১ অক্টোবর: চীনের বিপ্লব দিবসের শিক্ষা ও তাৎপর্য

0
831
১ অক্টোবর: চীনের বিপ্লব দিবসের শিক্ষা ও তাৎপর্য
       কমরেড মহি উদ্দিন মহিম
…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
১ অক্টোবর-  চীনের বিপ্লব দিবস। চীন বিপ্লবের মহানায়ক কমরেড মাও সেতুং ১৯৪৯ সালের এ দিন-১ অক্টোবর বেজিংয়ের তিয়েনমিন স্কোয়ারে বিপ্লবের বিজয় ঘোষণা দেন। বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় -দেশে দেশে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে অর্থনীতি,রাজনীতি,সমাজ, সংস্কৃতি নিয়ন্ত্রণ করছে সাম্রাজ্যবাদ ও লুটেরা পুঁজিবাদ।  আমাদের মত দেশগুলোতে লুটেরা ধনিক শ্রেণী নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র শ্রমিক, কৃষক, নারী, যুবক,ছাত্র, মেহনতি মানুষের খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, বস্র -মৌলিক সমস্যার সমাধান দিতে পারছেনা। আজ বিশ্ব-সমাজ-মানুষ শোষণ লুণ্ঠন নিপীড়নের এক জটিল আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী ও লুটেরা পুঁজির তাণ্ডবে  গণমানুষ, শ্রমজীবীরা আজ দিশেহারা। শ্রমিক, কৃষক,মেহনতী মানুষ দিন দিন অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হচ্ছে। বাক স্বাধীনতা, মানুষ হিসাবে বেঁচে থাকার অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার হরণ হচ্ছে। সমাজ সংস্কৃতি -সামন্তীয় সাম্প্রদায়িতার বেড়াজালে  আটকা পড়ছে। সাম্রাজ্যবাদ-লুটেরা পুঁজিবাদ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা গণমানুষের সুষ্ঠু জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনি সময়ে-চীন বিপ্লব ও মাও সেতুংয়ের চিন্তাধারা সারা বিশ্বের শোষিত নিপীড়িত জনগণকে শোষণমুক্তির পথ দেখাচ্ছে। মার্কসবাদ লেনিনবাদ-কে মতাদর্শিক ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করে কমরেড মাও সেতুং চীনের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ-সংস্কৃতি ও চীনের বৈশিষ্ট্য গভীরভাবে অধ্যয়ন অনুশীলন, বাস্তব অবস্থার বিজ্ঞানভিত্তিক বিশ্লেষণ তৎ অনুযায়ী তত্ত্ব বিনির্মাণ করেন,যা মাও সেতুংয়ের এর চিন্তাধারা হিসাবে স্বীকৃত। এর ভিত্তিতে -রণনীতি রণকৌশল নির্ধারণ চীনের কমিউনিস্ট পার্টি, শ্রমিক,কৃষক, মেহনতি মানুষ লড়াই সংগ্রাম, অবশেষে চীন বিপ্লবে সফল ও বিজয় অর্জন হয়। চীনে শোষণমুক্ত সমাজ কায়েম হয় কারণ চীন বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কমিউনিস্ট পার্টি ও শ্রমিক শ্রেণী। আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে  বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও জনগণের প্রকৃত মুক্তি আসেনি। কারণ বাংলাদেশে জনগণের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে মধ্যবিত্ত, ধনিক শ্রেণী, তাই শোষনমুক্ত সমাজ, সমাজতন্ত্র, গণমানুষের গণতন্ত্র কায়েম হয়নি। চীন বিপ্লব ও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে-১ জুলাই ১৯২১ সালে -চীনের কমিউনিস্ট পার্টি গঠন, মাও সেতুং এর নেতৃত্বে ১৯২৭ সালে হুনানে-
