হিলিতে ডেপুটি কমিশনারের কক্ষে ঢুকতে লাগে না অনুমতি: বাড়ছে রাজস্বের গতি

0
289

হিলি প্রতিনিধি:
হিলি শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনারের কক্ষে ঢুকতে লাগবে না অনুমতি, নেই সম্বোধনের বাড়াবাড়ি। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের এমন অভিনব উদ্যোগ নিয়ে নজির সৃষ্টি করেছেন শুল্ক স্টেশনটির উপ-কমিশনার কামরুল ইসলাম। বন্দরের ব্যবসায়ীদের হয়রানী বন্ধ করতে এবং আমদানি-রপ্তানির গতি বাড়ানোর পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব বাড়াতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান তিনি।
এ দিকে উপ-কমিশনারের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে কথা বলতে পেরে খুশি বন্দরের আমদানি কারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে অফিস চলাকালীন সরজমিনে গিয়ে হিলি শুল্ক স্টেশনে দেখা যায়,স্টেশনটির উপ-কমিশনারের কার্যালয়ের দরজা খোলা রাখা হয়েছে। অফিস কক্ষে রয়েছে এসি (শীততাপ নিয়ন্ত্রিত) তারপরেও ব্যবসায়ীদের সমস্যার কথা শুনতে সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়েছে অফিস কক্ষটির দরজা। সমস্যা সমাধানের জন্য সকাল থেকেই অনুমতি ছাড়াই উপ-কশিনারের কক্ষে যাচ্ছেন সিএন্ডএফ এজেন্ট,আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ীরা।
হিলি কাস্টমসের তথ্যমতে, চলতি বছর ২৫মে হিলি শুল্ক স্টেশনে উপ-কমিশনার পদে যোগদান করেন কামরুল ইসলাম। তিনি যোগদানের পর নিয়েছেন নানা উদ্যোগ ফলে ব্যবসার গতির সাথে বেড়েছে সরকারের রাজস্ব। গেলো বছরের থেকে চলতি বছরের মে’ থেকে আগষ্ট পর্যন্ত এই ৪ মাসে আমদানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪,৫৪,৫৩৮ মেঃ টন থেকে ৬,২৫০০৭ মে: টন.,শতকরা হিসেবে প্রায় ৩৭.৫০ বেশি । গেলো বছরের তুলনায় রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১০ শতাংশ এছাড়াও রপ্তানিমূল্য বেড়েছে গত বছরের তুলনায় ৮২.৮৭ শতাংশ।
হিলি সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোশিয়েশনের সভাপতি আব্দুল আজিজ বলেন,আগেও হিলি স্থলবন্দরে অনেক কর্মকর্তা যোগদান করেছেন এবং চলেও গেছেন কিন্ত আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্য এমন উদ্যোগ কোন কর্মকর্তা নেয়নি,যেটা নিয়েছে উপ-কমিশনার কামরুল ইসলাম। তাঁর অফিসের দরজা সব সময় খোলা থাকে আমরা সরাসরি কোন অনুমতি ছাড়া তাঁর কক্ষে প্রবেশ করতে পারি এবং যেকোন সমস্যার কথা তাঁর কাছে সরাসরি বলতে পারি এবং তিনি দ্রত সমাধান করে দেন।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ হারুন বলেন,উপ-কমিশনার কামরুল ইসলাম যোগদানের পর তার অফিস কক্ষ সব সময় খোলা থাকে। এর আগে অন্য কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে এমন দৃশ্য দেখা যেত না। ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যবসায়ীদের দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো কিন্ত হিলি কাস্টমসের উপ-কমিশনার কামরুল ইসলাম যোগদানের পর থেকে আর বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। আমদানি- রপ্তানিকারক, সি এন্ড এফ এজেন্ট সহ অংশীজনদের সাথে সাক্ষাতে সার্বক্ষণিক কথা শুনতে ডেপুটি কমিশনারের কক্ষ খোলা থাকে। অবশ্যই এটি একটি ভালো উদ্যোগ এবং প্রশংসার দাবিদার। তিনি আরো বলেন,এমন উদ্যোগে ফলে ব্যবসায়ীদের হয়রানী বন্ধ হবে আমাদের ব্যবসার গতিও বাড়বে এবং সরকার অনেক রাজস্ব পাবে।
হিলি কাস্টমসের উপ-কমিশনার কামরুল ইসলাম বলেন, যোগদানের পর থেকে এই বন্দরের ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ব্যবসায়ী, সি এন্ড এফ এজেন্ট, রপ্তানিকারকসহ বিভিন্ন অংশীজনদের জন্য আমার অফিস কক্ষ উম্মুক্ত করে রেখেছি যাতে করে সেবা প্রার্থীরা এসে বাহিরে দাঁড়িয়ে না থাকে। তারা সরাসরি আমার অফিসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুমতি ছাড়াই প্রবেশ করতে পারে। প্রতিদিনই আমদানি- রপ্তানিকারক এবং সি এন্ড এফ এজেন্টসহ অংশীজনরা বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে দেখা করতে আসছেন এবং তারা তাৎক্ষনিক সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন। শুধু আমার অফিস কক্ষ না হিলি শুল্ক স্টেশনের প্রতিটি কর্মকর্তার অফিসে ঢুকতে কোন অনুমতি লাগে না।
তিনি আরো বলেন,আমরা এখানে এসেছি ব্যবসায়ীদের সেবা দিতে ,যাতে করে তারা সহজেই সেবা পায় সেই লক্ষ্যেই আমার এই উদ্যোগ। এতে এই স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানির গতি বাড়বে সেই সাথে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ৩১ আগস্ট ,২০২১/ দ ম দ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here