স্বর্ণা ভূঁইয়া:
ডেঙ্গুর সংক্রমণ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। সারা দেশেই ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়ছে, তবে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন ঢাকা শহরের বাসিন্দারা। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন আগষ্ট মাসেই, এই আগষ্ট মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩২ জন। ধারণা করা হচ্ছে, আগষ্ট মাসের মতো সেপ্টেম্বরেও এর প্রকোপ বাড়বে।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুরা। বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ একটি গবেষণা শেষে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের রোগীদের মধ্যে তারা ডেঙ্গুর নতুন সেরোটাইপ বা একটি ধরন শনাক্ত করেন। ডেনভি-৩ নামের এই ধরনে ঢাকার বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এই ধরনের কারনে রক্তের কণিকা প্লাটিলেট দ্রুত কমে যায়, যার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তিরা খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পরেন। আগে কেউ ডেঙ্গুর কোন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ার পর,আবার যদি এই ডেনভি-৩ ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়ে যায়, তাহলে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এবারে দেখা যাচ্ছে যে, ডেঙ্গুতে এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। এর মধ্যেই হাসপাতাল গুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে গিয়েছে। করোনা ভাইরাসের সাথে ডেঙ্গুর উপসর্গ মিলে যাওয়ার কারণে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ধরে নিচ্ছেন। ফলে বাড়ছে জটিলতা। বর্তমানে কারো জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা দিলেই চিকিৎসকরা কোভিড ও ডেঙ্গুর দুটোর পরীক্ষা একসাথে করার পরামর্শ দেন। উষ্ণ-আদ্র আবহাওয়া, অপরিকল্পিত নগরায়ন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দূর্বলতা, মানুষের অসচেতনতার কারণে মশার প্রজননের বিস্তার ক্রমেই বেড়ে চলছে। ডেঙ্গু মশাবাহিত রোগ। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে এডিস মশা নিধন করতে হবে। এডিস মশা পরিষ্কার পানিতে জন্মায়, এর উৎস বাসা বাড়িতেই থাকে। তাই ঘরের আশেপাশে পানি জমাটবদ্ধ অবস্থায় রাখা যাবে না। ৩-৫ দিন যেন কোনো বালতিতে পানি জমে না থাকে। এডিস মশা দিনে কামড়ায়, সুতরাং দিনে ঘুমালে মশারি অথবা ঘরে মশা নিরোধক স্প্রে করে নিতে হবে। বাড়ির আশেপাশের ঝোপঝাড়, জলাশয় কিংবা জঙ্গল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ফেলতে হবে। মশা নিধনের জন্য স্প্রে, কয়েল, ম্যাট ব্যবহারের সাথে মশার কামড় থেকে বাঁচতে দিনে কিংবা রাতে মশারি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।একমাত্র সচেতনতা ও প্রতিরোধই পারে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১/ দ ম দ