শ্রমিক কৃষকের বিপ্লবী বাহিনী গঠন, মাও এর নেতৃত্বে ১৯৩৪ সালের ১৬ অক্টোবর দক্ষিণ কিয়াঙ-সীর য়ুতু গ্রাম থেকে লংমার্চ শুরু ১৮ টি প্রদেশ, ২৪ টি নদী, ১৮টি পাহাড়-পর্বত বহ জলাভূমি, ৬০০০ মাইল-পথ পার হয়ে ১৯৩৫ সালের ২০ অক্টোবর শেন-শী প্রদেশে চিনের মহাপ্রাচীরের নিচে এসে সমাপ্ত হয় ঐতিহাসিক লংমার্চ। ১৯৩৬ সালে জাপ- বিরোধী যুদ্ধ শুরু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জাপানের পতন,জাপানের কবল থেকে চীন মুক্ত হয়। আবার চিয়াঙ-বাহিনীর  সাথে যুদ্ধ, চিয়াঙ-বাহিনীর পতন,সমগ্র চীন মুক্ত ও বিপ্লবে সফলতা অর্জন, ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর তিয়নমিন স্কোয়ারে কমরেড মাও সেতুং-তাঁর ভাষণে বিজয় ঘোষণা দেন। চীন বিপ্লবের ইতিহাস এক দীর্ঘসময়ের হাজার হাজার পথ অতিক্রম অনাহারে অর্ধাহারে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি, শ্রমিক, কৃষক,  চীনা জনগণেরশত্রুর সাথে লড়াই সংগ্রাম বহু হতাহত রক্তদানের  ইতিহাস, আর এই লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়েই চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি মানুষ পুরাতন সমাজ ভেঙ্গে গড়ে তোলে নতুন সমাজ,  জনগণতন্ত্র বা নয়া গণতন্ত্র কায়েম এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের পথে অগ্রসর হয়। কোথায় নেই  মাও সেতুং?
চীন বিপ্লবের ইতিহাসের প্রতিটি পাতায় পাতায় নক্ষত্রের মত  অবস্থান নিয়ে বিপ্লবের প্রতীক হয়ে জনম জনম টিকে আছে এবং টিকে থাকবে কমরেড মাও সেতুং। আমৃত্যু একজন সত্যিকারের কমিউনিস্ট, একজন বিপ্লবী মহানায়ক যিনি গরীব আফিমখোর চীনের জনগণকে নেশার জগত থেকে ফিরায়ে বিজ্ঞানভিত্তিক আলোকিত জীবনের সন্ধান দিয়েছেন।   চীনকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করেছেন। মার্কসবাদ লেনিনবাদের সাথে মাও এর চিন্তাধারা তত্ত্ব যা সফল প্রায়োগিক তত্ত্ব হিসাবে সারা বিশ্বের শ্রমিক, কৃষক, নারী, যুবক, ছাত্র, মেহনতি জনতাকে শোষণমুক্তির পথ দেখাচ্ছে, শোষণমুক্ত সমাজ,  জনগণতন্ত্র বা নয়া গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ কায়েমে উজ্জীবিত করছে। মাও সেতুং এর মৃত্যুর পর দেং জিয়াও পিং এর সময় হতে চীনে সংস্কার ক্রিয়া শুরু হয়, যা সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনীতিকে প্রধান্য দিয়ে চলছে। বর্তমান অবস্থায় চীনের কমিউনিস্ট পার্টি প্রধান ও চীনের প্রেসিডেন্ট কমরেড শি জিন পিং-তাঁর মতামত–চীন সমাজতান্ত্রিক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে।
এই যুগে চীনের কমিউনিস্টরা সমাজে প্রধান কিছু দ্বন্দ্ব আবিষ্কার করেছেন, এই দ্বন্দ্ব হলো ভারসাম্যহীন ও অপর্যাপ্ত উন্নয়ন। তাঁর মতে চীনের আশু লক্ষ্য হচ্ছে-‘মডারেট প্রসপারাস সোসাইটি মোটামুটি সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে উঠা অর্থাৎ চীন দেশ এখনও -মাঝারি মাত্রায় সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারেনি। শি জিন পিং এর মতে ‘২০২০ সালের মধ্যে চীন তা অর্জন করতে চায়। এই সময় চীন সর্ব ক্ষেত্রে মাঝারি শ্রেণীর সমাজ হিসাবে অবিভূত হবে। তারপর ২০২০ সাল থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে মাঝারি মডারেট অবস্থা থেকে বেরিয়ে সমৃদ্ধ বা প্রসপারাস সমাজ হয়ে উঠবে।
