গজারিয়ায় কালীগাছতলা মতলব সড়কের বেহাল দশা

0
322

প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ :

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর ইউনিয়নের কালীগাছতলা হতে মতলব নদীর তীর পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়কটিতে ব্যাপক খানাখন্দের কারনে যাতায়াতে হাজারো মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রা
জানান, ভবেরচর ইউনিয়নের কালীগাছতল থেকে শুরু হয়ে এলজিইডির এই রাস্তাটি পার্শবর্তী ইমামপুরা ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রাম হয়ে পার্শবর্তী চাঁদপুর জেলার মতলব নদীর তীরে গিয়ে শেষ হয়। প্রায় ১০ বছর আগে পূর্বে রাস্তাটি পিচ ঢালাই করা হয়েছিলো। সংস্কার অভাবে রাস্তাটির প্রায় ৬০ শতাংশ ঢালাই করা পিস উঠে গিয়ে সেখানে ব্যাপক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি রাস্তার বিভিন্ন স্থানে থাকা বড় বড় গর্তগুলোতে পানি জমে থাকার কারনে যানবাহনে চলাচল করতে গিয়ে যাত্রী এবং পরিবহন চালকরা নাকানি চুপানি খাচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ন এই রাস্তাটি দিয়ে ভবেরচর ইউনিয়ন, ইমামপুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম এবং পার্শবর্তী মতলব উপজেলার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ এই রাস্তায় নিয়মিত যাতায়াত করেন। প্রায় ৪ বছর ধরে রাস্তাটিতে চলছে অচলবস্থা। সংস্কার অভাবে রাস্তাটি সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক খানাখন্দের। বেশ কিছু স্থানে বড় বড় গর্ত আর কোথাও কোথাও পিচ সরে গিয়ে ইটের খোয়া বেরিয়ে গেছে। কোন কোন স্থানে রাস্তাটি অনেকটা ধেবে গেছে। রাস্তাটি সংস্কার না করার কারনে দিন দিন রাস্তাটি আরো নাজুক হয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকি নিয়েই গণপরিবহনগুলো এই রাস্তাটি দিয়েই যাত্রী নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন বিভিন্ন গন্তব্যে। জরুরি প্রয়োজনে মানুষ অফিস আদালত, ব্যবসা বানিজ্য এবং কর্মজীবিসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ এইরুটে নিয়মিত চলাচল করতে গিয়ে নানান ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। ব্যবস্ততম এই সড়কটির বিভিন্ন  স্থানে ব্যাপক খানাখন্দ থাকায় রাস্তাটি এখন বেশ ঝুঁকিপূর্ন। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করার দাবি জানিয়েছে পরিবহন চালক, যাত্রী এবং স্থানীয় গ্রামবাসীরা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ভবেরচর ইউনিয়নের কালীগাছতলা হিন্দুপাড়া এলাকা থেকে রাস্তাটি দক্ষিন দিকে পার্শবর্তী ইমামপুরা ইউনিয়নে চলে গেছে। রাস্তাটির লক্ষীপুরা গ্রামের শেষ মাথায়, হোগলাকান্দি মাদ্রাসার সামনে,কালীপুড়া মোড়ে রাস্তাটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। ব্যাপক খানাখন্দ থাকার পাশাপাশি বড় বড় গর্তগুলোতে জমে আছে নোংরা পানি। সেখানে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ জলাবদ্ধতা । তার উপর দিয়েই শত শত যানবাচন চলাচল করছে। এতে করে রাস্তাটি আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যাত্রীবাহী পরিবহনগুলোও যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ছুটে যাচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়কটির উপর দিয়ে। রাস্তায় জমে থাকা পানি গাড়ীর চাকার চাপে ছিটকে গিয়ে পথচারিদেরকে কাপড় চোপড় নোংরা করে দিচ্ছে। গণপরিবহনগুলো ঝাঁকুনি আর নানা দূর্ভোগ মতলব নদীর তীরে গিয়ে ফেলছেন স্ব:স্থির নি:শ্বাস।এই সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অটো মিশুকসহ অন্যান্য পরিবহনগুলো প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সিএনজি চালক মো: আসলাম বলেন, ভবেরচর স্যান্ড থেকে কালীগাছতলা এলাকায় পৌছালেই ভোগান্তি শুরু হয়। পুরো সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত। কোন কোন স্থানে পিচ ডালাই রাস্তা ধেবে গেছে। গাড়ী চালাতে গিয়ে গাড়ীর ক্ষতির পাশাপাশি যাত্রীরাও ঝাঁকুনি খাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, খানাখন্দেরকারনে গন্তেব্যে পৌছাতে সময় লাগছে বেশী। আসা এবং যাওয়ার পথে এখন হাজারো মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে। বছরের পর বছর ভোগান্তি নিয়েই রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা দরকার। পথচারি মিনারা বেগম বলেন, রাস্তায় গাড়ীতে চলাচল করলে অনেক ঝাঁকুনি লাগে। প্রায় ৪ বছর ধরে রাস্তাটি এই অবস্থা। দিন দিন রাস্তাটি অনেক বিপদজনক হয়ে যাচ্ছে। রাস্তাটি চলাচল করতে গিয়ে হাজার হাজার মানুষ দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে, তবুও রাস্তাটি সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছেনা। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বৃষ্টি কারনে সড়কটিতে যাতায়াত দূর্ভোগ বেড়েছে। বিকল্প সড়ক না থাকায় নানান ভোগান্তির শিকার হয়েই মানুষ বাধ্য হচ্ছে এই সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে। মানুষের দৈনন্দিন চলাচলে এই সড়কটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্শন করছি। এলজিইডির গজারিয়া উপজেলা প্রকৌশলী ইশতিয়াক আহম্মেদ বলেন, রাস্তাটির কালীগাছতলা থেকে দুই কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার কাজ করার জন্য টেন্ডার দেয়া হয়েছে। বর্ষা চলে আসাতে কাজ শুরু করা হয়নি। তবে আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে এই দুই কিলোমিটার অংশে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হবে। তিনি আরো বলেন, পুরো রাস্তাটি চলতি অর্থ বছরের বাজেট থেকে করা সম্ভব নয়। আগামী অর্থ বছরের বাজেট থেকে রাস্তাটির বাকী অংশে সংস্কার কাজ করা হবে।

আলোকিত প্রতিদিন/ ১ সেপ্টেম্বর ২০২১/ আর এম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here