প্রতিনিধি,সারিয়াকান্দি (বগুড়া) :
ঘরের চালায় লাউ-কুমড়ার গাছ, আঙ্গিনায় ছাগল, হাঁস-মুরগীর অবাধ বিচরণ। ঘর থেকে বেড়িয়ে আসছে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রের সাহায্যে বাজানো জারি গানের শব্দ। আর আঙ্গিনার এক কোণায় ছোটদের কুতকুত, বৌছি, বদমদাইড়, গোল্লাছুট সহ নানান রকমের খেলায় সরগরম হয়ে উঠেছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের শাহানবান্ধা আশ্রায়ন প্রকল্পের আওতায় পাওয়া বাড়ির বাসিন্দাদের বর্তমান অবস্থা। রোববার বিকেলে ওই আশ্রায়ন প্রকল্পের অধীনে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের বাসিন্দাদের অবস্থার খোঁজ-খবর নিতে গেলে এমন অবস্থা চোখে পরে। স্থানীয় সূত্র ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে জানা যায়, চলতি বছরে জানুয়ারী মাসের তৃতীয় সপ্তাহে উদ্ভোধন করা হয়েছিল শাহানবান্ধা চর গ্রামে প্রথম দফায় ৪০টি ও ২য় দফায় ৪৫টি, ফুলবাড়ী ইউনিয়নের ডোমকান্দি চরে ৩৩টি, চালুয়াবাড়ী চর গ্রামে ৪টি, বড়াইকান্দি গ্রামে ৫টি, মাছিরপাড়া গ্রামে ৩টি ও কাজলার শাহজালাল বাজার চর গ্রামে-২৮টি ঘর নির্মান করা হয়েছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ফেজ-২ প্রকল্পের আওতায় উক্ত ঘরগুলি নির্মান করা হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মান বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। সর্বমোট ১৫৮টি ঘর নির্মান করার পর ঘরের ও ২ শতাংশ করে জমির মালিকানার দলিল হস্তান্তর করা হয় তাদের কাছে। তবে প্রথম দিকে বাসিন্দারা ঘরে উঠতে সমস্যা মনে করলেও পরবর্তিতে ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা, টিউওয়েলের পানি ও চলাচলের জন্য রাস্তাঘাটের সুবিধা নিশ্চিত করা হলে, এক এক করে ঘরে উঠে পরেন দরিদ্র-গৃহহীন পরিবারগুলো। প্রতিটি ঘরে আলাদা বাথরুম, টয়লেট এবং রান্না ঘরের সুবিধা বিদ্যমান। শাহানবান্ধা চরের আশ্রায়ন প্রকল্পে নির্মিত ঘরে ওঠা ২২নং ঘরের বাসিন্দা শেফালী বেগম বলেন, যমুনা নদী গর্ভে বাড়ী-ঘর হারানোর পর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেখানে ছাপরা ঘরে ১২ বছর ধরে বিভিন্ন রকম সমস্যা নিয়ে বসবাস করছিলাম। সুন্দর পরিপাটি করে গড়ে তোলা পাকা ঘরে আমরা আশ্রয় পাবো তা কোন দিন ভাবিনি। একথা কেবল তার একার না, আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরে আসা মনেরা বেগম, চাঁন মিয়া, মিনতী রানী, ময়েজ উদ্দিন, অয়েলা, শামিম সহ আরো অনেকের। এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো: নাইম হোসেন বলেন, সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদীর ভাঙ্গনের কারনে অনেক পরিবার গৃহহীন আছে। তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমাদের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রাসেল মিয়া বলেন, আমাদের এ উপজেলায় অনেক লোক গৃহহীন আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মহতী উদ্যোগ, যুগান্তকারী পদক্ষেপ ও সমাজের গৃহহীন পরিবাগুলোর মুখে হাসি ফোটানোর জন্য এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। আমাদের সার্বক্ষণিক তদারকিতে এ প্রকল্পের ঘরগুলি নির্মান করে প্রকৃত গৃহহীনদের কাছে দিতে পরে নিজেকে গর্ববোধ করছি। তবে আশ্রিত পরিবারগুলোর আরো কিছু সমস্যা রয়েছে সেগুলো আমরা পর্যাক্রমে সমাধানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১/ আর এম