এই সময়ের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ঘটানো হবে, তারপর থেকে ২০৫০ সালে নাগাদ চীন হয়ে উঠবে একটি- গ্রেট মডার্ন  সোশ্যালিস্ট কান্ট্রি। ‘২০২০ সাল শেষ হয়ে ২০২১ সালও শেষ হতে চলছে, এখনো বর্তমান চীন সম্পর্কে পূর্ণ মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়।  চীনের জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি।চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য সংখ্যা  ৯ কোটির বেশি। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সি চিন পিং এর নেতৃত্বে চীনের অর্থ-রাজনীতি,সমাজ-সংস্কৃতি নিয়ন্ত্রণ করছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও শি জিন পিং সামাজিক মালিকানার মধ্যে -ব্যক্তি মালিকানার সুযোগ দিয়ে অর্থব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে। চীন টিকে থাকার জন্য বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে। চীনের অর্থনীতি বিশ্বে ২য় অবস্থানে, বিলিয়নার বা ধনী বাড়ার সংখ্যায়ও চীন ২য় অবস্থানে আছে। চীনের  ওয়ান বেল্ড ওয়ান রোড বিশ্ব ব্যাপী যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, অবকাঠামোগত সংযোগ করতে চাচ্ছে,  এর অংশীদার হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী,পুঁজিবাদী- উন্নত, উন্নয়নশীল,  অনুন্নত দেশ।বেশির ভাগ দেশেরই ক্ষমতায় রয়েছে ধনীক শ্রেণী। ওয়ান বেল্ড ওয়ান রোড তত্ত্ব-  চীন সহ অনেক দেশে প্রয়োগকৃত শি জিন পিং এর তত্ত্ব, কাজের মধ্য দিয়েই তার সফলতা বা বিফলতা প্রমাণিত হবে। এখন তাঁরা অনেক উন্নততর অবস্থায়।২০১৯ এর ডিসেম্বর থেকে কভিড- ১৯-করোনাভাইরাস প্রথমে চীনে আঘাত হানে  পরবর্তীতে সারা বিশ্বেই তাণ্ডব চালাচ্ছে।    কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে চীন সরকার ও চীনের জনগণ  করোনা মহামারিকে সফলভাবে সামাল দিয়েছেন চীনে কোভিড-১৯য়ে মৃত ৪৬৩৪ জন, এই মৃত্যু সংখ্যা থেক  আর  বাড়তে দেয়নি। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে।  শুধু চীন নয়,কমিউনিস্ট শাসিত কিউবা, ভিয়েতনাম, উত্তর কোরিয়া – এসব দেশের সরকার জনগণ করোনা কবলিত চরম দুর্যোগময় সময়ে  করোনাভাইরাসকে-সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে।কমিউনিস্ট শাসিত দেশগুলো দেশের-জনগণের সংকটময় অবস্থা,দুর্যোগ মহামারিকে  যে সামাল দেয়ার ক্ষমতা রাখে তা কর্মের মধ্য দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।  আর পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা-করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চরম ব্যর্থতার  পরিচয় দিয়েছে।  জনগণতন্ত্র বা নয়া গণতন্ত্র,সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ যে গণমানুষের মৌলিক সমস্যার সমাধান দিতে পারে,  তা এখন প্রমাণিত সত্য। আমাদের বাংলাদেশ-এখানে সাম্রাজ্যবাদ-সাম্প্রদায়িকতাবাদের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে লুটেরা বুর্জোয়া শ্রেণী ক্ষমতায়।