শরীয়তপুরের জাজিরায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে রাতভর ভাঙচুর

0
701

প্রতিনিধি,শরীয়তপুঃ
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বি.কে নগর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে  আদিপত্য বিস্তার করতে মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার(৩০ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বি.কে নগর ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সরদারের নেতৃত্বে  তার ভাই আব্দুল সরদার প্রায় একশত লোকজন নিয়ে এ মারধর ও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মজিবুর মাদবরের আত্মীয় কালাম বেপারীর ছেলে রেদওয়ান ইসলাম আলিফ(১৫) বি.কে নগর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ফুটবল খেলতে গেলে বর্তমান চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের ভাই আব্দুল সরদারের ছেলে সিয়ামের(১৫) সাথে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সন্ধ্যায় আলিফকে পেয়ে আব্দুল সরদার নিজে আলিফকে মারধর করে। পরদিন (শুক্রবার) মোস্তাফিজুর রহমান মজিবুর মাদবরের মানসিক ভারসাম্যহীন ভাই আব্দুল আজিজের ছেলে রাকিব(১৪) ঐ মাঠে আবার খেলতে গেলে আব্দুল সরদারের ছেলে সিয়াম তার বন্ধুদের নিয়ে রাকিবকে মারধর করতে থাকে। এসময় রাকিবের সাথে থাকা তার বন্ধুরা মিলে আব্দুল সরদারের ছেলে সিয়ামকে মারধর করে বলে জানা যায়। এ নিয়ে চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সরদার ও তার ভাই আব্দুল সরদার সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মজিবুর মাদবরের কোনো সমর্থক বি কে নগর বাজারে ব্যবসা করতে পারবে না বলে ঘোষণা দিলে বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বেপারী, তারা মিয়া মোল্লা, হানাজালাসহ একাধিক ব্যবসায়ীকে মারধর করে আব্দুর রব সরদার, কুদ্দুস সরদার, ইদ্রিস সরদার, আল এরশাদ মাদবর, আল জসিম মাদবর, আল মন্টু হাওলাদার, আল সুরুজ হাওলাদার, ফয়সাল সরদার, রায়হান সরদার, আল রাজ্জাক মাদবর, আল নাছির মাদবর, ফারুক মাদবর, কামরুজ্জামান মাদবর গংরা। বিষয়টি মজিবুর মাদবর জাজিরা থানা পুলিশকে অবগত করলে থানা পুলিশ এসে দেখতে পায় চেয়ারম্যান সাইদুর সরদারের নেতৃত্বে ভাঙা হচ্ছে শেখ মুজিব স্মৃতি সংসদ নামের একটি ক্লাবঘর। মুজিবুর মাদবর বলেন, থানা পুলিশ আমাকে ক্লাব ভাঙার ভিডিও দেখিয়েছে। তবে এবিষয়ে পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বেপারী বলেন, কোথা থেকে কী হয়েছে আমি কিছুই জানি না। হঠাৎ চেয়ারম্যান ও তার ভাই আব্দুল সরদার লোকজন নিয়ে এসে আমাকে মারধর করছে। আমার দোকান তছনছ করছে।
বর্তমান চায়ের দোকানদার ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার তারা মিয়া মোল্লা বলেন, হঠাৎ করেই এসে আমার দোকানের চায়ের ক্যাথলি, কাপ ফেলে দিয়ে আমাকে মারধর শুরু করছে, আমি কিছুই বুঝতে পারি নাই, কেন কী হলো। রেদওয়ান ইসলাম আলিফ জানান, আমি গত পরশু দিন খেলতে গেলে সিয়ামের সাথে আমার তর্কাতর্কি হয়। পরদিন আমি বাজারে গেলে চেয়ারম্যান সাইদুর সরদার নিজে দাড়িয়ে ছিল আর আব্দুল সরদার আমাকে রড দিয়ে পিটিয়েছে। রাকিব হোসেন জানান, মাঠে একা পেয়ে আব্দুল সরদারের ছেলে সিয়াম আমাকে মারধর করেছে। এবিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মজিবুর মাদবর বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ছোট ছোট ছেলেরা তর্কাতর্কি ও মারামারি করছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান ও তার ভাই আব্দুল সরদার লোকজন নিয়ে আমার সেক্রেটারি সাইদুর বেপারী, তারা মিয়া মোল্লা, হানজালা ও সাধারণ মানুষকে মারধর করছে। এসময় বোমা ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে শেখ মুজিব স্মৃতি সংসদ ভেঙে গুড়িয়ে দিয়ে লুটপাট করেছে সাইদুর চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। ক্লাব থেকে তিনটি এসি, আলমারি, ফার্নিচার নিয়ে গেছে বলেও তিনি জানান। এবিষয়ে চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সরদার বলেন, আমি কাজির হাটে ছিলাম, সেখান থেকে খবর পেয়েছি আমার ভাতিজা সিয়ামকে মেরে ফেলছে। পরে আমি মোটরসাইকেল যোগে বাজারে আসি। এর বেশি কিছু আমি জানি না। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা আমার প্রতিপক্ষ প্রতিহিংসা মূলক ভাবে করেছে। সে চেয়্যারম্যান নির্বাচনে আমার সাথে হেরে এসব ভিত্তিহীন তথ্য ছড়াচ্ছে।বি কে নগরের ঘটনার বিষয়ে অতিরিক্তি পুলিশ সুপার(নড়িয়া সার্কেল) এস এম মিজানুর রহমান বলেন, কেউ থানায় অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/৩১ জুলাই ২০২১/ আর এম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here