প্রতিনিধি,শরীয়তপুর
শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিতলীয়া ইউনিয়নের দড়ি হাওলা গ্রামে চরমোনাইর মুরিদ কর্তৃক শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার(৮ সেপ্টেম্বর) অনুমান দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে চরমোনাইর মুরিদ আবুল হোসেন আকন (২৫) দরি হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ বছর বয়সী প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ফুসলিয়ে নৌকায় ঘুরতে নিবে বলে নৌকায় তুলে বাগান পেরিয়ে তার দল(ঘাস) ক্ষেতের কাছাকাছি নিয়ে মুখ চেপে ধরে বস্ত্রহরণ করে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। শিশুটি চিৎকার করলে শিশুটির মা ও দাদা তাকে উদ্ধার করে। এসময় আবুল হোসেন পালিয়ে যায়। নির্যাতিতা ঐ শিশুর খেলার সাথী তানহা(৬) জানায়, আমরা নৌকা ঘাটের কাছে ছিলাম, আবুল ভাই নৌকা নিয়ে এসে মারিয়াকে (ছদ্মনাম) তার নৌকায় নিতে চাইলে আমিও যেতে চাই কিন্তু আমাকে আবুল ভাই নৌকায় নেয় নাই। পরে আমি এসে কাকির কাছে বলে দিছি যে, আবুল ভাই আমাকে নৌকায় নেয় নাই। মারিয়ার নিকট আত্মীয় জানান, আবুল এই কাজ করবে আমরা ভূলেও কল্পনা করি নাই। আবুল চরমোনাই যায়, নামাজ রোজা পড়ে, ওর ঈমানে ধরল না, শিশু বাচ্চাটারে…..। নিকট আত্মীয়দের আরও অভিযোগ স্থানীয় প্রভাবশালী মনির আকন, ফোরহাদ আকন, মুজাম আকন, মনসুর খান, নান্নু আকনসহ অন্যান্যরা মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। তারা হুমকি দিয়ে বলে এই মামলায় কিছুই হবে না, বরং এর পরিণাম কিন্তু খারাপ হবে। স্থানীয়রা জানান, আবুল নামাজ কালাম পড়ার কারণে, পীরের দরবারে যাওয়ার কারণে এলাকার বৌ-ঝিদের ডিস্টার্ব করার কথা আমরা বিশ্বাস করতাম না। এর আগে আবুল হোসেন বাথরুমের বদনায় মরিচ গুলিয়ে রেখে দিত, বাথরুমের লাইট খুলে নিয়ে গিয়ে গোপন দৃশ্য দেখত বলেও জানান কয়েকজন। মারিয়ার মা ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা মামলার বাদী জানান, আমার বাড়ির চারদিকে পানি, ছোট্ট বাচ্চা নিয়ে এমনিতেই সব সময় আতঙ্কে থাকি। আবুল পরিকল্পিতভাবে তানহাকে রেখে আমার মেয়েকে নৌকায় তুলে নিয়ে গিয়ে মুখ চেপে ধরে তার সর্বনাশের চেষ্টা করায় সে চিৎকার করলে আমরা এগিয়ে গেলে আবুল পালিয়ে চলে যায়। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। অভিযুক্ত আবুল হোসেনের ফুপু সোনা বান (৫০) জানান, ‘আবুল বলেছে আমি এই সমস্ত কিছু করিনি, আমি ভয় দেখিয়েছি শুধু যাতে ও পানিতে না নামে। একজনকে রেখে আরেকজনকে নেওয়ার বিষয়ে বলেন, দুইজন মিলে ঝগড়া করবে তাই একজনকে নিয়েছে। তিনি আরও জানান, আবুল এই কাজ করতে পারে না, আবুল চরমোনাইর মুরিদ, সে নিয়মিত মাহফিলে যায়, জলশায় যায়। স্থানীয় প্রভাবশালী মনির আকন জানান, আমি ঘটনা রাতে জেনেছি, জানার পর আবুলের চাচাদের সাথে কথা বলে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করি কিন্তু তার আগেই তারা আইনের আশ্রয় নিয়েছে। মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো মিথ্যা কথা, বানোয়াট। এ বিষয়ে চিতলীয়া ইউনিয়ন পরিষধের চেয়ারম্যান আব্দস ছালাম হাওলাদার বলেন, আমি চাই এই ঘটনার উচিত বিচার হোক। একটা বিচার হলে দশটা যেন শিক্ষা পায়। এবিষয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন মুঠোফোনে জানান, আবুল হোসেন ঐ বাচ্চাটাকে নৌকায় করে নিয়ে গিয়ে কুবাসনার চেষ্টা করলে মেয়েটি চিৎকার করলে লোকজন এসে পরলে আর পারেনি। নয়ত একটা মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেত, পানিতেও তো ফেলে দিতে পারত। আসামী শরীয়তপুরে নেই, হয়তো ঢাকায় আছে, আমরা শীগ্রই ঢাকায় মুভ করব। আসামী গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ১৫ সেপ্টেম্বর,২০২১/ এইচ