এখানে গণতন্ত্র লুটেরাতন্ত্রে পরিনত হয়েছে। এখানে বিপ্লব অনেক দূর!কারণ বিপ্লব করার মত এখানে মজবুত কমিউনিস্ট সংগঠনের অভাব রয়েছে। আজকের চীনের অবস্থা আমাদের দেশের অবস্থা থেকে অনেক তফাৎ। সি চিন পিং এর তত্ত্ব -চীনের বাস্তবতায় চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও জনগণ সঠিক মনে করছে। তা তাদের ব্যাপার। আমরা মার্কসবাদ লেনিনবাদ, মাও সেতুং এর চিন্তাধারা- মতাদর্শিক ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করে, এর আলোকে আমাদের দেশের অর্থ-রাজনীতি,সমাজ-সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী তত্ত্ব  বিনির্মাণ,রণনীতি, রণকৌশল নির্ধারণ, এই প্রকৃয়ায় কর্মতৎপরতা চালাতে হবে। বাংলাদেশের অবস্থা – যেথায় সাম্রাজ্যবাদ,লুটেরা পুঁজিবাদ, সাম্প্রদায়িকতাবাদীদের অপতৎপরতা ও তাণ্ডবে অর্থনীতি,রাজনীতি,সমাজ-সংস্কৃতি  ধ্বংশের পথে,ঘুষ দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়নে অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে দেশ-সমাজ, ব্যাংক বীমা শিক্ষা স্বাস্থ্য সেবা ভূমি  নিবন্ধন,আকাশে বাতাসে নদী সাগরে সর্বত্র  অসংখ্য অগণিত কালো টাকা আজ জন্ম নিচ্ছে, লুটের  টাকা আজ মেতে উঠেছে জুয়া আড্ডায়, মাদক নেশায়, ভোগ-বিলাসিতায়, পথে প্রান্তরে, শহরে বন্দরে,দেশেবিদেশে আজ তাদের মিলন মেলা বসেছে। বোয়াল, রাঘববোয়ালদের কারসাজিতে আজ উল্টো রথে হাঁটছে দেশ। এমনি অবস্থায় শ্রমিক,কৃষক,মেহনতী মানুষ  আজ দিশেহারা,শ্রমজীবী,গণমানুষ আজ মুক্তি চাচ্ছে। কিন্তু আবাহন কালের ইতিহাস বলে বর্তমান প্রচলিত পথে লুটেরা ধনীক শ্রেণীর নেতৃত্বে গণমানুষের গণতন্ত্র সম্ভব নয়,  শোষণমুক্তি সম্ভব নয়। মুক্তি পেতে হলে বাংলাদেশের বাস্তবতায় মার্কসবাদ,লেনিনবাদ,মাও সেতুংয়ের চিন্তাধারাকে মতাদর্শিক ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করে বাংলাদেশের অর্থ- রাজনীতি,সমাজ- সংস্কৃতি,বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থা ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী অধ্যায়ন অনুশীলনের মাধ্যমে নীতি কৌশল নির্ধারণ করেতে হবে। আমাদের  প্রায়োগিক ভাবে তৎপর হতে হবে। এবং শ্রমিক,কৃষক,মেহনতী মানুষকে এগিয়ে আনতে হবে, শ্রমিক,কৃষক, শ্রমজীবীরাও তাদের নিজেদের প্রয়োজনে  এগিয়ে আসতে হবে।  শ্রমিক শ্রেণীর পার্টি -কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব গণআন্দোলন  গণজাগরণ সৃষ্টি করে গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে  পুরাতন সমাজ ভেঙ্গে নতুন সমাজ গড়তে হবে। বাংলাদেশে পুরাতন সমাজ ভেঙ্গে নতুন সমাজ কায়েম করতে হলে যে বলিষ্ঠ কমিউনিস্ট পার্টি দরকার – তা নেই,আছে কিছু দুর্বল কমিউনিস্ট দল,বিপ্লব করতে হলে দরকার বিপ্লবী তত্ত্ব-যা ব্যাপক জনগণকে উদ্ভুদ্ধ করবে,কিন্তু আমাদের তত্ত্বতো ব্যাপক জনগণকে উদ্ভুদ্ধ করছেনা। সর্বহারা শ্রেণী-চেতনাকে আত্মিকভাবে ধারণ করে বিপ্লবী বুদ্ধিজীবী ও শ্রমিকশ্রেণীর অগ্রসরমান অংশকে নিয়ে কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তুলতে  হবে। এথায় আমরা একেবারেই দূর্বল।