসি মুরাদ হোসেন এর কাছে অভিযোগ দাখিল করে। যার নং-৮০৫। হিরন, হান্নান, শামিম, ফরহাদ, এমরান ও আল- আমিন এরা কিশোর গ্যাং এর সাথে জড়িত। এরা সংঘবদ্ধ হয়ে কিশোর গ্যাং গড়ে তুলছে। পূর্বপরিকল্পিতভাবে তারা কোনো ঘটনা ঘটালে কিশোর গ্যাং বাদীপক্ষের ওপর হামলা চালায়। মতিন, হানিফ, ফারুক ও মিছির এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। মতিন-হানিফের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। এরা এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। এরা এলাকায় বিচার শালিশ অমান্য করে আসছে। শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় দুলারহাট থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক এস আই লেলিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দুলারহাট থানার ওসি মুরাদ হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি ডায়রিভুক্ত করেছি। আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আলোকিত প্রতিদিন/২৫জুলাই-২১/এইচ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here