৪০ বছর না ঘুমিয়েও সুস্থ আছেন যে নারী

0
243

ফিচার ডেস্ক: মানবজীবনে ঘুমের গুরুত্ব অনেক।একদিন মানুষ ঠিকমতো না ঘুমালে  শরীর অসুস্থ হয়ে ওঠে।চোখ জ্বালাপোড়া, মাথাব্যথাসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আর নিয়মতান্ত্রিক ঘুম হলে সারাদিন ফুরফুরে মেজাজে থাকা যায়। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, দিনের পর দিন না ঘুমিয়েও পৃথিবীতে  বেঁচে আছেন অনেকে।চলুন এমনই বিস্ময়কর একজনের কথা জেনে আসি-

লি ঝানাইং। যিনি কখনও চোখের পাতা বন্ধ করে ঘুমান না। কিংবা তার চোখে কখনও ঘুমও আসে না। এভাবে তিনি ৪০ বছর পার করে দিয়েছেন। কতটা বিস্ময়কর বিষয় ভেবে দেখুন একবার।সম্প্রতি চীনা গণমাধ্যমে এমনই এক  উদ্ভট ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। বিগত ৪ দশকেও এই নারী ঘুমাননি। তবুও তিনি ফিট ও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। এ বিষয়টির তার স্বামী, প্রতিবেশী ও বন্ধুরা নিশ্চিত করেছেন। তারাও লি ঝানাইংয়ের না ঘুমানোর সত্যতা যাচাই করেছেন। এমনকি চিকিৎসকরাও তার অনিদ্রার রহস্য ভেদ করতে পারেননি!

এদিকে লি’র স্বামী লিউ সুকুইনও এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি কখনও তার স্ত্রীকে ঘুমাতে দেখেননি। তিনি জানান, তার স্ত্রীর ঘুমের প্রয়োজনই পড়ে না। বিয়ের পর থেকেই তিনি দেখছেন দিন-রাত জেগে শুধু লি কাজ করে বেড়ান।তার শরীরে ক্লান্তি বা অসুস্থতারও কোনো ছাপ নেই। স্ত্রীকে ঘুমাতে বলেও লাভ হয়নি। তিনি জানান ঘুমাতে পারেন না। এমনকি বিয়ের প্রথম দিকে লিউ অনিদ্রার সমস্যা ভেবে স্ত্রীর চিকিৎসা করান। ঘুমের ওষুধ খেয়েও লি’র ঘুম আসেনি বলে জানান তার স্বামী লিউ।

 

লি ঝানাইংয়ের দেওয়া তথ্য মতে, তিনি সর্বশেষ ৫-৬ বছর বয়সে ঘুমিয়েছিলেন। এরপর কেটে গেছে ৪০টি বছর। তবুও তার চোখে ঘুম আসেনি। লি ঝানাইংয়ের বসবাস হেনান প্রদেশের ঝংমু কাউন্টির একটি গ্রামে। লি তার গ্রামে বেশ পরিচিত। কারণ সবাই তার না ঘুমানোর এই অস্বাভাবিক বিষয়টি জানেন।লি’র প্রতিবেশীদের কয়েকজন জানান, একবার লি’র না ঘুমানোর বিষয়টি পরখ করতে গিয়ে তারাই ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এরপর তারা ঘুম থেকে উঠে দেখেন লি সেখানেই ঘুমহীন চোখে জেগে বসে আছেন।

 

লি ঝানাইং ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত অনেক চিকিৎসকের শরনাপন্ন হয়েছেন। তবে কেউই কোনো সমস্যার খোঁজ দিতে পারেননি। তার মানে লি একেবারেই সুস্থভাবে বেঁচে আছেন। তবে বেইজিংয়ের একটি মেডিকেল সেন্টার সম্প্রতি লি’র না ঘুমানোর বিষয়টির রহস্য উদঘান করেছেন।চিকিৎসকের একটি দল লি’কে টানা ২ দিন অর্থাৎ ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় তারা উন্নত সেন্সর ব্যবহার করেছিলেন। ৪৮ ঘণ্টার ব্রেইনওয়েভ পর্যবেক্ষণের সময় দেখা যায়, লি’র ঘুম পেয়েছিল। তবে তা একেবারেই হালকা।

 

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো সাধারণ মানুষ যেমন চোখ বন্ধ করে ঘুমায় লি’র বিষয়টি পুরোপুরি উল্টো। অর্থাৎ লি ঝানাইং চোখ বুঝে নয় জেগে এমনকি কথা বলা বা কাজের মধ্যেও ঘুমাতে পারেন। চিকিৎসকরা এই ঘটনাটিকে ‘জেগে ঘুমানো’ বলে বর্ণনা করেছেন।অনেকেরই ঘুমের মধ্যে হাঁটার অভ্যাস থাকে। ঠিক তেমনই লি ঝানাইংয়ের বিষয়টিও। দেখলে মনে হবে তিনি সারাদিন জেগে আছেন। আসলে জেগে থাকা অবস্থাতেই তিনি ঘুমান। তবে তার স্নায়ু ও অঙ্গ ঘুমের মধ্যেও সক্রিয় থাকে।

চিকিৎসকরা বলেন, লি’র বিষয়টি সত্যিই বিস্ময়কর। আসলে লি যখন বিশ্রাম নেন তখনই তিনি ঘুমান। যেটি লি নিজেও বুঝতে পারেন না। তার ঘুমের সময়টুকুও যথেষ্ট কম। তবুও তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ্য, যা সত্যিই রহস্যজনক।

দিনে মাত্র ১০ মিনিটের বেশি ঘুমান না তিনি। এমন ঘুম তো না ঘুমানোর মতোই। তাই দাবি অনুসারে, ৪০ বছর না ঘুমিয়ে কাটানোর বিষয়টি অনেকটা সত্যিই বটে! সূত্র: ওডিটি সেন্ট্রাল/ব্যাসটাইল পোস্ট

 

আলোকিত প্রতিদিন // আতারা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here