শক্তিশালী- শ্রমিক সংগঠন, কৃষক সংগঠন,নারী সংগঠন, যুব সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, পেশাজীবি সংগঠন, এথায়ও আমরা এতই দূর্বল যে,  কোথায়ও আমাদের খুজে পাওয়া যাবেনা। বিপ্লব  – পুরাতন সমাজ ভেঙ্গে  নতুন সমাজ গঠন, শ্রমিক,কৃষক, মেহনতী মানুষ তথা জনগণের  জন্য। শ্রমিক,কৃষক,নারী,যুবক,ছাত্র,মেহনতী মানুষ আমাদের কর্মসূচী গ্রহণ না করলে,  শোষণমুক্তির সংগ্রামে সামিল না হলে বিপ্লব হবে কিভাবে? শ্রমিক,কৃষক,মেহনতী মানুষ লুটেরা পুঁজির তাণ্ডব থেকে মুক্তি চায়,  কিন্তু কে তাদের পথ দেখাবে? কে তাদের নিয়ে এগিয়ে যাবে ? আমরা যারা কমিউনিস্ট পার্টির নামে আছি,জনগণকে নিয়ে জনগণের মাঝে ভিত্তি সম্পন্ন  অবস্থান নিয়ে আমরাতো এগুতে পারছিনা,মনেহয় জনগণ আমাদের বয়কট করেছে।  বয়কট করবেনা কেন?আমরা শ্রমিক শ্রেণীর পার্টি করেছি,শ্রমিক,কৃষক,শ্রমজীবী ছাড়াই!কমিউনিস্ট পার্টির নামে শতাধিক দল, এমনই অবস্থা কোনমতেই কাম্য নয়।এই সময়ে-   বিপ্লবের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হলে-    প্রয়োজন- কমিউনিস্ট, বাম, প্রগতিশীল গণতন্ত্রিদের নিয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচী ভিত্তিক একটি ঐক্যবদ্ধ  ফ্রন্ট, ঐক্যবদ্ধ – একটি শ্রমিক ফ্রন্ট, একটি কৃষক ফ্রন্ট, একটি নারী ফ্রন্ট, একটি যুব ফ্রন্ট, একটি ছাত্র ফ্রন্ট, পেশাজীবি ফ্রন্ট, বিপ্লবী বুদ্ধিজীবী ফ্রন্ট গঠন, মতাদর্শিক ঐক্য প্রধান্য দিয় একটি  শক্তিশালী কমিউনিস্ট পার্টি গঠন, এর মধ্য দিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ব্যাপক জনগণের মধ্যে দৃঢ়ভিত্তি অর্জন,ব্যাপক জনগণ আমাদের কর্মসূচী গ্রহণ, সাম্যবাদী মতাদর্শকে  আত্মিকভাবে গ্রহণ, বিপ্লবী বুদ্ধিজীবী ও শ্রমিকশ্রেণীর অগ্রসরমান অংশকে  নিয়ে শক্তিশালী কমিউনিস্ট পার্টি গঠন, বাংলাদেশের কমিউনিস্টরা বিচ্ছিন্ন না থেকে একটি ঐক্যবদ্ধ-কমিউনিস্ট পার্টি  গড়ে তোলা এসব শর্ত পূর্ণ করতে না পারলে কখনো কমিউনিস্টরা আগাতে পারবে না। কখনো গণআন্দোলন,গণভিত্তি, গণজাগরণ সৃষ্টি করা যাবেনা। মতাদর্শিক সংগ্রাম ও মতাদর্শিক ঐক্যকে প্রধান্য দিয়ে অবশ্যই আমাদেরএকটি ঐক্যবদ্ধ কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তুলতে হবে, এছাড়া বিকল্প নেই। গণচীনের বিপ্লব দিবস- এই ঐতিহাসিক দিনে আমাদের বোধদয় হোক।আমরা কমিউনিস্টরা -সকল প্রকার সুবিধাবাদ, লেজুড়বৃত্তি  বর্জন করে যেন সম্মুখপানে এগিয়ে যেতে পারি।  আমাদের এই বিপ্লবী ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় কমরেড মাও সেতুংয়ের চিন্তাধারা ও তাঁর কর্ম আমাদের অবশ্যই  প্রেরণা যোগাবে। চীন বিপ্লবের নেতৃত্ব -কমরেডগণ ও বিপ্লবী সৈনিকদের,  বিপ্লবের মহানায়ক -কমরেড মাও সে তুং কে বিনম্র শ্রদ্ধা ও লাল সালাম।
[সোর্স: কমরেড আহমদ হোছেন ভূঞা’র ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]
আলোকিত প্রতিদিন/ ১ অক্টোবর, ২০২১/ দুখু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here