প্রতিনিধি, সারিয়াকান্দি:
বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলায় বর্ষার এই ভরা মৌসুমেও আশানুরুপ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। সেচের মাধ্যমে তারা এ সংকট কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন। এতে উৎপাদন খরচ একটু বেশি হলেও অন্য কোনো সমস্যা নেই বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ কৃষক আমন চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। এবার স্বল্প বৃষ্টির কারণে তারা সেচ পাম্পের মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে ফসল ফলানোর চেষ্টা করছেন। বন্যার আশঙ্কা কম থাকায় কৃষকরা সব ধরনের জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করেছেন। অনেকেই পাটের ফসল কাটার পর বর্তমানে আমন ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
উপজেলায় এবার প্রায় সাড়ে ১২ হাজার হেক্টের জমিতে আমন ধানের আবাদ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ১২টি ইউনিয়নের ৬ হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে এবং বর্তমানে তা অব্যহত আছে। আগামী কার্তিক মাস পর্যন্ত যমুনা নদীর চরাঞ্চলে স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধানের চারা রোপণ করা হবে। উপজেলায় গত বছর আমন ধানের চাষ হয়েছিলো ১২ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমি। এবার আরো বাড়তে পারে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, উপজেলার ফুলবাড়ী, নাচরী, ভেলাবাড়ী, কামালপুর ও কুতুবপুর ইউনিয়নের কৃষকরা উন্নত জাতের ধানের চারা রোপণ করছেন। বি.আর-১১, বি.আর-৪৯, বি.আর-৭২ ছাড়াও গুটি স্বর্ণা, রনজিত ধানের চারা বেশি জমিতে রোপণ করা হয়েছে। এসব জমিতে পরিমাণ মত পানি না পেলে ভালো ফলন আশা করা যায় না। ভরা মৌসুম পাড় হলেও তেমন একটা বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। এই বর্ষা মৌসুমে আকাশে কালো মেঘের আনাগোনা থাকলেও এক পশলা বৃষ্টিতেই সীমাবদ্ধ। তবে অনেক কৃষক ভালো ফলনের আশায় জমিতে শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করছেন। উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের কৃষক সিহাব উদ্দিন। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার নিজের ১ বিঘা জমি রয়েছে, সেখানে চাষ করেছি রনজিত জাতের ধান। জমিতে সেচ দেওয়া খুবই দরকার। এছাড়াও আমার স্কিমে অন্যান্য কৃষকের ২২ বিঘার মতো জমি রয়েছে। সেসব জমিতে ভালো ফসলের জন্য সেচ দিতে শ্যালো মেশিন চালু করতে হয়েছে। এতে আমাদের উৎপাদন খরচ অল্প কিছু বাড়বে। তবে তাতে সমস্যা নেই।’
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল হালিম বলেন, ‘বৃষ্টি না হলেও কৃষকরা বসে থাকতে পারেন না। ভালো ফলনের আশায় সেচ দিতে বাধ্য হয়েছেন। এ উপজেলায় ৫৪টি গভীর নলকূপ, প্রায় ৮ হাজার বৈদ্যুতিক চালিত সেচ পাম্প ও ৯ হাজারের মতো ডিজেল চালিত সেচ পাম্প চালু হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
আলোকিত প্রতিদিন/৩ আগস্ট ২০২১/ দ ম দ