গজারিয়ায় ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল দশা: সংস্কারের দাবি

0
307

ক্রাইম রিপোর্টার,মুন্সিগঞ্জ

স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও উন্নয়ন হয়নি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার  হোসেন্দী ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির। এটি কোন পরিত্যক্ত ভবন দেখে বোঝার উপায় নেই। এটি একটি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র। চারপাশে ময়লা আবর্জনা আর জরাজীর্ন অবস্থা দেখলে মনে হতে পারে পরিত্যক্ত কোন ভবন এটি। কিন্তু এটি কোন পরিত্যক্ত ভবন নয়, এটি একটি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র। বেহাল দশা এই উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির অবস্থান মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নে। বর্তমানে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির এতটাই বেহাল অবস্থা যে, সামান্য একটু বৃষ্টি আসলেই বারান্দাসহ মেঝেতে সেই বৃষ্টির পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চারপাশে ময়লা-আবর্জনার গন্ধ ভিতরে প্রবেশ করে এতে ব্যাহত হয় স্বাস্থ্যসেবা। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেতরের কথা বলতে গেলে জরাজীর্ণ এবং বেহাল অবস্থায় চারপাশে ওয়ালের রং নষ্ট হয়ে আছে নেই কোনো সরকারি পদক্ষেপ। ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি টিনশেটের হওয়ার কারনে চালের টিনগুলো ঝংকার পরে আছে যেকোন সময়ে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে। ভিতরে বাশের মুলি দিয়ে চালাই দেওয়া হয়েছিলো বৃষ্টির পানি সহ ময়লা আবর্জনা পরে তাও নষ্ট হয়ে আছে। সর্বপুরি ভেতরের অবস্থা একেবারে নাজেহাল। একমাত্র উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। জনাব শহিদুল ইসলাম, জানান প্রতিদিন শতাধিক রোগী দেখে থাকি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঁচ জন স্টাফ থাকলেও সেখানে দায়িত্বরত আছে মাত্র দুইজন। একজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার এবং একজন অফিস সহায়ক এই দুইজন স্টাফ হোসেন্দী ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে। তিনি আরো বলেন একজন ফার্মাসিস্ট তার কাজ হচ্ছে ঔষধ মেইনটেইন করা ঔষধ দেওয়া ঔষধের ডোজ বুজিয়ে দেওয়া। একজন মিডোয়াইফ তার কাজ হচ্ছে এখানে যে মহিলা রোগী গুলো আসে বিশেষ করে মা ও গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা সে করে থাকেন। এখানের স্থাপনা আরো উন্নতি হলে নরমাল ডেলিভারিও সম্ভব। সেগুলো হচ্ছেনা তাদের না থাকার কারনে। এদিকে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পাঁচজন স্টাফের মধ্যে ফার্মাসিস্ট ও মিডোয়াইফ পদের দুইজন কে গজারিয়া উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ডিউটি করাচ্ছে এবং একজন মেডিক্যাল অফিসারের পোস্ট এখন খালি রয়েছে। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের রেজুলেশনের উপর তাদের বেতন হয়ে থাকলেও কাজে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিউটি করছে। এখানে যেই কাজগুলো হচ্ছে প্রত্যেকের আলাদা আলাদা কাজ, স্টাফ না থাকায় সকল কাজ করছে একজন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার। এবিষয়ে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (টি.এস) ছুটিতে থাকায় (আর.এম.ও) মোঃ নুর ই আলমের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একাধিক বার কল দিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন নিয়ে কথা আসতেই, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সহকারী মেডিকেল অফিসার বলেন এখানে জায়গা নিয়ে যে সমস্যা ছিলো, এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গার সঠিক কাগজপত্র ছিলনা, আমি এখানে আসার পরে আমরা ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও উপজেলা এসিল্যান্ড অফিসে যোগাযোগ করি, আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের, টি এস, কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সি এ, এস এ, ৪.৪৪ শতাংশ জায়গা বর্তমানে আসলামুজ্জুহা চৌধুরী (তপন) এর বাবা আকরামুজ্জুহা চৌধুরী ইউনিয়নের মানুষের কথা চিন্তা করে এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জায়গায় দান করে। এই জায়গায় টি এখন দাতব্য চিকিৎসালয়ের নামে রয়েছে। আকরামুজ্জুহা চৌধুরীর বড় ছেলে আসলামুজ্জুহা চৌধুরী (তপন) বলেন হাসপাতাল নির্মাণের প্রয়োজনে একটু জায়গা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। তাও যেন  উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি এখানে হয়। এবিষয়ে গজারিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব আমিরুল ইসলাম বলেন, হোসেন্দী ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে উপজেলা পরিষদ এর মাধ্যমে জাইকার অর্থায়নে জন্য ২৫ লক্ষ টাকার টেন্ডার করা হয়েছে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ২২ আগস্ট ২০২১ / আর এম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here