বৈদ্যুতিক তার সংলগ্ন ভবনে কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকের মৃত্যু: ৬ লক্ষ টাকায় মিমাংসা

0
294
প্রতিনিধি,শরীয়তপুর :
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিকে নগরে বৈদ্যুতিক তারের ১ ফিটের মধ্যে টিন দিয়ে ভবনের চালা নির্মাণ করতে গিয়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার(৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিকে নগর আনন্দ বাজারে মজিবুর মাদবরের(বাইন্না) তিনতলা ভবনের চালা নির্মাণ করতে গিয়ে মোস্তফা বেপারী নামের এক শ্রমিকের তাৎক্ষনিক মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কাজ করতে গিয়েই মারা গিয়েছে মোস্তফা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় জানিয়েছেন থানা পুলিশসহ ঐ শ্রমিকের পরিবারকে ৬ লক্ষ টাকায় বিষয়টি মিটমাট করে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশটি দাফন করা হয়েছে। ভবনের প্রথম তলার মালিক মজিবুর মাদবর(বাইন্না) ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের বিষয়ে মুঠোফোনে জানান, ভাই এটা আইনের বিষয়, জাজিরা ও শিবচর(মাদারীপুর) থানার ওসি মিইল্লা ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। আমি, সাইদুর (চেয়ারম্যান, বিকে নগর ইউপি), বাবুল ওরা(পরিবার) মিইল্লা বলার পর ওসি পোস্টমর্টেম ছাড়া লাশ দাফন করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।যাইহোক তারা তাদের আইনের ফাঁক ফোঁকর যেটা আছে সেটা ব্যবস্থা করে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করছে। টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে(বকাবকি করে) বলেন, ভাই শোনেন আমরা টাকা দেওইন্না লোক না, আমরা চা খাওয়াই, বিস্কুট খাওয়াই। ভবনটির দ্বিতীয় ও তৃতীয়(নির্মাণাধীন) তলার মালিক মাইনুল মাদবর(বাইন্না) মুঠোফোনে বলেন, ওর রিজিক নাইগা, ওর পৃথিবী ছাইড়া যাইতে হইব, ওরে দোষারোপ করতে চাইনা। ঐ জায়গায়(চালা) লাগাতে নিষেধ করছি। ও পাইপ দিয়ে খোঁচা দিয়ে এক্সিডেন্ট করছে। বৈদ্যুতিক তারের সন্নিকটে কাজ করার বিষয়টি বারবার এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন আমি অনুমতি না দিলেও কাঠ, ইট, টিন ঐ শ্রমিক নিজে কিনে এনে ঐখানে লাগাতে গিয়ে মরে গেছে। আনন্দ বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাদল দেওয়ান বলেন, আমি ঘটনা দেখিনি, শুনেছি ঐ জায়গায় কারেন্টে লোকটি মারা গেছে। মঙ্গলবার(৭সেপ্টেম্বর) বিকালের মধ্যে টাকা পয়শা দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়া হবে। নিহত মোস্তাফার বড় ভাই দুলাল বেপারী জানান, আমার ভাই বাহরাইন থেকে এসে এসব কাজ করত। আমার ভাই মারা গেছে, আল্লাহ তাকে নিয়ে গেছে। মানবিক দিক বিবেচনায় ক্ষতিপূরণ দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, মোস্তফার ছোট ছেলে বাহাদুরপুর বা যে মাদ্রাসায়ই যতদূর পড়–ক তার ব্যবস্থা তারা করে দিবেন। জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, না না, এমন কিছু হয়নি। পরিবার অনাপত্তিনামা দেওয়ার পরেই আমরা লাশ দিয়েছি। এবিষয়ে সহকারি পুলিশ সুপার(নড়িয়া-জাজিরা) এস এম মিজানুর রহমান মুঠোফোনে জানান, পরিবার যদি অভিযোগ করে তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
আলোকিত প্রতিদিন/ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১/ আর এম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here