মুক্তাগাছায় অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছে ২ শতাধিক পরিবার

0
677

রিপন সারওয়ার, মুক্তাগাছা:
মুক্তাগাছায় অভাব অনটনে দিন কাটাচ্ছে বাদে মাঝিরার ছিপের গ্রামের প্রায় ২’শতাধিক পরিবার। উপজেলার মানকোন ইউনিয়নের একটি গ্রামের নাম বাদে মাঝিরা। গ্রামটি ক্রমেই পরিচিতি পাচ্ছে ছিপের গ্রাম হিসেবে। এর পেছনের কারন, সেখানে অধিকাংশ বাড়িতেই তৈরি করা হয় মাছ ধরার ছিপ। এই ছিপ যেত দেশের বিভিন্ন জেলায়। এতে আনন্দে দিন কাটাত প্রায় ২’শতাধিক পরিবার। কিন্তু বৈশ্বিক মাহমারী (কোভিড-১৯) করোনা ভাইরাসের সংক্রমন ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারজাত করতে না পারায় টানাপোরার মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে তাদের দিন। এ গ্রামে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এ পেশায় সক্রিয়ভাবে কাজ করতো। গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়ত বাড়ির আঙিনায় ছ্যাঁকা দেওয়া হচ্ছে ছিপ।
এক সময় গ্রামটির বেশির ভাগ পরিবার বাস করতো দারিদ্রসীমার নিচে। প্রধান পেশা ছিল কৃষিকাজ ও দিন মজুরী। কাজ না থাকলে অভাব অনটন ও অর্ধাহারে দিন কাটত তাঁদের। নানন রঙের ছিপ তৈরি করে ভাগ্য বদলেছিল অনেক পরিবার। তারা ছিপ তৈরি করে প্রতিদিন আয় করতেন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। ছিপের বাঁশ সংগ্রহ করত সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলা থেকে। ছিপ তৈরির পর তারা ছোট ছিপ বিক্রি করতেন ২৫ টাকা ও বড় ছিপ বিক্রি করতেন ৪০ টাকায়। কিন্তু এ কুটির শিল্পের সাথে জড়িত এলাকার নিম্নবৃত্ত মানুষগুলো বর্তমান বৈশ্বিক মহামারী (কভিড-১৯) করোনা ভাইরাসের জন্য লকডাউন ও গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় তারা কাচামাল আনা নেওয়া করতে না পরায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থের সম্মুখীন হন। তারা তৈরিকৃত ছিপগুলো বাজারজাত করতে পারছে না। এতে বন্ধ হয়ে গেছে তাদের আয় রোজগারের পথ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক সময় ছিপ তৈরিতে ব্যস্ততম সময় পাড় করত বাদে মাঝিরার ছিপ গ্রামের মানুষগুলো। কিন্তু এখন কেউ আর ছিপ তৈরি করছে না। ছিপ তৈরির ঘরগুলো এখন খালি পড়ে থাকে অধিক সময় এ যেন নিষ্প্রাণ নেই কোন ব্যস্ততা। গ্রামের বাসিন্দা ছমেদ আলী (৭০) বলেন, আমার তিন ছেলে ইসমাইল, ইস্রাফিল, আলালদ্দিও ছিপের কাজ করে। গাড়ি চলেনা তাই মহাজনরা আসেনা কাজ বন্ধ। এই গ্রামের সবাই এখন ছিপের কাজ বন্ধ করে পেটের তাগিদে যে যেই কাম পাচ্ছে সেইটাই করতাছে। শুনি কত মানুষ কত সহযোগিতা পায় কই আমগরেতো কেউ কোন সহযোগিতা করলোনা। তাই এলাকাবাসী এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারিভাবে সহযোগিতা ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৯ আগস্ট, ২০২১/ দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here