শ্রীনগরের বাঘড়া ও ভাগ্যকুলে পদ্মায় ইলিশ ধরতে প্রস্তুত ৩ শতাধিক নৌকা

0
291
 প্রতিনিধি, শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ)
মা ইলিশ রক্ষা পেলে, বার মাস ইলিশ মিলে” শ্লোগানকে সামনে রেখে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হলেও অসাধু জেলে সিন্ডিকেট তৎপর হয়ে উঠেছে পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকারের জন্য। এরই মধ্যে নদীতে নামতে দিন-রাত সমান তালে নৌকা, ট্রলার, সিবোট, জাল ও জনবল গুছানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মৌসুমি জেলেরা। রোববার মধ্য রাত থেকেই নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় শুরু হবে অভিযান। এদিকে নদীতে নামতে এসব এলাকায় প্রায় ৩ শতাধিক নৌকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানাগেছে। একদিকে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রস্তুতি। অপরদিকে অবৈধভাবে ইলিশ শিকারের জন্য নদীতে নামতে অসাধু জেলেদের সার্বিক প্রস্তুতি ও চেষ্টা। এ যেন চোর-পুলিশ খেলার মত অবস্থা হয়ে দাড়িয়েছে। শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ও ভাগ্যকুল এলাকার পদ্মা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানের জেলের সার্বিক প্রস্তুতির চিত্র দেখে এমনটাই ধারনা করা হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বাঘড়া ও ভাগ্যকুলে পদ্মা নদীর তীর ও চর ঘেঁষা লোকালয়ের বিভিন্ন স্থানে কাঠের শত শত (জেলে) নৌকা মেরামত করা হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন নৌকাও তৈরী করা হচ্ছে। মেরামত করাসহ এসব নৌকা বা ট্রলারে লাগানো হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন শ্যালো ইঞ্জিন। এ সময় বাঘড়া পদ্মা নদীর তীরবর্তী ভাগ্যকুল ও বাঘড়ায় ছবি তুলতেই অসাধু ব্যক্তিরা সটকে পড়ে। তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও এ বিষয়ে তারা কোন প্রকার মুখ খোলতে রাজি হননি। এ সিন্ডিকেটের সাথে তালিকাভুক্ত জেলে সম্পৃক্ত থাকার তথ্য মিলছে। এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ৩ শতাধিক নৌকা নদীতে ইলিশ শিকারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও এই সময়টায় সুযোগ বুঝে এসব নৌকা পদ্মায় নামবে ইলিশ ধরতে। প্রতিটি নৌকায় ইলিশ ধরার কাজে ৫ থেকে ১০ জন করে লোক থাকবে। এসব জনবল সংগ্রহের জন্য জেলেরা এলাকায় গোপনে দাদন দিচ্ছেন। সূত্রমতে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন খালে বিলে গত কয়েকদিনে বেশকিছু নিষিদ্ধ ভেসাল উচ্ছেদ ও জরিমানা করার পাশাপাশি ৪ অক্টোবর থেকে আগামী ২২ দিন প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধে ও অভিযানের লক্ষ্যে শ্রীনগর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় এরই মধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়।  জানা গেছে, বাঘড়ায় তালিকাভুক্ত জেলের সংখ্যা ৯৫ জন ও ভাগ্যকুলে এর সংখ্যা ৩৩৯ জন। এসব জেলেকে সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা করা হচ্ছে। তার পরেও বছরের এই সময়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পদ্মা নদীতে ইলিশ শিকারের জন্য এলাকা ভিক্তিক মৌসুমি জেলের আবির্ভাব ঘটে এলাকা জুড়ে। বাঘড়া ও ভাগ্যকুল এলাকায় জেলেরা পদ্মা নদীতে ইলিশ ধরার প্রস্তুতির বিষয়ে শ্রীনগর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সমীর কুমার বসাকের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গেছে বছর জানতে পেরে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ বছর বিষয়টি এখনও আমার জানা নেই। ৪ অক্টোবর হতে ২৫ অক্টোবর এই ২২ দিন ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহণ, মজুদ, বাজারজাত ও ক্রয়-বিক্রয় সম্পূর্ণ নিষেধ ও দন্ডনীয় অপরাধ। এরই মধ্যে বরফ কল মালিকদের বরফ সরবরাহ বন্ধের জন্য বলা হয়েছে। ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে অবশ্যই যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে নদীতে সার্বক্ষনিক অভিযান চলবে। তার পরেও আইন অমান্য করে নদীতে ইলিশ ধরার চেষ্টা করা হলে তাদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
আলোকিত প্রতিদিন/ ০৩অক্টোবর,২০২১/ এইচ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here